দিব্যেন্দু রায়,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),২৯ মে : ছাড়া পেয়ে প্রতিবেশীর বাড়ির উঠানে ঢুকে পড়েছিল মাস পাঁচেকের পোষ্য কুকুর শাবক । আর সেই অপরাধে ওই অবলা পশুটিকে হাঁসুয়া দিয়ে কোপায় প্রতিবেশী ব্যক্তি । এদিকে পোষ্যের সঙ্গে এমন নির্মম আচরণ বরদাস্ত করতে পারেননি কুকুরের মালিক । সোমবার জখম কুকরটিকে টোটোয় চাপিয়ে থানায় এনে প্রতিবেশী ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলেন তিনি । জখম কুকুরের মালিকের নাম আনারুল্লা শেখ । পেশায় শ্রমিক আনারুল্লার বাড়ি পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার মাধপুর গ্রামে । এদিন তিনি প্রতিবেশী হ্যাঙাই মল্লিকের বিরুদ্ধে ভাতার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে । আনারুল্লা শেখ বলেন,’একটা অবলা পশুর সঙ্গে এইরকম নৃশংস আচরণ কখনোই মেনে নেওয়া যায় না । আমি চাই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিক পুলিশ ।’ পুলিশ জানিয়েছে,অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত চলছে ।
জানা যায়,আনারুল্লা শেখ মাধপুর এলাকায় এফসিআইয়ের একটি গোডাউনে শ্রমিকের কাজ করেন । মাস পাঁচেক আগে একটি সদ্যজাত কুকুর শাবককে রাস্তায় অসহায়ভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন আনারুল । তারপর থেকেই সন্তান স্নেহে কুকুরটিকে লালন পালন করছেন তিনি । আনারুল্লা জানিয়েছেন, দিনভর কুকুরটি বাড়িতে বাঁধা থাকে । বিকেলের দিকে একটা সময় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় । রবিবার বিকেলেও যথারীতি কুকুরটিকে তিনি ছেড়ে দিয়েছিলেন । ছাড়া পেতেই কুকুরটি প্রতিবেশী হ্যাঙাই মল্লিকের বাড়ির উঠানে চলে যায় ।
তিনি বলেন,’আমি তখন বাড়ির কাজে ব্যস্ত ছিলাম । বিষয়টি খেয়াল করিনি । কিছুক্ষণ পরেই কুকুরটির আর্ত চিৎকারে আমি বাইরে বেড়িয়ে আসি । তখন দেখি কুকুরটির শরীরে গভীর ক্ষত থেকে প্রবল রক্তক্ষরণ হচ্ছে ।’
জানা গেছে, হ্যাঙাই নিজের বাড়ির উঠানে বসে বাঁশের ঝুড়ি বুনছিল । তার হাতে ছিল একটি ধারালো হাঁসুয়া । কুকুরটি পাশে যেতেই হ্যাঙাই হাতে থাকা হাঁসুয়া দিয়ে তার শরীরে সজোরে কোপ বসিয়ে দেয় । পরে কুকুরটি পালিয়ে এলে মালিকের বাড়ির দরজার সামনে লুটিয়ে পড়ে । তড়িঘড়ি নিজের পোষ্যকে ভাতার রাজ্য প্রাণী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসেন আনারুল্লা শেখ । কুকুরের শরীরের ক্ষতস্থানে ২৭ টি সেলাই দেন চিকিৎসকরা । এদিন সকালে কুকুরটিকে টোটো চাপিয়ে ভাতার থানায় এনে প্রতিবেশী ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি ।।