এইদিন ওয়েবডেস্ক,দক্ষিণ ২৪ পরগণা,১১ ফেব্রুয়ারী : অবশেষে স্বস্তি ফিরল দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি ব্লকের মৈপীঠ- বৈকুণ্ঠপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় । আজ মঙ্গলবার ভোররাত ৩:৩২ মিনিট নাগাদ বাঘটিকে খাঁচাবন্দি হয়। সবজি খেতের মধ্যে ২টি খাঁচা পাতা হয়েছিল। টোপ হিসেবে রাখা হয়েছিল ছাগল । আর ছাগলের মাংসের লোভেই খাঁচাবন্দি হয় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার । বাঘের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। তারপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে বনদপ্তর সুত্রে জানা গিয়েছে। আজই বাঘকে গভীর জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে বলে খবর । এদিকে বাঘ খাঁচাবন্দি হওয়ায় স্বস্তিতে এলাকার বাসিন্দারা। তারা জানান মাঝেমধ্যে বাঘ এলেও এইভাবে একেবারে লোকালয়ে চলে আসেনি। যেকারণে খুবই আতঙ্কের মধ্যে ছিলেন তারা। সারারাত কার্যত বিনিদ্র রজনী কাটিয়েছেন। বাঘ খাঁচাবন্দি হওয়ার খবরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে ভিড় জমান অনেকেই।
রবিবার থেকেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি ব্লকের মৈপীঠ-বৈকুণ্ঠপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। রবিবার বিকেলে স্থানীয় বাসিন্দা রাজকুমার সাঁপুই নামে এক যুবক জেটিঘাটের কাছে বসেছিলেন। সেই সময় শ্মশানঘাটের কাছে একটি বাঘকে ঘোরাঘুরি করতে দেখেছিলেন তিনি। গ্রামে ফিরে সে কথা জানাতেই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এর পরে গ্রামের লোকজন গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলের দিকে যান লাঠিসোঁটা নিয়ে। সেখানেও তাঁরা বাঘের পায়ের ছাপ দেখেন। তার পরেই খবর দেওয়া হয় বনদপ্তর ও থানায়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বনদপ্তরের কর্মীরা ও কুলতলি থানার পুলিশ । বাঘটি যাতে কোনও ভাবে রাতের অন্ধকারে গ্রামের মধ্যে ঢুকে পড়তে না পারে, তা নিশ্চিত করতে নগেনাবাদ ৯ নম্বর মুলার জেটিঘাটের কাছে গ্রামের দিক বরাবর নাইলনের জাল লাগিয়ে দেওয়াও হয়েছিল। এর ফলে রাতে গ্রামে বাঘ না ঢুকলেও সকালে খবর মেলে, নাইলনের জালের আশপাশেই রয়েছে বাঘ। সেইমতো বাঘকে বন্দি করার পরিকল্পনা করতে অভিযান শুরু করে বনদপ্তরের স্থানীয় কুইক রেসপন্স টিমের সদস্যেরা ।
বাঘটি যাতে কোনও ভাবে রাতের অন্ধকারে গ্রামের মধ্যে ঢুকে পড়তে না পারে, তা নিশ্চিত করতে নগেনাবাদ ৯ নম্বর মুলার জেটিঘাটের কাছে গ্রামের দিক বরাবর নাইলনের জাল লাগিয়ে দেওয়াও হয়েছিল। এজন্য রাতে গ্রামে বাঘ ঢুকতে পারেনি । কিন্তু সকালে খবর মেলে যে নাইলনের জালের আশপাশেই রয়েছে বাঘটি । সেইমতো বাঘকে খাঁচাবন্দি করার জন্য টিমের সদস্যেরা বাঘকে বন্দি করতে গিয়েছিলেন। সেই সময়েই কুইক রেসপন্স টিমের এক সদস্য গণেশ শ্যামলের উপর বাঘটি হামলা চালায়। কামড়ে ধরে তাঁর মাথা । সহকর্মীকে বাঁচাতে দলের বাকি সদস্যেরা লাঠি দিয়ে বাঘটিকে আঘাত করেন। তাতে বনকর্মীকে ছেড়ে দিয়ে জঙ্গলের মধ্যে ঢুকে পড়ে বাঘটি। আহত বনকর্মী বর্তমানে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । তার অবস্থা আশঙ্কাজনক । বাঘটি খাঁচাবন্দি হতে অবশেষে স্বস্তি ফিরল কুলতলিতে ।।