দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),১৩ মে : স্কুলের ঘর থেকে ওই স্কুলেরই এক নৈশপ্রহরীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পড়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ায় । মৃত নৈশপ্রহরী সুরজিৎ চন্দ্র (৩৮) কাটোয়া শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার ফরিদপুর কলোনীর বাসিন্দা । শনিবার সকালে কাটোয়ার দুর্গাদাসী চৌধুরাণী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি ঘর থেকে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ । উদ্ধার হয়েছে একটি সুইসাইড নোট । ওই সুইসাইড নোট অনুযায়ী পুলিশের প্রাথমিকভাবে অনুমান স্ত্রীর উপর অভিমান করেই আত্মঘাতী হয়েছেন ওই ব্যক্তি ।
ফরিদপুর কলোনীর বাসিন্দা নিমাই চন্দ্র ও মাধবী দেবীর একমাত্র ছেলে সুরজিৎ । তাঁদের ৩ মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে । ছেলে সুরজিৎ দীর্ঘদিন ধরে দুর্গাদাসী চৌধুরাণী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরীর কাজ করে আসছিলেন । মাস নয়েক আগে কেতুগ্রামের নলিয়াপুর গ্রামের মেয়ে দীপালি রায়(চন্দ্র)-এর সঙ্গে দেখাশোনা করে তার বিয়ে হয় । দীপালিদেবী বর্তমানে ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা । শুক্রবার কাটোয়া শহরে ডাক্তার দেখানোর পর স্বামীর অজান্তেই তিনি বাপেরবাড়ি চলে যান বলে পরিবার সূত্রে খবর ।
জানা গেছে,শুক্রবার অভিষেক ব্যানার্জির দলীয় কর্মসূচির জন্য অতিরিক্ত পুলিশবাহিনী আনা হয়েছিল কাটোয়ায় । রাতে তাদের দুর্গাদাসী চৌধুরাণী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল । ওই সমস্ত পুলিশকর্মীরা এদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর দেখতে পান স্কুলের গেটে তালা ঝোলানো । সুরজিৎবাবুর ঘরও ভিতর থেকে বন্ধ । অনেক ডাকাডাকি করেও তার সাড়া না পেয়ে কাটোয়া থানায় খবর দেন পুলিশকর্মীরা । তারপর কাটোয়া থানার পুলিশ এসে ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকলে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে কাপড়ের ফাঁস দেওয়া সুরজিৎবাবুকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় । ওই ঘরেই ছিল একটা সুইসাইড নোট । তাতে লেখা ছিল,’তুমি তো এটাই চেয়েছিলে। আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি ।’
সুইসাইড নোটের বয়ান অনুযায়ী পুলিশের অনুমান স্ত্রীর প্রতি অভিমান করেই আত্মঘাতী হয়েছেন সুরজিৎ চন্দ্র । একই কথা বলেছেন মৃতের মা মাধবী দেবীও । তার অভিযোগ,আগেও একবার বিয়ে হয়েছিল তাঁর বউমা দীপালির । তবে ছেলের সঙ্গে বিয়ের আগে তা গোপন রাখা হয়েছিল । ছেলে বউমাকে খুব ভালোবাসলেও সে বউমার ভালোবাসা পায়নি কখনো । সেই কারনেই তার ছেলে অভিমানে আত্মঘাতী হয়েছে বলে দাবি করেন মাধবীদেবী । যদিও এদিন স্বামীর মৃতদেহের ময়নাতদন্তের সময় হাসপাতালে বা শ্বশুরবাড়িতে দেখা যায়নি দীপালি দেবীকে । সেই কারনে তার মতামতও পাওয়া যায়নি । এদিনই পুলিশ মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় ।।