এইদিন ওয়েবডেস্ক,২৩ জুলাই : ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলো বর্তমানে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের সম্মুখীন । শ্রীলঙ্কা তো দেউলিয়া হয়ে গেছে । আর শ্রীলঙ্কার বর্তমান পরিস্থিতির পিছনে করোনা মহামারীও বড় ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে । কিন্তু ভারতীয় উপমহাদেশে এমন আরও দুটি দেশ রয়েছে যাদের পরিস্থিতি মোটেই ভালো নয় । এই দুটি দেশও দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে । আর সেই দুটি দেশের একটি হল পাকিস্থান এবং অপরটি নেপাল ।
পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ সরকারকে বারবার সতর্ক করে বলছেন,এর পরেও সরকার যদি মনযোগী না হয় তাহলে অচিরেই শ্রীলঙ্কার মত দশা হবে পাকিস্তানের । আর তাঁর এই আশঙ্কা যে নিছক অমূল নয় তার অন্যতম প্রমাণ হল ক্রমবর্ধমান মূদ্রাস্ফীতি । আর কোনো ভাবেই এর সামাল দিতে পারছেন না শাহবাজ শরীফ ।
পাকিস্তানে বর্তমানে মূদ্রাস্ফীতির হার ২১ শতাংশের ওপরে পৌঁছেছে । পাকিস্তানি রুপিও সর্বনিম্ন পর্যায়ে । আজ এক ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানি রুপির দাম হয়েছে ২২৫ টাকা । পেট্রোলিয়াম পণ্যের উপর ভর্তুকি বাতিল করা হয়েছে । নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বাড়ছে । বিদ্যুৎ সংকট চরমে। দেশের বৈদেশিক ঋণ অনেক গুণ বেড়েছে ।এদিকে মাত্র ৬ সপ্তাহের জন্য পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রার মজুত আছে । আগামী এক বছরে পাকিস্তানের ঋণ পরিশোধ ও বৈদেশিক মুদ্রার মজুতের জন্য ৪০০০ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি প্রয়োজন হবে বলে জানা গেছে ।
ভারতের আরেক প্রতিবেশী দেশ নেপালও বিশেষে সুবিধাজনক অবস্থায় নেই । পর্যটন নির্ভর ছোট্ট এই দেশটির অর্থনীতির মাজা ভেঙে দিয়েছে করোনা । ভারত ও পাকিস্তানের মতো নেপালেও বেড়েছে খাদ্যসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম । নেপালে সরকারি ঋণ জিডিপির প্রায় ৪৩ শতাংশ । তবে নেপালের ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক দিক হল খুব বেশি বৈদেশিক ঋণ নেই । এদিকে মুদ্রাস্ফীতির কারনে ব্যাঙ্কগুলির ভান্ডার খালি হয়ে গেছে । তাই আমানতকারীদের আকৃষ্ট করতে স্থায়ী আমানতের সুদের হার ১৩ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে । বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডার কমতে শুরু করেছে । যেটুকু মজুত আছে তাতে মাত্র আর সাত মাস চলবে । এদিকে পর্যটনের অবস্থাও বিশেষ ভালো নয় । করোনা কিছুটা কমলেও পর্যটনে এখনও গতি আসেনি । তাই মোটেই ভালো অবস্থায় নেই নেপাল। প্রতিবেশী দেশগুলোর অর্থনীতির সংকট ভারতের জন্যও ভালো সঙ্গেত নয়। ভারতকেও আগাম সতর্ক হতে হবে ।।