প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৮ মে : করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হওয়ায় বিজেপিকর্মীর বাবার মৃতদেহ সৎকারে এগিয়ে এলেন না দলের কেউই ।তবে মুখ ফিরিয়ে নেননি পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার পাঁচড়ার তৃণমূলের নেতা,কর্মী ও জনপ্রতিনিধিরা । তাঁরাই শুক্রবার দায়িত্ব নিয়ে বিজেপি কর্মী নীতিশ বালার বাবার মৃতদেহ সৎকারের ব্যবস্থা করলেন।পাঁচড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান লালু হেমব্রম ও উপপ্রধান বিকাশ পাকড়ে শ্মশানে দাঁড়িয়ে থেকে বিজেপি কর্মী নীতিশ বালার বাবার দেহ সুষ্ঠ ভাবে সৎকার করালেন। তৃণমূলের নেতা ,কর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের এই মহানুভবতার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন মৃতর পরিবার পরিজন ও প্রতিবেশীরা ।
পাঁচড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম হাবাসপুর । এই গ্রামের বিজেপি কর্মী নীতিশ বালার বাবা নলিনী বালা (৯০) কোভিড আক্রান্ত হন ।গত ২০ মে তাঁর কোভিড পজিটিভ ধরা পড়ে ।চিকিৎসা চললেও বৃদ্ধ নলিনী বালার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে । শুক্রবার বেলায় তিনি বাড়িতেই মারা যান । নলিনী বাবু মারা যাওয়ার পরেই তৈরি হয় বিপত্তি। কোভিড আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন বলে ভয়ে বিজেপি কর্মী নীতিশ বালার পাশে তাঁর দলের কেউ যেমন দাঁড়াতে
চান নি তেমন মুখ ফিরিয়ে নেন প্রতিবেশীরাও । মৃতদেহ দীর্ঘক্ষণ বাড়িতেই পড়ে থাকে । কিভাবে বাবার মৃতদেহ সৎকার করবেন তার কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলেন না মৃতর ছেলে ।তিনি ঘরে বসে শুধে চোখের জল ফেলেই চলে ছিলেন ।
পাঁচড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান লালু হেমব্রম বলেন ,বিজেপি কর্মীর করোনা আক্রান্ত বাবার মৃতদেহ সৎকারে কেউ এগিয়ে যাচ্ছিলেন না। তাঁরা বিষয়টি জানতে পারার পরেই তৎপর হন
। উপপ্রধান বিকাশ পাকড়ে ও তিনি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন ।প্রধান বলেন ,
এরপরে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন এলাকার তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে তাঁরাই বিজেপি কর্মীর বাবায় মৃতদেহ সৎকার করবেন । সেই মত ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে কয়েকটি ’কিট’ আনান । সেই ’কিট ’পড়ে দলের কর্মীরা মৃতদেহ বাড়ি থেকে তুলে দামোদরের চরে থাকা শ্মশাণে নিয়ে যান । লালু হেমব্রম বলেন ,তিনি এবং উপপ্রধান বিকাশ পাকড়ে শ্মশানে দাঁড়িয়ে থেকে সুষ্ঠ ভাবে বিজেপি কর্মীর বাবার মৃতদেহ সৎকার করান ।
এবিষয়ে জামালপুর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি মেহেমুদ খাঁন বলেন,“তাঁদের দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের বিপদে আপদে পাশে দাঁড়ানোর কথা দলের কর্মীদের প্রতি মুহুর্তে বলেন । এদিন বিজেপি কর্মী নীতিশ বালার অসহায় অবস্থার কথা জানার পর দায়িত্ব এড়িয়ে যায়নি তাঁদের দলের নেতা,কর্মী ও জনপ্রতিনিধিরা । তাঁরা রাজনৈতিক বিভেদ দূরে সরিয়ে রেখে বিজেপি কর্মীর বাবার মৃতদেহ সৎকার করেছে । তবে বিজেপি দলের কর্মীর বিপদে কোনও বিজেপি নেতাদের পাশে না দাঁড়ানোটাই সবথেকে লজ্জার“। জামালপুরের বিজেপি আহ্বায়ক জীতেন ডকাল এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য এদিন করতে চান নি ।