এইদিন ওয়েবডেস্ক,চেন্নাই,২৭ এপ্রিল : চেন্নাইয়ের ঐশ্বরিয়া ট্রাস্ট নামে একটি এনজিও-এর খরচায় ১৯ বছরের পাকিস্তানি তরুনীর হৃৎপিন্ড প্রতিস্থাপন হল ভারতে । পাকিস্তানের করাচির বাসিন্দা ওই তরুনীর নাম আয়েশা রাশান (Ayesha Rashan) । চেন্নাইয়ের এমজিএম হেলথকেয়ারে জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ৬৯ বছর বয়স্ক এক ভারতীয়ের হৃৎপিন্ড প্রতিস্থাপন করা হয় । অস্ত্রপচার করতে ভারতীয় মুদ্রায় ৩৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে । সমস্ত খরচ খরচা ওই এনজিও ও হেলথকেয়ারের প্রাক্তন রোগীদের আর্থিক সহায়তায় হয়েছে বলে জানিয়েছে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস । নতুন জীবন ফিরে পেয়ে আয়েশা রাশান বলেছেন,’আমি এখন আরামে শ্বাস নিতে পারছি। আমি করাচিতে আমার স্কুল পড়া শেষ করার পরিকল্পনা করছি। আমি একজন ফ্যাশন ডিজাইনার হতে চাই ।’
প্রতিবেদনে জানা গেছে,২০১৯ সালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ এবং হৃদযন্ত্রের ব্যর্থতার কারণে আয়েশার পরিবার প্রাথমিকভাবে তাকে ভারতে নিয়ে এসেছিল । সেই সময়ে চেন্নাইয়ের একজন সিনিয়র কার্ডিয়াক সার্জন হার্ট ট্রান্সপ্লান্টের পরামর্শ দিয়েছিলেন এবং আয়েশাকে অপেক্ষমাণ তালিকায় রাখা হয়। ইতিমধ্যে, স্টপগ্যাপ পরিমাপ হিসাবে, তাকে একটি বাম ভেন্ট্রিকুলার অ্যাসিস্ট ডিভাইস লাগানো হয়েছিল যাতে তার হার্ট পাম্প করতে সাহায্য করা হয়। আয়েশা পদ্ধতির পরে বাড়ি ফিরে যান, কিন্তু ২০২৩ সালে, তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে কারণ তার হৃৎপিণ্ডের ডান দিকে কাজ করা বন্ধ করে দেয় । এছাড়াও, আয়েশার হার্টের পাম্প ফুটো হয়ে গিয়েছিল।
আয়েশা রাশানের মা, সানোবার বলেন,’আমার মেয়ের ভয়ঙ্কর কষ্ট দেখে খুব খারাপ লাগত । আমরা চেন্নাইয়ে সার্জনের কাছে পৌঁছেছিলাম এবং তাকে বলেছিলাম যে আমাদের অস্ত্রোপচারের সামর্থ্য নেই,তবুও তিনি আমাদের ভারতে আসতে বলেছিলেন ।’
এদিকে ভারতে আয়েশা আসার পর মেডিকেল টিম সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে এই মুহুর্তে একমাত্র বিকল্প হল হার্ট ট্রান্সপ্লান্ট। অস্ত্রপচার ৩১ জানুয়ারী হয়েছিল এবং আয়েশাকে ১৭ এপ্রিল ছুটি দেওয়া হয়েছিল। আয়েশার চিকিৎসা বিলগুলি এনজিও ঐশ্বরিয়া ট্রাস্ট, সেইসাথে চিকিৎসক এবং প্রাক্তন রোগীদের আর্থিক সহায়তায় সম্পন্ন হয় ৷
এমজিএম হেলথকেয়ার ইনস্টিটিউট অফ হার্ট অ্যান্ড লাং ট্রান্সপ্ল্যান্টের সহ-পরিচালক ডাঃ সুরেশ রাও কেজি বলেন, ‘আমরা আংশিকভাবে ঝুঁকি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম কারণ দাতার হার্টের অবস্থা ভালো ছিল এবং আমরা জানতাম যে আয়েশার জন্য এটিই একমাত্র সুযোগ ছিল ।’ তার স্বাস্থ্য এখন স্থিতিশীল এবং বাড়ি ফিরতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি ।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মুসলিম শিশুদের জন্ম থেকেই ভারত ও হিন্দু বিদ্বেষী মানসিকতা গড়ে তোলা হয় । একারনে দুই দেশের মুসলিম নাগরিকরা সুযোগ পেলেই ভারতের বিরুদ্ধে বিষ উগরে দেয় । এমনকি বাংলাদেশে ‘ইন্ডিয়া আউট’ প্রচার পর্যন্ত চলে সাম্প্রতিক সময়ে । অন্যদিকে পাকিস্তানিরা ভারতকে ইসলামি রাষ্ট্র করার ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে । স্বভাবতই ভারতে এক পাকিস্তানি তরুনীর হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনে প্রাণ ফিরে পাওয়ার পর বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ।
ওসেন জৈন নামে এক এক্স ব্যবহারকারী তার প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন, ‘১৯ বছর বয়সী পাকিস্তানি তরুণী আয়েশা রাশান ভারতে সফল হার্ট ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারি করেছেন। কিন্তু আব্দুলের জন্য অঙ্গ প্রতিস্থাপন হারাম। তারা কিভাবে পাকিস্তানে এটার অনুমোদন দিচ্ছে ? ৯৯ শতাংশ সম্ভাবনা আছে যে এটি একটি কাফেরের হৃদয় । রক্ত দান এবং অঙ্গ দান উভয়ই হারাম, ফতোয়া চলছে…কিন্তু এটা নিতে নিষেধ নয় । আইন বলে যে যারা দিতে পারে না তাদের নেওয়াও উচিত নয় । কিন্তু তারা জানে কোথায় ফতোয়া দিতে হয় এবং কোথায় ভ্রাতৃত্ব দেখাতে হবে।’।