এইদিন ওয়েবডেস্ক,মালদা,১২ ফেব্রুয়ারী : ঘরে যা কিছু পুঁজি ছিল তা চিকিৎসা করাতে গিয়ে সব শেষ হয়ে গেছে । বর্তমানে অর্থাভাবে বন্ধ চিকিৎসা । শেষ পর্যন্ত ব্লক প্রশাসনের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠিয়ে চিকিৎসার ব্যাবস্থা করা অথবা স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন মালদা জেলায় মানিকচক ব্লকের ক্যান্সার আক্রান্ত যুবক পিন্টু ঘোষ । যুবকের এই আবেদন ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে এলাকায় ।
মানিকচক ব্লকের মথুরাপুর অঞ্চলের ভেসপাড়ার বাড়ি পিন্টু ঘোষের । তিনি দুধের ব্যাবসা করতেন । বাড়িতে রয়েছেন বাবা-মা, দুই অল্প বয়সী ভাই,স্ত্রী ও দুই নাবালক সন্তান । বাবা ভুবন ঘোষ পেশায় ভ্যানচালক । হত দরিদ্র পরিবার । মুলত পিন্টু ও তাঁর বাবার রোজগারেই সাত জনের সংসার চলত ।
স্থানীয় ও পরিবার সুত্রে জানা গেছে,বছর দেড়েক আগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন পিন্টু । তারপর প্রথমে স্থানীয় এলাকায় তাঁর চিকিৎসা করানো হয় । পরে সেখানকার চিকিৎসকের পরামর্শে পিন্টুকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয় । কলকাতায় বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করানোর পর জানা যায় পিন্টু ক্যান্সার আক্রান্ত । এরপর কলকাতায় কিছু দিন চিকিৎসা করানোর পর পিন্টুকে ব্যাঙ্গালোর নিয়ে যাওয়া হয় ।
পিন্টুর বাবা ভুবন ঘোষ বলেন,’ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে ঘটিবাটি থেকে শুরু করে বাড়ির গবাদি পশু পর্যন্ত বিক্রি করে দিতে হয়েছে । বর্তমানে আমরা নিঃস্ব । অর্থাভাবে ছেলের চিকিৎসা করাতে পারছি না । প্রতিদিন চোখের সামনে ছেলেটাকে রোগ যন্ত্রনায় কাতরাতে দেখে বুক ফেটে যাচ্ছে ।’ তিনি জানিয়েছেন, দিন কয়েক আগে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হাতে পেয়েছেন । কিন্তু ওই কার্ডে ক্যান্সার আক্রান্ত ছেলের চিকিৎসা হবে কিনা তা জানা নেই বলে জানিয়েছেন ভুবনবাবু ।
এদিকে পরিবারকে অকুলপাথারে দেখে রোগ যন্ত্রনা নিয়েই মানিকচক ব্লকের বিডিওর দ্বারস্থ হয়েছেন পিন্টু ঘোষ । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে লেখা একটি চিঠি বিডিওর হাতে তুলে দিয়েছেন ওই যুবক । তাতে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন, হয় তাঁর চিকিৎসার ব্যাবসা করা হোক,নচেৎ তাঁকে স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি দেওয়া হোক ।
এদিকে এই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায় । এরপর প্রতিবেশীরা ওই যুবকের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় । তবে ক্যান্সারের ব্যায়বহুল চিকিৎসার ক্ষেত্রে ওই সাহায্য যৎসামান্য । স্থানীয়দের দাবি,সরকারিভাবে ওই যুবকের চিকিৎসার ব্যাবস্থা করা হোক । পাশাপাশি দরিদ্র পরিবারটি যাতে খেয়ে পড়ে বাঁচতে পারে তার ব্যাবস্থা করুক প্রশাসন ।
এই বিষয়ে মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌর চন্দ্র মন্ডল বলেন, ‘সত্যিই খুব দুঃখজনক ঘটনা । আমরা ওই যুবকের পরিবারের পাশে আছি । ওই যুবকের কথা জানতে পারলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নিশ্চয়ই তার পাশে দাঁড়াবেন ।’।