এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১১ মার্চ : রাজ্য বিজেপির যুবমোর্চার নেতা ও কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী তরুনজ্যোতি তিওয়ারি আজ জনৈক এক মৌলানার মজলিসের বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপং শেয়ার করেছেন । ভিডিও-এর উপর লেখা বর্ণনা অনুযায়ী ওই ইসলামিক বক্তাকে ‘ইয়াসিন আলি সাহেব বর্ধমানী’ চিহ্নিত করা হয়েছে৷ ভিডিও-এর উপরে লেখা হয়েছে, ‘মেয়েদের দুটো জায়গার চুল কাটা….।’ ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা গেছে,’মায়েদের বলছি শোনো । তোমাদের জন্য খালি দুটো জায়গার চুল ছাড়া অন্য জায়গায় চুল কাটা হারাম । বগলের চুল, লাভির নিচে চুল ছাড়া মায়েরা যদি কেউ ভ্রু পিলাক করে, মাথার চুল কাটে, কোন মেয়ে যদি শরীরের চুল কাটে, এর থেকে হারাম কাজ হয় না । মেয়েগুলো জাহান্নামের খোরাক হবে ।’ এদিকে ওই ইসলামিক বক্তাকে ‘গর্ভাবস্থায় অপুষ্টির ফল’ বলে কটাক্ষ করেছেন তরুনজ্যোতি ।
তিনি এক্স-এ লিখেছেন,’গর্ভাবস্থায় অপুষ্টির ফলে কি ধরনের শিশু জন্মাতে পারে দেখে নিন। এগুলো এদের ধর্মীয় চিন্তা না মানসিক অসুস্থতা? সম্প্রতি এক “বিখ্যাত” ধর্মগুরু মৌলানা ইয়াছিন আলী ঘোষণা করেছেন যে, নারীরা বগল এবং নাভির নিচের লোম ছাড়া অন্য কোথাও শেভ করতে পারবে না, নইলে তারা জাহান্নামের খোরাক হবে। এই মহান ব্যক্তির বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে, তিনি হয়তো বিজ্ঞানের নতুন কোনো গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করছেন! তবে আফসোস, বিজ্ঞানের সঙ্গে এর দূরত্ব সূর্যের সঙ্গে প্লুটোর চেয়েও বেশি।’
তিনি লিখেছেন,’এখন প্রশ্ন হলো, মানুষের ব্যক্তিগত পরিচর্যা নিয়ে এত গভীর চিন্তা করার সময় উনি পেলেন কোথায়? সম্ভবত অন্য জরুরি বিষয়গুলো এতটাই ভালোভাবে সমাধান হয়ে গেছে যে, এখন শেভিং করাই সবচেয়ে বড় সমস্যা! পশ্চিমবঙ্গের মুসলমান সমাজের বেকারত্ব, শিক্ষার অভাব—এসব কিছুই হয়তো মিটে গেছে, তাই উনি এখন নারীদের চুল নিয়ে চিন্তিত।’
তরুনজ্যোতির কথায়,’ এই যুক্তি অনুযায়ী, আল্লাহ যা দিয়েছেন তা বাদ দেওয়া যাবে না, তাহলে বগলের লোম কেন ফেলা যাবে? এটা কি কাঁচা জমিতে ধান চাষের মতো রেখে দেওয়া উচিত ছিল? যদি আল্লাহ যা দিয়েছেন, তা না কাটাই বিধি হয়, তাহলে নখও তো কাটা যাবে না! দাঁতের ক্যাভিটি হলে ফিলিং করাও হারাম হওয়া উচিত!’
ওই ইসলামিক বক্তা সম্পর্কে তরুনজ্যোতি তিওয়ারির উপলব্ধি হল,’আমরা সবাই জানি, সুস্থ মানসিক বিকাশের জন্য গর্ভাবস্থায় সঠিক পুষ্টি দরকার। হতে পারে, এই মহান ব্যক্তির মা যখন প্রেগন্যান্ট ছিলেন, তখন পুষ্টির অভাব ঘটেছিল, যার ফলে উনার চিন্তাভাবনার বিকাশ আর পুরোপুরি ঘটেনি। সমাজের দায়িত্ববান মুসলিম ভাইদের প্রতি বিনীত অনুরোধ—একটা চাঁদা তোলা হোক, যাতে উনার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়।’ সব শেষে তিনি লিখেছেন,’এমনসব লোকেরা যখন সমাজে গুরুস্থানীয় হয়ে ওঠে, তখন বোঝা যায় যে, বাস্তব সমস্যা ভুলে গিয়ে আমরা কিভাবে অদ্ভুত বিষয় নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি।’।
https://twitter.com/tjt4002/status/1899407559662215215?t=C8bhimcuYtO90OftqnI6Yg&s=19