এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),২৮ জুন : ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হতে যাওয়া প্রৌঢ়ার প্রাণ বাঁচালেন পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারের ৪ যুবক । ঘটনাটি ঘটেছে আজ শনিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ বর্ধমান-কাটোয়া রেলপথে ভাতার রেলস্টেশনে। ওই চার যুবকের মধ্যে টিকলু প্রামাণিক, রাজকুমার বাউড়ি ও অনুপ সর্দারের বাড়ি ভাতার গ্রামে । চতুর্থজন সঞ্জয় সর্দার পানাগরের বাসিন্দা । তিনি অনুপের আত্মীয় । অন্যদিকে প্রৌঢ়ার বাড়ি ভাতার থানার কাপশোর গ্রামে । স্বামী ও দুই পুত্রবধূর নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করার পরিকল্পনা করেছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি ।
টিকলু,রাজকুমাররা বলেন,’আমরা একটা কাজে আজ রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকায় এসেছিলাম । দুপুর নাগাদ কাজ শেষ হলে চারজনে মিলে প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে চা পান করছিলাম । আমাদের পাশেই ছিলেন ওই প্রৌঢ়া । খুব উদভ্রান্ত দেখাচ্ছিল তাঁকে । ইতিমধ্যে বর্ধমান থেকে কাটোয়াগামী দুপুরের প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি প্লাটফর্মে চলে আসে । কিন্তু ট্রেনটি ঠিক ঢোকার মুখেই রেললাইনে ঝাঁপ দেওয়ার চেষ্টা করেন ওই মহিলা । সৌভাগ্যবশত কাছাকাছি থাকায় আমরা যথা সময়ে তাঁকে ধরে ফেলি ।’
জানা গেছে, বৃদ্ধাকে উদ্ধারের পর ভাতার থানায় ফোন করে বিষয়টি জানান চার যুবক । পরে পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে যায় । পুলিশ মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান যে স্বামী ও দুই পুত্রবধূ তাঁকে নিয়মিত নির্যাতন করে আসছে । সপ্তাহ দুয়েক আগে তাঁর হৃদযন্ত্রের অস্ত্রপচার হয়েছিল । তার পরেও তারা তাকে রেহাই দেয়নি । আজ সকালেও তাকে মারধর করা হয় । তাদের এই নির্যাতন তিনি মেনে নিতে পারেননি । শেষে সিদ্ধান্ত নেন ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে তিনি আত্মঘাতী হবেন । এরপর তিনি কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে এসে সোজা ভাতার স্টেশনে এসে পৌঁছান ।
জানা যায়,পুলিশ ওই প্রৌঢ়াকে বাড়ি পৌঁছে দেয় । পাশাপাশি পুলিশ প্রৌঢ়ার পরিবারের লোকজনদের সতর্ক করে দেয় যে ভবিষ্যতে তার উপর আর যেন নির্যাতন না করা হয় । একজন অসুস্থ প্রৌঢ়ার সাথে এই প্রকার অমানবিক আচরণে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তার প্রাণ বাঁচানো চার যুবক । অনুপ সর্দার বলেন,’আশা করব পরিবার ওই প্রৌঢ়াকে যথাযথ মর্যাদা দেবেন ।’ এদিকে চার যুবকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা ।।