জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,কোচবিহার,১২ জানুয়ারী :গত মঙ্গলবার(১০ জানুয়ারি ২০২২) কোচবিহারের মাথাভাঙা সরকারি হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে ভর্তি হন সন্তান সম্ভবা রেকসোনা খাতুন । প্রসূতি বিভাগের ডাক্তারদের মতে স্বাভাবিক ভাবে নয়, সিজার করতে হবে। এরজন্য জরুরি ভিত্তিতে রক্তের প্রয়োজন। এদিকে রোগীর রক্তের গ্রুপ হলো ও-নেগেটিভ। শহরের কোনো ব্লাড ব্যাংকে নাই এই বিরল গ্রুপের রক্ত। রোগীর চরম পরিণতির কথা ভেবে দিশেহারা হয়ে পড়ে রেকসোনার পরিবারের সদস্যরা। তারা যোগাযোগ করে এলাকার ‘মৈত্রীর বন্ধন’ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি মুস্তাফা মিঞার সঙ্গে। তিনি যোগাযোগ করে কলকাতার বিশিষ্ট সমাজসেবী দেবাশীষ দাসের সঙ্গে। অবশেষে তাঁর প্রচেষ্টায় আলিপুরদুয়ারে সন্ধান পাওয়া যায় সংশ্লিষ্ট ব্লাড গ্রুপ ডোনার ভজন সিংহের। রাতেই রেকসোনার পরিবারের সদস্যরা ছুটে যান ভজন সিংহের কাছে। আলিপুরদুয়ার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক শাখার সহযোগিতায় রাত ১০ নাগাদ সংগৃহীত হয় রক্ত এবং সেই রক্ত নিয়ে পুনরায় মাথাভাঙায় ফিরে আসে রুগীর পরিবারের সদস্যরা। বেঁচে যায় রুগী ও তার সন্তান।
এক্ষেত্রে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন আলিপুরদুয়ারের ডবলুবিবিএস-এর কার্যকরী সমন্বয়কারী বিপাসা সাহা ও মাসুদা পারভীন এবং মানবিক সদস্য মুস্তাফা ও সৌরভ। দেবাশীষ বাবুর মতে,’এরা না থাকলে ডোনার পাওয়াটা খুবই কষ্টসাধ্য হতো।’
প্রসঙ্গত,দেবাশীষ দাস ও তার সংগঠন থ্যালাসামিয়া রুগীদের জন্য সমগ্র রাজ্যজুড়ে সারা বছর ধরে কাজ করে যান। এমনকি মরণোত্তর অঙ্গদানে মানুষদের উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা খুবই প্রশংসনীয়। কথা হচ্ছিল দুর্গাপুরের বিশিষ্ট স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞ ডা: কবিতা চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বললেন,’সম্ভাব্য বিপদ এড়ানোর জন্য যেকোনো সন্তান সম্ভবা প্রসূতির জন্য আগেই রক্তের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। সচেতনতার অভাবে এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না। স্বাভাবিকভাবেই রেকসোনার মত বহু পরিবারের সদস্যরা বিপদে পড়ে যায়।’ দেবাশীষবাবু সহ অন্যান্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মুস্তাফা মিঞা বললেন,’রেকসোনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। নাহলে ভবিষ্যতে বিপদে পড়তে হবে।’ তিনি এবং প্রসুতির পরিবারের লোকজন রক্তদাতা ভজন সিংহকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ।।