এইদিন ওয়েবডেস্ক,কেতুগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),১৭ ফেব্রুয়ারী : পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রামের শতাব্দী প্রাচীন ‘দধিয়া গোপালদাস বৈরাগ্য মেলা’র উপর বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করল পালিটা গ্রাম পঞ্চায়েত । বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী এই মেলা ৷ কিন্তু তার আগেই পঞ্চায়েতের তরফ থেকে বেশ কিছু নির্দেশাবলী জারি করা হয়েছে ৷ করোনা বিধির কারনেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে পঞ্চায়েতের তরফ থেকে জানানো হয়েছে ।
কেতুগ্রাম ব্লকের পালিটা পঞ্চায়েতের অন্তর্গত দধিয়া গ্রামে ১১৭৬ বঙ্গাব্দে মন্বন্তরের সময় ‘দধিয়া গোপালদাস বৈরাগ্য মেলা’র পত্তন করেছিলেন বৈষ্ণব সাধক গোপালদাস বাবাজি । নামে মেলা হলেও এটি আদপে ছিল অন্ন মহোৎসব । কেতুগ্রাম ও বীরভূম এলাকার দুর্ভিক্ষ পীড়িত মানুষদের মুখে অন্ন তুলে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই নিজের আশ্রমে অন্ন মহোৎসব শুরু করেছিলেন ওই মহান বৈষ্ণব সাধক । মাসাধিককাল ধরে এই মহোৎসব চলেছিল । তারপর থেকে আজও এই মহোৎসব চলে আসছে ।
দধিয়া গ্রামে রয়েছে আউলিয়া সম্প্রদায়ের বৈষ্ণব সাধক গোপালদাস বাবাজির আশ্রম । বর্ধমানের মহারাজের দান করা ৬৯ বিঘা জমির উপর রয়েছে এই আশ্রমটি । রয়েছে রঘুনাথ জিউর মন্দির । প্রতি বছর মাকুড়ি সপ্তমীতে তিথিতে গোপালদাস বাবাজির প্রতিষ্ঠিত রঘুনাথ জিউর ধুমধাম করে পূজো হয় । আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে লক্ষাধিক মানুষ ওই আশ্রমে এসে ভিড় জমান । গোপালদাস বাবাজিকে শ্রদ্ধা জানাতে ও মন্বন্তরের স্মৃতিকে স্মরণ করতে আশ্রম প্রাঙ্গনে রান্না করে খাওয়া দাওয়া করে তাঁরা বাড়ি ফিরে যান ।
কিন্তু এবারে করোনার জেরে জনসমাগমের উপর লাগাম টানতে বিধিনিষেধ জারি করেছে স্থানীয় পঞ্চায়েত । পঞ্চায়েতের নির্দেশ, মেলায় নতুন করে কোনও দোকান বসতে দেওয়া হবে না । আয়োজনে করা যাবে না কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের । শুধু অন্নভোগের জন্য সব্জির দোকান বসতে দেওয়া হবে। কিন্তু ১০ মিটার দূরত্ব মেনে ভোগের আয়োজন করতে হবে বলে পঞ্চায়েতের তরফ থেকে নির্দেশ জারি করা হয়েছে ।
কেতুগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য জাহাঙ্গীর শেখ বলেন, ‘পরম্পরা অনুযায়ী এবারেও পুজো হবে । তবে করোনাবিধি মেনেই যাবতীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে ।’।