প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৯ অক্টোবর : দরজা বন্ধ কেবিন। তার ভিতরে বসে চলছে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার ভাগ বাটোয়ারা।টাকা ভাগ বাটোয়ারা যাঁরা করছেন তাঁরা হলেন পূর্ব বর্ধমানের গলসির তৃণমূল বিধায়ক নেপাল ঘোড়ুই,গলসি-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি অনুপ চট্টোপাধ্যায় ও কৃষি কর্মাধ্যক্ষ পার্থ মণ্ডল। ২৬ শের বিধানসভা ভোটের আগে এমন ভিডিও (যার সত্যতা এইদিন যাচাই করে নি) ’ভাইরাল’ হতেই তোলপাড় পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। বিজেপি নেতারা দাবি করেছেন,’দরজা বন্ধ ঘরে বসে কাটমানির ওই টাকা তৃণমূল বিধায়ক ও জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়ে পকেটে পুরে নিচ্ছিলেন ।’ যদিও বিজেপির আনা এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন গলসির তৃণমূল বিধায়ক নেপাল ঘোড়ুই এবং তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়।
ভাইরাল হওয়া ভিডিও তে দেখা যাচ্ছে,বিধায়কের সাথে সিগারেটে সুখটান দিতে দিতে ডাইরিতে কিছু লিখছেন গলসি-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ- সভাপতি অনুপ চট্টোপাধ্যায় । আর বাণ্ডিল বাণ্ডিল টাকা একে অপরকে ভাগ করে দিচ্ছেন ওই পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ পার্থ মণ্ডল । তিনি’ই টাকা গুনে বুঝিয়ে দিচ্ছেন। এত কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা কিসে টাকা কোথা থেকে ওই টাকা এল,তা নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য ।
দেখুন ভিডিও 👇
গলসির বাসিন্দাদের কথায় জানা গিয়েছে,গলসি-১ পঞ্চায়েত সমিতিতে বর্তমানে সর্বেসর্বা হলেন অনুপ চট্টোপাধ্যায়।ভোটাভুটি করে অনুপ চট্টোপাধ্যায় কেই দ্বিতীয়বার গলসি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ- সভাপতির চেয়ারে বসিয়েছেন পার্থ মন্ডলই। পার্থ আবার হলেন বিধায়ক নেপাল ঘরুই এর ছায়া সঙ্গী। গলসি-১ পঞ্চায়েত সমিতির সবটাই নিয়ন্ত্রণ করেন অনুপ ও পার্থ। এহেন পার্থ কে রাজ্য সরকার পুলিশি নিরাপত্তাও দিয়েছে ।
বিজেপির জেলা নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন,’কাটমানি আদায় আর তোলাবাজিতে তৃণমূল সিদ্ধহস্ত। টাকা কামানোই তৃণমূলের মূল ভিত্তি । বাণ্ডিল বাণ্ডিল যে টাকা তৃণমূলের বিধায়ক ও দুই জনপ্রতিনিধিকে ভাগ বাটোয়ারা করে নিতে দেখা যাচ্ছে,সেই টাকাও হয়তো কাটমানির টাকা হবে।’ বিপুল পরিমাণ এই টাকার উৎস কি ,তা প্রকাশ্যে আনার জন্য মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র “ইডি’( ED) তদন্তের দাবি করেছেন।
যদিও বিজেপি নেতৃত্বের আনা এই অভিযোগ মানতে চান নি গলসির তৃণমূল বিধায়ক নেপাল ঘোড়ুই এবং তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়।তাঁরা দাবি করেছেন,’২৪ শের লোকসভা ভোটের সময় দলীয় সভার জন্য প্যাণ্ডেল তৈরি করতে হয়েছিল, মাইক ভাড়া নিতে হয়েছিল।এই বাবদ ডেকরেটর মালিক ও মাইক ম্যানরা দলের যাঁর কাছ থেকে যে টাকা পেতেন,সেই টাকা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য তাঁদের সেই টাকা বুঝিয়ে দিয়ে হিসাব খাতায় লিখে রাখা হচ্ছিল। সিসিটিভি ক্যামেরার আওতার মধ্যে বসেই এই কাজটি সারা হয়েছেন।এর মধ্যে অনৈতিক কিছু নেই। তৃণমূলের বদনাম করতে বিজেপি নেতারা এ নিয়ে মিথ্যা রটনা করছে।’।

