আমরা ১৯৭১ সালের যুদ্ধের জন্য ইন্দিরা গান্ধীর পিঠ চাপড়াই, কিন্তু পাকিস্তানের পার্লামেন্টে বেনজির ভুট্টোর স্বামী আসিফ আলী জারদারির দেওয়া এই বিবৃতিটি আমাদের অবশ্যই পড়তে হবে… যখন পাকিস্তানের ৯৩,০০০-এর বেশি সেনা ভারতের বন্দী ছিল এবং তিন হাজারেরও বেশি সামরিক অফিসাররা আমাদের হেফাজতে ছিল… পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল । পরিস্থিতি পুরোপুরি ভারতের অনুকুলে ছিল । কিন্তু কংগ্রেস যাকে ‘আয়রন লেডি’ আখ্যা দিয়ে মহিমান্বিত করে, সেই ইন্দিরা গান্ধী আলোচনার টেবিলে ভারতের সর্বনাশ করে দিয়েছিলেন ।
ভারতীয় সেনাবাহিনী সিন্ধুর থারপারকার জেলাকে ভারতের সাথে সংযুক্ত করেছিল এবং এটিকে গুজরাটের একটি নতুন জেলা হিসাবে ঘোষণা করেছিল এবং মুজাফফরাবাদ সংসদে তেরঙা পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল। জুলফিকার আলী ভুট্টো যখন ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে আলোচনা করতে সিমলায় আসেন, তখন তিনি তার মেয়ে বেনজির ভুট্টোকেও সঙ্গে নিয়ে আসেন। ইন্দিরা গান্ধী জুলফিকার আলী ভুট্টোর সামনে একটি শর্ত রেখেছিলেন যে আপনি যদি আপনার ৯৩,০০০ সৈন্য ফেরত চান তবে আপনি আমাদের কাশ্মীর দিন, জুলফিকার আলী ভুট্টো ইন্দিরা গান্ধীকে বলেছিলেন যে আমরা আপনাকে কাশ্মীর দেব না, আমি কিছুতেই স্বাক্ষর করব না, আপনি এই ৯৩,০০০ সৈন্যকে আপনার সাথে রেখে দিন । ইন্দিরা গান্ধী স্বপ্নেও ভাবেননি জুলফিকার আলী ভুট্টো তার চেয়ে বড় খেলোয়াড়। তিনি জানেন কিভাবে টেবিলে বসে সীমান্তে হেরে যাওয়া যুদ্ধ জিততে হয়।জুলফিকার আলীর মারাত্বক চালে কুপোকাত হয়ে গিয়েছিল ইন্দিরা গান্ধী ।
পুপুল জয়কার এবং কুলদীপ নায়ার উভয়েই তাদের বইয়ে লিখেছেন, ইন্দিরা গান্ধী এই সুযোগটি হাতছাড়া করেছিলেন; জেনেভা কনভেনশনের অধীনে কোনো দেশ যদি কোনো যুদ্ধবন্দীকে নিজেদের হেফাজতে নেয় তাহলে তাকে যুদ্ধবন্দীর মর্যাদার প্রতি পূর্ণ খেয়াল রাখতে হবে। জুলফিকার আলী ভুট্টো সন্ধ্যায় হোটেলে তার মেয়ে বেনজির ভুট্টোকে বলেছিলেন যে এই যুদ্ধে ভারতের পিঠ ভেঙে গেছে, আমরা পূর্ণ সাহসিকতার সাথে যুদ্ধ করেছি এবং আমরা ভারতের অর্থনীতিতে মারাত্মক আঘাত দিয়েছি। ভারত ইতিমধ্যে বাংলাদেশী উদ্বাস্তুদের ভার বহন করেছে, এখন ভারত যদি ৯৩,০০০ পাকিস্তানি সৈন্যকে নিজেদের কাছে রাখতে চায়, তাহলে আমরা কি করব? ইন্দিরা গান্ধীর অবস্থা সাপের ছুঁচো গেলা অবস্থা করে দিয়েছি।
আর শেষ পর্যন্ত ইন্দিরা গান্ধীর অবস্থা এমন হয়ে গেল যে পাকিস্তানের শর্তেই তাকে সায় দিতে বাধ্য হতে হল।
ইন্দিরা গান্ধীও কাশ্মীর পাকিস্তানকে দিয়েছিলেন, ৯৩,০০০ সৈন্য ফিরিয়ে দিয়েছিলেন এবং তার ৫৬ জন ভারতীয় সৈন্যকে পাকিস্তানের কারাগারে মারার জন্য রেখেছিলেন এবং ৮ মাস পরে, ভারতের গুজরাট রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত একটি জেলা থারপারকারও পাকিস্তানকে দিয়েছিলেন। সেই সময় থারপারকারের জনসংখ্যার ৯৮ শতাংশ ছিল হিন্দু।
শিমলা চুক্তির পর তৎকালীন সেনাপ্রধান অবসর গ্রহণের পর যে বইটি লিখেছিলেন তাতে বলেছিলেন যে আমরা এই ১৯৭১ সালের যুদ্ধে ময়দানে জিতেছি কিন্তু রাজনীতিবিদরা ভারতকে পরাজিত করে দিয়েছে। আর সেই রাজনীতিবিদ ছিলেন ইন্দিরা গান্ধী কংগ্রেসের ইতিহাসে দেখা যায় তারা আদপে ভারতের মারাত্মক সর্বনাশ করে দিয়েছে!