প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৮ মার্চ : বিহারের মুঙ্গের থেকে আগ্নেআস্ত্র আমদানি করে বাংলায় বেআইনি আগ্নেআস্ত্রের কারবার ফেঁদে বসা বিজেপি নেতাকে গ্রেপ্তার করলো পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধূতের নাম গঙ্গাধর কর্মকার।পূর্ব বর্ধমানের গলসির সিমনোড়ী গ্রামে তাঁর বাড়ি। জেলার মেমারি থানার পুলিশ সোমবার রাতে মেমারির কানইডাঙ্গা এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি ৭এম এম পিস্তল ও ৫ রাউণ্ড কার্তূজ সহ হাতেনাতে এই বিজেপি নেতাকে পাকড়াও করে।পুলিশের দাবি,জেরায় বেআইনি আগ্নেআস্ত্রের কারবারে জড়িত থাকার কথা ধৃত ব্যক্তি স্বীকার করে নিয়েছে।বাংলায় বসে বিজেপি নেতার আগ্নেআস্ত্রের বেআইনি কারবার চালানোর ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহলে জোর শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
বিজেপি নেতা গঙ্গাধর কর্মকার ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলাপরিষদ আসনে বিজেপি প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছিলেন।এমনকি তিনি বিজেপির মণ্ডল সভাপতিও হয়েছিলেন। এহেন বিজেপি নেতার বেআইনি আগ্নেআস্ত্রের কারবারে জড়িত হয়ে পড়ার খবর সোমবার গোপন সূত্রে পৌছায় মেমারি থানার পুলিশের কাছে।গঙ্গাধর আগ্নেআস্ত্র ডেলিভারি করতে মেমারির পালসিট সংলগ্ন কানাইডাঙ্গা এলাকায় আসছে,এই খবরও আগাম পেয়ে যান মেমারি থানার ওসি প্রীতম বিশ্বাস।এর পরেই ওসির নির্দেশ মতো মেমারি থানর সাব ইন্সপেক্টর সাবীর আলী তাঁর টিম নিয়ে কাইনডাঙ্গা এলাকায় ঘাঁটি গাড়েন।রাতে আগ্নেআস্ত্র ও কার্তুজ নিয়ে গঙ্গাধর কর্মকার কানাইডাঙ্গা এলাকায় পৌছাতেই পুলিশ হাতেনাতে তাকে পাকড়াও করে।
পুলিশের দাবি জেরায় ধৃত গঙ্গাধর কর্মকার স্বীকার করেছেন,৭ এম এম পিস্তলটি ও কার্তুজ তিনি বিহারের মুঙ্গেরের এক ব্যক্তির কাছ থেকে কিনেছিলেন।সেই আগ্নেআস্ত্র ও কার্তুজ বিক্রী করতে গঙ্গাধর মেমারিতে এসে ছিলেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন । আগ্নেআস্ত্র ও কার্তুজ পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে।
সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ মঙ্গলবার
ধৃত গঙ্গাধর কর্মকার কে বর্ধমান আদালতে পেশ করে । এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ ) অভিষেক মণ্ডল জানিয়েছেন,তদন্তকারী অফিসার ধৃতকে ১০ দিন পুলিশি হেপাজতে নেওয়ার দাবি এদিন আদালতে জানান।বিচারক সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন। ধৃতকে হেপাজতে নিয়ে তার সঙ্গে মুঙ্গেরের অস্ত্র কারবারীদের যোগ কতটা গভীরে রয়েছে এবং কতদিন ধরে তিনি বেআইনি ভাবে আগ্নেআস্ত্রের কারবার চালাচ্ছেন তা জানার চেষ্টা করা হবে। পাশাপাশি সোমবার রাতে কোন ব্যক্তিকে আগ্নেআস্ত্র ডেলিভারি দিতে গঙ্গাধর কর্মকার মেমারিতে পৌছে ছিলেন তাও জানার চেষ্টা করা হবে বলে এসডিপিও জানিয়েছেন ।
এদিকে বিজেপি নেতার আগ্নেআস্ত্র কারবারে জড়িত থাকার কীর্তি ফাঁস হতেই সরব হয়েছে মেমারির তৃণমূল নেতৃত্ব । মেমারি ১ ব্লক তৃণমূলে সভাপতি নত্যানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,এটাই বিজেপির আসল স্বরুপ।তাই বাংলার মানুষ এদের কোনও দিনই গ্রহন করবে না“।অন্যদিকে জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন,“হ্যাঁ, একথা ঠিক ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন বিজেপি প্রার্থী হয়ে গঙ্গাধর কর্মকার জেলাপরিষদ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছিলেন।তবে বিজেপি করার জন্য গঙ্গাধর বাবুকে ফাঁসানো হল , নাকি তিনি প্রকৃতই আগ্নেআস্ত্র কারবারে জড়িত ছিলেন তার যথাযথ তদন্ত হওয়া দরকার । যদি প্রমান হয় গঙ্গাধর কর্মকার প্রকৃতই বেআইনি আগ্নেআস্ত্র কারবারে যুক্ত ,তবে আইন মোতাবেক তাঁকে শাস্তি ভোগ করতেই হবে ।।