এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৭ জুন : আজ বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মত পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সৈকত নগরী দীঘায় রথযাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল । আগে থেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সহ রাজ্য পুলিশের তাবড় শীর্ষ আধিকারিকরা । মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন ‘দেশ- বিদেশের হাজার হাজার পুণ্যার্থী রণযাত্রা অংশ নিয়েছেন’ । কিন্তু দীঘার একটা ভিডিও এক্স-এ পোস্ট করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন ‘ফ্লপ শো’ । পাশাপাশি তিনি এনিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে ‘তীর্থের কাক’ বলে অবিহিত করে কটাক্ষও করেছেন ।
বিরোধী দলনেতা লিখেছেন,’তীর্থের কাক’ এর শখ হয়েছিলো কলকাতা কে লন্ডন বানাবেন, লন্ডন শহরের বিখ্যাত স্থাপত্য ‘বিগ বেন’ কে নকল করে কলকাতার রাজপথে বসানো হলো, ব্যাস কলকাতা লন্ডন হয়ে গেলো। তার পর শখ হলো সুন্দরবন হবে আফ্রিকার জঙ্গলের মতো, পরে বুঝতে পারলেন ওটা হওয়ার নয়, ওখান দিয়ে অনুপ্রবেশ এর সুব্যবস্থা স্থাপন করতে পারলেই হলো, নির্বাচনে কাজে দেবে।দার্জিলিঙের সুইজারল্যান্ড হওয়ার কোনও প্রয়োজন ছিল না, দার্জিলিঙের সৌন্দর্য অনন্য, তবু প্রথমে হম্বিতম্বি করার পর, যখন দেখলেন পরিকাঠামো উন্নত করার সামর্থ নেই, তখন বিভাজনের রাজনীতি করে পাহাড়ে বসবাসকারী শান্তিপ্রিয় জনগোষ্ঠীদের একে অপরের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেওয়ার বন্দোবস্ত করলেন।’
তিনি আরও লিখেছেন,’প্রথমে বলেছিলেন যে দিঘা হবে গোয়া, বুঝলেন পারবেন না, গোয়ার মতো আন্তর্জাতিক গন্তব্য গড়ে তোলা ওনার ক্ষমতার বাইরে। কি করা যায়, তবে কাছাকাছি পুরী রয়েছে, যদি দিঘা কে পুরী বানিয়ে দেওয়া যায় ! ব্যাস, আবার অনুকরণ করো তবে। কিন্তু এবার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়লেন স্বয়ং তীর্থক্ষেত্রের সাথে। যুগের পর যুগ ধরে চলে আসা রীতি নীতি একেবারে কয়েক মাসের মধ্যে রপ্ত করে ফেলতে হবে। ভক্তরা সাথে নেই তো কি হলো, পুলিশ তো আছে, সব হয়ে যাবে। কিন্তু অনুষ্ঠান আয়োজন করা, আর তীর্থস্থানের মাহাত্ম্য এবং পরম্পরা সৃষ্টি করা এক ব্যপার নয়। মানুষের আস্থার ‘টেন্ডার’ (দরপত্র) তো আর বের করা যায় না; যে সরকারের প্রশাসন কে নামিয়ে দিলাম মাঠে আর ভক্তের মনের মধ্যে ভক্তির সঞ্চার হয়ে গেলো! আজ সাত হাজার পুলিশ নিয়ে পথে নামার পরেও দিঘার চিত্র এই, প্রকৃত ভক্তরা রইলেন দূরে, এক কথায় Flop Show ।’
যদিও মমতা ব্যানার্জি ফেসবুকে দীঘার রথযাত্রা প্রসঙ্গে লিখেছেন,’সকলকে জানাই পবিত্র রথযাত্রার আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা। অনন্ত, অনাদি পুরুষোত্তম শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবর কৃপায় সকলের জীবন মঙ্গলময়, সুখময় হয়ে উঠুক। নবনির্মিত দিঘার জগন্নাথধামে ভক্তি ও শ্রদ্ধায় প্রথমবার রথযাত্রা উৎসবের শুভ সূচনা করলাম। দেশ-বিদেশের হাজার হাজার পুণ্যার্থী আজ পবিত্র রথযাত্রায় অংশ নিয়েছেন। আমিও এবার দিঘার জগন্নাথধামে মানুষের মাঝে উপস্থিত থেকে রথের রশি টানলাম। এই পুণ্যলগ্নের শুভক্ষণে বাংলার সব ধর্ম, বর্ণ, সম্প্রদায়ের মানুষ অংশ নিয়েছেন পুণ্যতীর্থে। দেবভূমি দিঘা আজ আধ্যাত্মিকতার প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠেছে। বাংলার প্রতিটি কোণে অনুরণিত হোক ঐক্য, সাম্য এবং শান্তির বার্তা। সম্প্রীতির মেলবন্ধনে আবদ্ধ থাকুক গৌরবান্বিত বাংলা। আমি সকলকে আরও একবার শুভ রথযাত্রার অভিনন্দন জানাই। জয় জগন্নাথ!’