শ্যামসুন্দর ঘোষ,সিঙ্গুর(হুগলি),১৪ ডিসেম্বর : হুগলি সিঙ্গুরের যে জায়গা থেকে তৎকালীন শাসকদল সিপিএমের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই জায়গা থেকেই আন্দোলন শুরু করল রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্ব । বিজেপির কৃষক সংগঠন ভারতীয় জনতা কৃষাণ মোর্চার ডাকে মঙ্গলবার থেকে ৩ দিনের জন্য অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হল সিঙ্গুরে । ‘কৃষি বাঁচাও,কৃষক বাঁচাও’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে সিঙ্গুরে টাটাদের পরিত্যক্ত কারখানার প্রবেশ পথের ঠিক মুখেই দূর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের পাশে অবস্থান বিক্ষোভ মঞ্চ থেকে রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকে তীক্ষ্ণ ভাষায় আক্রমণ শানালেন রাজ্য বিজেপির নেতারা । উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাহুল সিনহা প্রমুখ ।
শুরুর দিনেই পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি । এদিন শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘আমাদের এই অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি বহু বাধা বিঘ্নের মধ্য দিয়ে করতে হয়েছে । অবস্থান সকাল ১১ টা থেকে শুরু হওয়ার কথা,কিন্তু আমাদের মঞ্চ বাঁধতে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি । বেলা দেড়টার সময় এই ছোট্ট মঞ্চ তৈরি করে আমাদের অবস্থানের কাজ শুরু করতে হয়েছে ।’
পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে আক্রমণ করে শুভেন্দু বলেন, ‘নির্বাচনের পর শাসকদল বিজেপি সমর্থিত কৃষকদের ওপর হামলা চালিয়েছে । রাজ্যে সারের কালোবাজারি হচ্ছে । বন্যার কারনে আমন ধান পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। বিপাকে পড়েছেন আলু চাষিরাও । এরই মাঝে তৃণমূল নেতারা কাটামানি খেয়ে কৃষকদের সর্বনাশ করেছেন । কৃষকদের কথা বলে ক্ষমতায় আসা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষকদের জন্য কিছুই করেননি । রাজ্য সরকার ভূমি রাজস্ব দফতরের পোর্টাল বন্ধ করে দিয়েছে । এ কারণে কোনও কৃষক সহায়তা পাচ্ছেন না । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যে ডিজেল ও বিদ্যুতের দাম সবচেয়ে বেশি ।’সেই সঙ্গে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘প্রতিটি জেলায় কৃষকরা আন্দোলন করবে। এরপর লাখ লাখ কৃষক নবান্ন অভিযান করবেন ।’
দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘মোদি সরকার পেট্রোলের দাম কমিয়েছে । কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলায় তা বাস্তবায়ন করেননি । বর্তমানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন আর রাজ্যে টিকছে না । সেই কারণে উনি ভারতের বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছেন । সবচেয়ে বেশি বিদ্যুতের দাম দিতে হচ্ছে এখানকার কৃষকদের । আর উনি অন্য রাজ্যের জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করছেন । এখান থেকে লোকজনকে ভাড়ায় অন্য রাজ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ।’
সুকান্ত মজুমদার রাজ্যের শাসকদলকে আক্রমণ করে বলেন, ‘রাজ্যে বিদ্যুৎ,পেট্রোল ও ডিজেলের দাম কমানো হচ্ছে না । কারণ এগুলি থেকে কাটমানি পান দিদি এবং তাঁর দলের নেতারা । এদিকে কৃষকদের স্বার্থ প্রতিনিয়ত উপেক্ষিত হচ্ছে ।তাদের দাবি মানা হচ্ছে না। ‘ তিনি বলেন,’সারা রাজ্যে কৃষকরা আত্মহত্যা করছেন কেন ? এখন কৃষকদের পরিবারের সদস্যরা আর কৃষিকাজ করতে চাইছেন না । কারন কৃষি কাজ করে অর্থ উপার্জন হয় না । কয়লা,সারদা দুর্নীতির কত নাম শুনেছি । এবার শুরু হয়েছে সার কেলেঙ্কারি । আমরা গভর্নরের কাছে গিয়েছি । এবার কৃষকদের দাবি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যাব ।’।