প্রদীপ চট্টেপাধ্যায়,বর্ধমান,১৬ জুলাই : দেবী কালিকে নিয়ে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রর করা মন্তব্যের প্রতিবাদ জানাতে কালি প্রতিমা সঙ্গে নিয়েই পথে নামলো বিজেপি কর্মীরা।শুধু পথে নামাই নয়,কালি প্রতিমা মাথায় নিয়ে মহুয়া মৈত্রকে গ্রেপ্তারের দাবিতে থানার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভও দেখালেন বিজেপি কর্মীরা । শনিবার বিকালে স্বয়ং দেবী কালিকে এই ভাবে রাজনীতির ময়দানে দেখে কার্যতই হতবাক হয়ে যান পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের অনেক কালি ভক্ত। বিজেপি নেতারা যদিও ষ্পষ্ট জানিয়ে দেন,দেবী কালির মর্যাদা রক্ষার্থেই তাঁদের এমন আন্দোলনের পথ বেছে নিতে হয়েছে ।
দেবী কালিকে নিয়ে মহুয়া মৈত্রর করা মন্তব্য নিয়ে রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ বেশ কিছুদিন ধরেই জারি রয়েছে। কলকাতা সহ রাজ্যের অন্য জেলা গুলির কোথাও বিজেপি কর্মীরা মহুয়া মৈত্রর কুশপুতুল দাহ করে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন । আবার কোথাও তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে গ্রেপ্তারের দাবিকরে তারা থানায় বিক্ষোভ দেখিয়ে ডেপুটেশন দিচ্ছেন।একই আন্দোলনের ঢেউ এদিন আরো ব্যতিক্রমী ভাবে দেখা গেল জামালপুরে।একেবারে সুসজ্জিত কালি প্রতিমা মাথায় চাপিয়ে নিয়ে এদিন বিকালে জামালপুরের বিজেপি পার্টি অফিস থেকে বেরিয়ে পড়েন বেশ কিছু বিজেপি কর্মী। তাঁরা কালি প্রতিমা সঙ্গে নিয়েই এদিন জামালপুরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে মহুয়া মৈত্রকে গ্রেপ্তারের দাবি জানাতে থাকেন । পরে কালি প্রতিমা মাথায় নিয়ে ওই বিজেপি কর্মীরা জামালপুর থানার একেবারে সামনে জড়ো হয়ে মহুয়া মৈত্রকে গ্রেপ্তারের দাবি করে শ্লোগান দিতে শুরু করেন ।দাবি সনদের বিষয়টি থানার আধিকারিকের কাছেও তুলে ধরেন বিজেপি নেতৃত্ব ।
এদিকে স্বয়ং দেবী কালিকে রাজনৈতিক দলের আন্দোলনে মুখ্য ভূমিকায় দেখে থানার সামনের রাস্তা দিয়ে চলাচল করা মানুষজন হকচকিয়ে যান ।তাঁরা থানার সামনে থমকে দাঁড়িয়ে যান ।তাঁরা বিজেপি নেতাদের বক্তব্য শোনার পর দেবী কালির থানায় হাজির হওয়ার বিষয়টি সন্মন্ধে অবগত হন। সন্ধ্যার পর থেকে জামালপুরের বাসিন্দাদের মুখে মুখে যে কথা ঘুরতে থাকে তা হল, ’কালে কালে একি হল-স্বয়ং কালিকেও থানার আসতে হল’ ।
এদিনের এই আন্দোলনে আন্দেলনে অংশ নিয়েছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা বিজেপি সহ সভাপতি রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী। তিনি বলেন , ‘তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র দেবী কালিকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন । এর আগে সারদা মা কে নিয়েও তৃণমূল বিধায়ক নির্মল মাঝি বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন । এই সব মন্তব্যের মধ্য দিয়ে তৃণমূলের সাংসদ ও বিধায়করা হিন্দু ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করছেন।’ মহুয়া মৈত্রর মন্তব্যের প্রতিবাদ জানাতে তাঁরা কালি মূর্তি সঙ্গে নিয়ে এদিন পথে পথে ঘুরে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। একই ভাবে কালি প্রতিমা সঙ্গে নিয়েই থানায় গিয়ে মহুয়া মৈত্রকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে এসেছেন ।
বিজেপির এদিনের আন্দোলন নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস । জামালপুর ব্লক তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি ভূতনাথ মালিক বলেন,’দেবী কালির প্রতিমা থানার সামনে রাস্তায় নামিয়ে রেখে বিজেপি কর্মীরা আখেরে দেবী কালিকেই অপমান করেছেন।যাঁর মন্দিরে থাকার কথা তাঁকে পথে বসিয়ে দেওয়াটা কেউ মেনে নেবে না ।বাংলার মানুষ খুব ভালোকরেই জানেন বিজেপি মানুষের উন্নয়নের পরিবর্তে ধর্মীয় বিষ ছড়ায় । তাই ২১ শের ভোটে বাংলার মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে । আগামী দিনেও তাই করবে ।’।