এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,০৫ সেপ্টেম্বর : উগ্র ইসলামপন্থীদের হাত থেকে রেহাই পেলো না কবরস্থ নাশ । বাংলাদেশের রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলের কবর দেওয়া নিয়ে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। কয়েক ফুট উঁচু বেদি তৈরি করে তাঁকে কবরস্থ করার পর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ তোলে স্থানীয় আলেম সমাজ ও তৌহিদি জনতা। এর জেরে আজ শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরের পর আলেম সমাজের নেতৃত্বে ইসলামি জনতা কবর থেকে নুরুল হকের লাশ তুলে নিয়ে এসে পদ্মার মোড়ে খড়কুটোয় আগুন জ্বালিয়ে লাশটি পুড়িয়ে দেয় ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ সময় উত্তেজিত জনতা পুলিশের দুটি ডাবল কেবিন পিকআপ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মহম্মদ কামরুল ইসলাম ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহম্মদ শরীফ আল রাজীব।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নিজ বাড়িতে আশির দশকের শেষ দিকে নুরুল হক ‘দরবার শরিফ’ প্রতিষ্ঠা করেন। নিজেকে ‘পীর’ দাবি করে তিনি নিয়মিত দরবার কার্যক্রম চালাতেন। ২৩ আগস্ট ভোরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় তাঁর মৃত্যু হলে রাতে প্রথমে এলাকাবাসীর অংশগ্রহণে জানাজা এবং পরে ভক্তদের অংশগ্রহণে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাঁকে মাটি থেকে কয়েক ফুট উঁচু বিশেষ বেদিতে কবরস্থ করা হয়।
এ ঘটনাকে ইসলামবিরোধী দাবি করে স্থানীয় আলেম সমাজ ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় । এর প্রেক্ষিতে ইমাম-আকিদা রক্ষা কমিটি গঠিত হয়। কমিটি রাজবাড়ী প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিক সম্মেলন করে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধান দাবি জানায়। জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম এক সংবাদ বলেন,’যেভাবে নুরুল হককে কবর দেওয়া হয়েছে, তা ইসলাম পরিপন্থী।’ তিনি দ্রুত ধর্মীয় রীতি মেনে কবর দেওয়ার আহ্বান জানান। এরপর কমিটি শুক্রবার জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করে, যার ধারাবাহিকতায় এদিন সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।।

