এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাবুল,১৪ জুন : বিদেশ থেকে পাঠানো মানবিক সাহায্য বিতরণ নিয়ে তালিবনের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ তুলেছে আফগানিস্তানের ফারাহ প্রদেশের পারচমান জেলার বেশকয়েকজন বাসিন্দা । তাদের অভিযোগ, তালিবানরা সাহায্য সামগ্রী দু:স্থ মানুষদের দেওয়ার পরিবর্তে নিজেদের লোক, তাদের পরিচিতজন এবং আত্মীয়স্বজনদের মধ্যেই ভাগ বাটোয়ারা করে নিচ্ছে । ফলে প্রকৃত অসহায় মানুষদের সাহায্য সামগ্রী থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে । উল্লেখ্য,আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রান্তে ত্রাণ বিতরণে তালিবানের হস্তক্ষেপের খবর পাওয়া গেছে এবং কিছু ক্ষেত্রে সহায়তা সংস্থাগুলিকে বিতরণ প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখা হয়েছে ।
আফগানিস্তানে তালিবানের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার পর দেশ জুড়ে দারিদ্র চরম সীমায় পৌঁছে গেছে । সাধারণ আফগানিদের অনাহার থেকে বাঁচাতে সাহায্য বাড়িয়েছে বিদেশী ত্রাণ সংস্থাগুলি । কিন্তু ত্রাণ বিতরণে তালিবান জঙ্গিদের সরাসরি হস্তক্ষেপের কারনে প্রকৃত অসহায় মানুষের কাছে ত্রাণ পৌছছে না । অভিযোগ,অতীতে সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড চালানোর সময় মৃত জঙ্গিদের পরিবারগুলিকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে তালিবানরা । ফারাহ প্রদেশের পারচমান জেলার বাসিন্দাদের মতে, এই জেলায় সাহায্য বিতরণ সুষ্ঠু নয় ।শুধুমাত্র গ্রামের তালিবানের আত্মীয়রা এর থেকে উপকৃত হচ্ছে । পারখমান ফারাহ জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন যে বিদেশী ত্রাণ মূলত অযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে । জেলার আশেপাশের গ্রামগুলি প্রচুর সংখ্যক অভাবী মানুষ রয়েছে কিন্তু তারা ত্রাণ থেকে বঞ্চিত ।
পারচমান ফারাহ জেলার কায়সার গ্রামের বাসিন্দা ফজল আহমদ এই জেলার প্রতিষ্ঠানগুলির সাহায্য বিতরণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে অভিযোগ করে বলেন,’এই প্রক্রিয়াটি ন্যায্য নয় । যোগ্য ব্যক্তিরা এই প্রক্রিয়া থেকে বাদ পড়ছে এবং যারা অভাবী নন তারা প্রতিষ্ঠানের সহায়তা পাচ্ছে । ক্ষুধার্ত মানুষকে সাহায্য করা হচ্ছে না । আমাদের জেলায় প্রায় দুই বছর ধরে ত্রাণ নিয়ে এমনই কর্মকাণ্ড চলছে । ডবলুএফপি একবার আমাদের গ্রামকে সাহায্য করেছিল এবং এটি মাত্র ৩০ শতাংশ সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছেছিল ।’
একই অভিযোগ করেছেন ওয়াসপ পারচমান গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল আজিজ । তিনি বলেন,’ডাব্লুএফপি কর্তৃক অল্প সময়ে খাবার বিতরণ করা ছাড়া আমরা কোনো সাহায্য পাইনি । নগদ সহায়তা এখনও আমাদের অঞ্চলে বিতরণ করা হয়নি, নগদ সহায়তাটি পারচম্যানের কেন্দ্রস্থলের নিকটবর্তী এবং আওতাধীন গ্রামগুলিতে, যেমন মিদন্ডক, লাঘজান, নুরাবাদ, সবজ আনার এবং টলি গ্রামে বিতরণ করা হয়েছিল ।’ তিনি বলেন,’পীর ও শেখদের কাছেও সাহায্য বিতরণ করা হয়েছে । তালইবানরা নিজেরাই বলে যে মুজাহিদিনদের এটা প্রাপ্য, এটা তাদের আগে বন্টন করা উচিত। কিন্তু যা কিছু অর্থ দান করা হয়েছে, তা তারা শুধু তাদের নিজেদের এবং নিজেদের লোকদেরই মধ্যে । অন্যান্য বিদেশী ও দরিদ্র মানুষ আর্থিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে ।’।