প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,৩১ জানুয়ারী : রাস্তা জুড়ে খড়্গ হাতে দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন।কবি শঙ্খ ঘোষ রাজ্যের শাসক দলকে কটাক্ষ করে এই কবিতা লিখতেই হইচই পড়ে গিয়েছিল।কিন্তু কবির কটাক্ষের পরেও বন্ধ হয়নি রাস্তা সংস্কারের অর্থ আত্মসাৎতের অভিযোগ উঠা।তাই রাস্তা সংস্কারের অর্থ আত্মসাৎতের অভিযোগ ঘিরেই এখন তপ্ত হয়ে রয়েছে পূর্ব বর্ধমানের গলসির গ্রাম।উঠেছে গলসির লোয়াপুর- কৃষ্ণরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধানের পদত্যাগের দাবি।
রাস্তা সংস্কারের অর্থ আত্মসাৎতের যে অভিযোগ গলসির লোয়াপুর-কৃষ্ণরামপুর পঞ্চায়ত এলাকার বাসিন্দারা তুলেছেন তা যথেষ্টই চমকে দেওয়ার মতন।এক আধ বার নয়,একই রাস্তা সংস্কার করতে তিনবার টেণ্ডার করে সেই টেন্ডারের টাকা এক ঠিকাদারকে পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলে এলকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন।শুধু অভিযোগ তুলেই খান্ত থাকেন নি বাসিন্দারা। তাঁরা এই দুর্নীতির বিহিত চেয়ে রীতিমতো স্লোগান দিয়ে আন্দোলনে নেমে পড়েছেন। সাথে সাথে পঞ্চায়েত প্রধানের পদত্যাগের দাবিতেও তাঁরা সরব হয়েছেন ।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন,গলসি ১ নম্বর ব্লকের লোয়াপুর-কৃষ্ণরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের লোয়াপুর বাসস্ট্যাণ্ড থেকে সোদপুর পুরোনো সেতু পর্যন্ত যাওয়ার ৫০০ মিটার রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে চলাচলের অযোোগ্য হয়ে রয়েছে।রাস্তার সংস্কার না হওয়ার কারণে ১০ মাস ধরে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। যার ফলে আশপাশের ১৯টি গ্রামের মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।অথচ এই রাস্তা সংস্কারের নামে দুর্নীতি হয়েই চলেছে। তিন মাসে তিনবার ওই একই রাস্তা সংস্কারের টেণ্ডার করে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করে নেওয়া হয়েছে । অথচ বিন্দুমাত্র বদলায়নি রাস্তার অবস্থা ।
এলাকার বাসিন্দা আব্বাসউদ্দীন মণ্ডল, সেখ শান্তরা জানিয়েছেন,লোয়াপুর বাসস্ট্যাণ্ড থেকে সোদপুর পুরোনো সেতু পর্যন্ত রাস্তার সংস্কারের জন্য গলসি ১ পঞ্চায়েত সমিতি গত ৬ নভেম্বর ৯২,১৬২ টাকারএবং ১১ নভেম্বর ৯২,৩৪৮ টাকার টেণ্ডার করেছে। একই রাস্তার সংস্কারের জন্য লোয়াপুর-কৃষ্ণরামপুর পঞ্চায়েতে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি ৫১,৮২৯ টাকার টেণ্ডার করা হয়েছে। আশ্চর্যের বিষয়, তিন মাসে ওই তিনটি কাজই পেয়েছে একই ঠিকাদারি সংস্থা। ঘটনায় মোট ২ লক্ষ ৩৬ হাজার ৩৩৯ টাকার দুর্নীতির অভিযোগ এনে এলাকাবাসী স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান মিরাজ মল্লিককে কাঠগড়ায় তুলেছেন। তাঁরা প্রধানের পদত্যাগের দাবিও তুলেছেন।এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদনও জানিয়েছেন।
পঞ্চায়েত প্রধান মিরাজ মল্লিক অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। পাল্টা সাফাইয়ে তিনি জানিয়েছেন,পঞ্চায়েত সমিতি কী করেছে, তা তিনি জানেন না।তিনি দাবি করেছেন, লোয়াপুর-কৃষ্ণরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েত ওই রাস্তা সংস্কার করছে।তার জিও-ট্যাগ সহ সমস্ত প্রমাণ রয়েছে বলে মিরাজ মল্লিক দাবি করেছেন। জেলা পরিষদ (পূর্ব বর্ধমান) সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার সব শুনে বলেন,বিষয়টি আমার জানা নেই । কি হয়েছে খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।তবে কোন দুর্নীতি হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’।