এইদিন ওয়েবডেস্ক,গাজীপুর(বাংলাদেশ),২২ জানুয়ারী : বছর দেড়েক আগে ৬ বছরের এক কিশোরকে ধর্ষণের সময় শিশুটি চিৎকার করায় তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছিল প্রতিবেশী চল্লিশোর্ধ্ব এক ব্যক্তি । এই কুকর্মের পর পুলিশের নজর এড়াতে ৪০ দিনের জন্য তাবলিগে চলে গিয়েছিল ধর্ষক । তাবলিগ থেকে ফিরে এসে স্বাভাবিক জীবনযাপন শুরু করে সে । কিন্তু আর শেষ রক্ষা হল না । গত সোমবার বাংলাদেশের গাজীপুরের মাজুখান বাগেরটেকের মাজুখান এলাকা থেকে নাসির মিয়া নামে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) গাজীপুর ইউনিট ।গ্রেফতারির পর ধৃতকে আদালতে তোলা হলে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে ।
গাজীপুর পিবিআইয়ের পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন,গাজীপুরের মাজুখান উত্তরপাড়ায় মহম্মদ ফারুকের মুরগির দোকানে কাজ করত নাসির মিয়া । ফারুকের অনুপস্থিতিতে নাসির তার দোকানে চালাতো । মুরগি ও মুরগির খাবার বেচাকেনার সমস্ত কাজই করত নাসির । মুরগি যাতে বেশি ফিড খেয়ে ফেলতে না পারে সেই কারনে মুরগি তাড়ানোর জন্য একটি খেলনা পিস্তল কাছে রাখত নাসির । মাঝে মধ্যে সে মুরগিগুলিকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ত । এদিকে ওই বন্দুকের টানে প্রায়ই নাসিরের কাছে আসত স্থানীয় বাসিন্দা জুয়েলের ছেলে সিহাব । শিশুটি নাসিরের ছোড়া গুলি কুড়িয়ে আনতো । এজন্য নাসির মাঝে মধ্যে সিহাবকে চিপস কিনে দিত । শিশু সিহাব নাসিরকে ‘মুরগি চাচ্চু’ বলে ডাকতো ।
তিনি জানান ঘটনাটি ঘটে ২০২১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বরে দুপুরে । ওইদিন ছয় বছরের সিহাব হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যায় । বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি । পরের দিন উত্তরপাড়া থেকে নিথর দেহ উদ্ধার হয় । ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায় শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছিল । এ ঘটনায় শিশুটির ঠাকুমা অজ্ঞাত পরিচয়দের আসামি করে পুবাইল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছিলেন ।
এদিকে পুলিশের নজর ঘোরাতে শিশুটির মৃত্যুর তিন দিন পর নাসির এলাকা ছেড়ে চট্টগ্রাম চলে যায় । দুই দিন পর চট্টগ্রাম থেকে ফিরে আসেন নাসির । এর এক সপ্তাহ পর নাসির ৪০ দিনের জন্য তাবলিগে চিল্লায় চলে যায় । সোমবার তাকে গ্রেফতারের পর জেরা করে তদন্তকারী দল জানতে পারে,ঘটনার দিন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল । সেই সময় নাসিরের ঘরে গিয়েছল সিহাব । শিশুটিকে একা পেয়ে তাকে ধর্ষণ করে নাসির । শিশুটি যন্ত্রণায় চিৎকার করে উঠলে নাসির তার মুখ চেপে ধরে । ফলে কিছুক্ষণের মধ্যেই দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ছোট্ট সিহাবের । ধৃত ব্যক্তি পুলিশের জেরায় কবুল করেছে,সিহাবের মৃতদেহটি প্রথমে সে নিজের ঘরের খাটের নিচে লুকিয়ে রাখে । তারপর ভোররাতে দেহটি সালাম মুন্সির বাড়ির পাশে ফেলে দিয়ে আসে । পুলিশের হাতে ধরা পরার ভয়ে ঘটনার তিন দিন পর সে এলাকা ছাড়া হয়ে যায়।।