এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,১২ জানুয়ারী : সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে আকছার মারধর,বাড়ি ভাঙচুর, এমনকি গ্রেফতার পর্যন্ত করা হয় বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের । কিন্তু অন্যদিকে কোনো মন্দির বা মূর্তি ভাঙচুর সেভাবে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায় না সেদেশের প্রশাসনকে । এবার একটি ডেন্টাল কলেজের বিরুদ্ধে হিন্দু পড়ুয়াদের সঙ্গে প্রতারণা করে গরুর মাংসের বিরিয়ানি খাওয়ানোর অভিযোগ উঠল । ঘটনাটি ঘটেছে খোদ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় । ঢাকার “পাওনিয়ার ডেন্টাল কলেজ” নামে ওই কলেজের হিন্দু শিক্ষার্থীদের অভিযোগ কলেজের একটি অনুষ্ঠানের আগে কর্তৃপক্ষ মধ্যাহ্নভোজনে ছাগলের মাংসের বিরিয়ানির কথা বললেও তাদের আসলে গরুর মাংসের বিরিয়ানি দেওয়া হয়েছিল । হিন্দু শিক্ষার্থীরা কলেজ কর্তৃপক্ষের এই প্রকার মানসিকতায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে । প্রতারিত পড়ুয়াদের অভিযোগ পরিকল্পিতভাবে তাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে কলেজের মুসলিম প্রশাসক ।
জানা গেছে,মিরপুর ১৪ ঢাকা ১২০৬ এই ঠিকানায় রয়েছে পাওনিয়ার ডেন্টাল কলেজটি । ঢাকা ইউনিভার্সিটি দ্বারা অনুমোদিত কলেজটির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৯৯৫ সালে । বাংলাদেশ ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু তরুন-তরুনীও সেখানে পড়াশোনা করে । প্রশান্ত ঢালি নামে এক ফেসবুক ইউজার্স এই সংক্রান্ত একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন তাঁর পেজে । ভিডিওতে এক পড়ুয়াকে বলতে শোনা গেছে,’গত বছর ৫ নভেম্বর ২০২২ সালে আমাদের কলেজে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছিল । ওইদিন দুপুরে খাবারের আয়োজন করেছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ । আমাদের বলা হয়েছিল খাসির মাংসের বিরিয়ানির কথা । কিন্তু তার পরিবর্তে গরুর মাংসের বিতরণ করা হয় ।’ ওই পড়ুয়া আরও বলেন, ‘খেতে গিয়ে সন্দেহ হওয়ায় আমরা বাবুর্চিকে গিয়ে ধরি । তখন সে গরুর মাংসের কথা স্বীকার করে ।’ পড়ুয়ার আরও অভিযোগ,শুধু বাংলাদেশ নয়,ভারতের বহু ছাত্রছাত্রী ওই কলেজে পড়াশোনা করেন । আর হিন্দু শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার জন্য পরিকল্পিতভাবে এই কাজ করেছে কলেজের মুসলিম চেয়ারম্যান ।
এই ঘটনার পর কলেজের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ প্রদর্শন করে প্রতারিত পড়ুয়ারা । হিন্দুদের পাশাপাশি মুসলিম শিক্ষার্থীদেরও তাতে সামিল হতে দেখা যায় । তবে ঘটনার দায় স্বীকার করে এযাবৎ ওই কলেজের চেয়ারম্যানের পদত্যাগের কথা শোনা যায়নি । এদিকে হিন্দু পড়ুয়াদের গোমাংস খাওয়ানোয় সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দায় সরব হয়েছেন বিভিন্ন স্তরের মানুষ । শেখ রহুন নামে একজন লিখেছেন,’আমি একজন মুসলিম হয়ে বলছি বাংলাদেশের মুসলিমরা এটা খুব বাজে কাজ করেছে ।’
এমডি সাফায়েত হক লিখেছেন,’এটা ঠিক নয়, আমাদের উচিত প্রতিটি ধর্মকে সম্মান করা এবং ধর্মীয় অনুভূতির মূল্যায়ন করা ।’ দুর্যয় রায় ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন,’এটাই হল ইসলামের অন্য ধর্মের প্রতি সম্মান ।’ কেউ কেউ ওই কলেজের প্রিন্সিপাল,চেয়ারম্যান সহ ঘটনায় যুক্তদের অপসারণের দাবিও জানিয়েছে ।।