জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,হুগলি,১৩ জানুয়ারী :সাধারণ মানুষের দিকে, সমাজের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে নিজের নামকে কার্যত স্বার্থক করে তুলেছে হুগলির হরিপালের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘এসো বন্ধু হই’ । মুমূর্ষু মানুষের স্বার্থে রক্তদান শিবিরের আয়োজনকে কার্যত একটি স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত করে ফেলেছে তারা। একইসঙ্গে মানুষের মন থেকে কুসংস্কার দূর করে নিয়মিত তারা মরণোত্তর অঙ্গদানের অঙ্গীকার শিবিরেরও আয়োজন করে চলেছে। নিজেদের সীমিত সামর্থ্যকে পাথেয় করে দুঃস্থদের বস্ত্র বিতরণও করছে।
সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে স্বামী বিবেকানন্দের ১৬১ তম জন্ম দিবস উপলক্ষ্যে হরিপালের ‘ভগবতীপুর পাঁচ মন্দিরতলা প্রাঙ্গন’-এ আয়োজিত হয় একটি স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরের। এটি তাদের ১৫ তম রক্তদান শিবির। শ্রীরামপুরের শ্রমজীবী হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক শাখার সহযোগিতায় এই শিবির থেকে মোট ২৫ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করা হয়। রক্তদাতাদের মধ্যে ছিলেন ৬ জন মহিলা এবং ১০ জন প্রথমবারের জন্য রক্তদান করলেন। সংগৃহীত রক্ত সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়। যুব সমাজের অনুপ্রেরণার প্রতীক বিবেকানন্দের জন্মদিনে আয়োজিত রক্তদান শিবিরে যুবকদের রক্তদান করতে উৎসাহ দেওয়ার জন্য সংস্থার লক্ষ্য ছিল বেশি । রক্তদাতাদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য শিবিরে উপস্থিত ছিলেন সংস্থার সভাপতি প্রসদ সিংহরায়, সম্পাদক অনির্বাণ ভট্টাচার্য্য এবং অন্বয়, দেবাশীষ, কৌশিক, পার্থ, অভি, তনুশ্রী, মিঠু,স্পন্দিতাসহ অন্যান্য সদস্যরা।
এছাড়া একটি মরণোত্তর চক্ষুদান অঙ্গীকার শিবিরেরও আয়োজন করা হয়। সমস্ত কুসংস্কার দূর করে একাধিক ব্যক্তি মরণোত্তর চক্ষুদান করার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ হন। প্রসঙ্গত এটি সংস্থার পক্ষ থেকে আয়োজিত ১০ তম মরণোত্তর অঙ্গদান শিবির। একইসঙ্গে শিবির থেকে বেশ কয়েকজন দুঃস্থর হাতে বস্ত্র তুলে দেওয়া হয়। শিবিরে সংস্থার ক্ষুদে সদস্যা বছর এগারোর স্পন্দিতার ভূমিকা ছিল খুবই প্রশংসনীয়। অতীতের মত এবারও সে নিজের মত করে শিবিরে আগত মানুষদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। সংস্থার সম্পাদক অনির্বাণের বক্তব্য,’আগামীতে স্পন্দিতা সবার মনে স্পন্দনের সৃষ্টি করে হয়ে উঠবে সংস্থার সম্পদ,আলোক বর্তিকা।’
সংস্থার সভাপতি প্রসাদ সিংহরায় বললেন,’আমরা সারাবছর মানুষের সেবায় নিজেদের ব্যস্ত রাখি। রক্তের চাহিদা মেটানোর জন্য প্রায় প্রতি মাসে আমরা একটি করে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে থাকি। এমনকি আমাদের সদস্যরাও পারিবারিক ভাবেও রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে থাকে। জন্মগত বা অন্য কোনোভাবে অঙ্গের ত্রুটি থাকা মানুষের সাহায্যার্থে মরণোত্তর অঙ্গদানের অঙ্গীকার শিবির বিশেষ করে চক্ষুদান শিবিরের আয়োজন করে থাকি। আগামী দিনে আমরা সমাজের জন্য মঙ্গলজনক আরও কিছু কাজ করব। দরকার সবার সহযোগিতা ।’।