প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,৩০ ডিসেম্বর : বর্ধমানবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করলো ভারতীয় রেল দফতর। শুক্রবার ’বন্দেভারত’ এক্সপ্রেস ট্রেনের উদ্বোধনের দিনেথেকেই শুরু হল নিউ জলপাইগুড়ি- হাওড়া শতাব্দী এক্সপ্রেস ট্রেনের বর্ধমান স্টেশনে স্টপেজ দেওয়া দেরিতে হলেও দাবি পূরণ হওয়ায় খুশি বর্ধমানবাসী । তবে শোড়গোল পলেছে দুই বিজেপি সাংসদের মন্তব্য।
বর্ধমান জংশনের স্টেশন ম্যানেজার স্বপন ভট্টাচার্য জানান,আপ এবং ডাউন দুই লাইনে চলা শতাব্দী এক্সপ্রেস বর্ধমানে স্টেশনে দাঁড়াবে।আপ ট্রেনটি হাওড়া থেকে ছেড়ে বর্ধমান স্টেশণে দুপুর ৩.২৭ মিনিটে পৌছাবে । ছাড়বে ৩.২৯ মিনিটে । অন্যদিকে ডাউন ট্রেন নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ছেড়ে এসে দুপুর ১২.১৬ মিনিটে বর্ধমানে পৌছাবে। ১২.১৮ মিনিটে শতাব্দী এক্সপ্রেস বর্ধমান স্টেশন ছেড়ে যাবে ।
শতাব্দী এক্সপ্রেস বর্ধমান স্টেশনে দাঁড়াবে এই খবরের মধ্যেই এদিন বর্ধমানবাসী বেশী উন্মাদনায়
মাতেন বাংলায় ’বন্দেভারত’ এক্সপ্রেস ট্রেনের পথ চলা শুরু নিয়ে । হাওড়া স্টেশনে ট্রেনটির পথ চলা শুরুর আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠান শেষে ট্রেনটি নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের উদ্দেশ্যে রওনা হয় । হাওড়া স্টেশন থেকে ছেড়ে এসে ট্রেনটি এদিন বেলা ১২ টা ৫৩ মিনিট নাগাদ হাওড়া-বর্ধমান কর্ড শাখার মসাগ্রাম স্টেশনে পৌছায় । ট্রেনেই ছিলেন বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার ও সুরিন্দর সিং আহলুওয়ালিয়া । তিনি হাওড়া স্টেশন থেকেই ’বন্দেভারত’ এক্সপ্রেস ট্রেনে চড়ে ছিলেন ।বন্দেভারত’ এক্সপ্রেস ট্রেনের পথ চলা শুরুকে স্বাগত জানাতে আগে থেকেই বহু বিজেপি কর্মী ও সমর্থক এদিন দলীয় ঝান্ডা হতে নিয়ে মসাগ্রাম স্টেশনে হাজির হয়েছিলেন। তাঁরা ফুল ছুড়ে ও শাঁখ বাজিয়ে ট্রেনটিকে স্বাগত জানান। এমনকি যে ১০ মিনিট ট্রেনটি মসাগ্রাম স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিল ওই সময় ’ভারত মাতা কি জয়’ ও ’জয় শ্রীরাম’ শ্লোগান দিয়ে বিজেপি কর্মীরা মসাগ্রাম স্টেশন প্ল্যাটফর্ম মাতিয়ে দেয় ।ট্রেনটি এরপর শক্তিগড় স্টেশনে কিছু সময় দাঁড়িয়ে তার পর বর্ধমান স্টেশনে পৌছায় । শক্তিগড় স্টেশনে ট্রেন থেকে নেনে পড়েন আহলুওয়াঢ়িয়া। আর বর্ধমান স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে পড়েন সাংসদ জগন্নাথ সরকার ।
মসাগ্রামের মতই শক্তিগড় ও বর্ধমান স্টেশনেও
বহু বিজেপি কর্মী ও সমর্থক উপস্থিত থাকেন
ট্রেনটি দেখতে স্টেশনে উৎসাহী মানুষজনও ভিড় জমিয়েছিলেন। মসাগ্রামের মতই একই শ্লোগান দিয়ে এই দুই স্টেশন এদিন বিজেপি কর্মীরা মাতিয়ে দেয় ।
হাওড়া স্টেশনে বন্দেভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের পথ চলা শুরুর অনুষ্ঠানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে জয় শ্রীরাম শ্লোগান দেওয়া নিয়ে অনুষ্ঠানে তাল কাটে।বিজেপি সাংসদ আহলুওয়ালিয়াও এই বিষয়টি মেনে নিতে পারেন নি ।এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন,“বন্দেভারতের উদ্বোধন একটা রাস্ট্রীয় পর্ব। সেখানে ভারত মাতা কি জয় বলাই উচিৎ ছিল“।প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূয়সী প্রসংশা করেন অহলুওয়ালিজী বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁর মাতৃবিয়োগের পরেও এদিন কোন অনুষ্ঠান বাতিল করেন নি।পশ্চিমবাংলায় প্রথম আমরা বন্দেভারত ট্রেন পেলাম এটা আমাদের কাছে গৌরব বলেও এস এস অহলুওয়ালিয়া মন্তব্য করেন।
অন্যদিকে বাংলায় ’বন্দেভারত’ এক্সপ্রেস ট্রেন চালু নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করতে গিয়ে তাঁকে স্বামী বিবেকানন্দের সঙ্গে তুলনা করে বসেন রাণাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। তিনি বলেন,“প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদর মোদি সেই নরেন, যিনি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।আমাদের বাংলায় স্বামী বিবেকানন্দ সাধনায় দেখতে পেয়েছিলেন যে ভারত জননী জগত জননী রূপে প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে। আর এক নরেন সেই কাজটা প্র্যাকটিক্যালি করছেন। তিনি যদি সশরীরে আসতে পারতেন তাহলে খুবই ভালো লাগতো“। তাহলে স্বামী বিবেকানন্দ অর্থাৎ নরেন অসমাপ্ত কাজ কি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দাস মোদী তার অসমাপ্ত কাজ কি করছেন এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,“বিবেকানন্দ থিওরি দিয়েছিলেন,ভবিষ্যৎতের কথাও বলেছিলেন।
পাশাপাশি তিনি এও বলেন,’ রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসী হয়ে নরেন নিজের আত্মিক উন্নতির জন্য কিছু করেননি, পদব্রজে ভারত বর্ষ ভ্রমণ করেছেন। ভারতের রোগ নির্ণয় করেছেন। সমস্যা কোথায়- তাঁর বাণী রচনার মধ্যে উল্লেখ করেছেন। শিক্ষা পদ্ধতি কি হওয়া উচিত সেইটাও বলেছেন ।
আমাদের এই নরেন অর্থাৎ নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদীর উদ্যোগে শিক্ষা পদ্ধতির আমূল পরিবর্তন হচ্ছে। দেশ কে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। স্বামী বিবেকানন্দ থিওরি দিয়েছিলেন । প্রাক্টিক্যালে নরেন্দ্র মোদী সেটা সম্পূর্ণ করছেন বলে জগন্নাথ সরকার মন্তব্য করেন ।।