এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভেটাগুড়ি(কোচবিহারে),২৪ মে : কোচবিহার জেলার দিনহাটার ভেটাগুড়ি-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সিঙ্গিজানি গ্রামে একটা রহস্যময় বাড়ির হদিশ পাওয়া গেছে । করগেট দেওয়া ঘেরা ওই বাড়ির মধ্যে তৈরি হচ্ছিল বিশাল আকৃতির বাঙ্কার । রাত হলেই বাড়িতে বিভিন্ন গাড়িতে চড়ে আনাগোনা হত অজ্ঞাত লোকজনের । গত মঙ্গলবার দুপুরে ওই বাড়িতে পুণ্ডিবাড়ি থানার পুলিশ তল্লাশি অভিযান চালালে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয় বলে জানা গেছে । স্থানীয়রা জানান, মাস ছয়েক আগে ওই বাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করছিল হোসেন আলি, তার দুই ছেলে হাসান ও ওসমান । এখন তাদের এই রহস্যজনক গতিবিধি পুলিশের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে । তদন্তে নেমেছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ । হোসেন আলিরা কি কোন নাশকতার ছক কষছিল নাকি পাচার চক্র চালানোর ঘাঁটি গেড়েছিল তা এখনো পর্যন্ত স্পষ্ট নয় । ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ।
ভেটাগুড়ি-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যা মৌমিতা রায় বর্মন বলেন,মাত্র কয়েক মাস আগে ওই রহস্যময় বাড়িটি তৈরি করা হয়েছিল । তখন শুনেছিলাম যে হোসেন আলি নাকি তার ভাইয়ের সূত্র ধরে জমি কিনে বাড়িটি তৈরি করেছে । চলতি মাসের শুরুর দিকে গাঁজা পাচার করতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে হোসেন আলীর ছেলে ওসমান । তা নিয়ে গোটা এলাকায় শোরগোল পড়ে যায় ।’ তিনি আরো বলেন, বাড়িটি তৈরির পর থেকে বিভিন্ন রহস্যজনক কথা শোনা যাচ্ছিল । রাত হলেই নানা ধরনের গাড়ি এই বাড়িতে আনাগোনা করতো । ওই বাড়িতে বহিরাগতদের আনাগোনার জন্য সম্প্রতি চারিদিকে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছিল । পরে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে আমাদের চোখ কপালে উঠে যায় ।’
জানা গেছে,কোচবিহারের ঘুঘুমারি এলাকাতেও হোসেনদের একটি বাড়ি ছিল। মাস ৬-৭ আগে তারা সিঙ্গিজানি গ্রামে চলে আসে । কিন্তু তাদের সন্দেহজনক গতিবিধি গ্রামবাসীদের নজর কেড়েছিল ।
চলতি মাসের শুরুর দিকে গাঁজা পাচার করতে গিয়ে ওসমান পুলিশের হাতে ধরা পড়লে তোলপাড় পড়ে যায় এলাকায় । মঙ্গলবার দুপুর দুটো নাগাদ দিনহাটা ও সাহেবগঞ্জ থানার পুলিশের যৌথ দল ওই বাড়িতে অভিযান চালায় । একজনকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি একটি পুরোনো গাড়িও পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, মালদা, মুর্শিদাবাদ, কিশনগঞ্জ সহ বিভিন্ন এলাকার অজ্ঞাত পরিচয় লোকজন গাড়িতে চড়ে ওই বাড়িতে নিয়মিত আসতো । কিন্তু তাদের প্রকৃত উদ্দেশ্য কি তা এখনো স্পষ্ট নয় । ঘটনার পর থেকেই রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দাদের বিশেষ দল এলাকায় নিয়মিত নজরদারি চালাচ্ছে। রহস্যময় বাড়ির সাথে বাংলাদেশ-যোগের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না গোয়েন্দারা।
মৌমিতা রায় বর্মনের স্বামী মহেশ বর্মন বলেন,’এমন বিপদজনক পরিবারকে আমরা এলাকায় থাকতে দিতে পারি না ।’ তবে ভেটাগুড়ির ওই রহস্যময় বাড়ির প্রসঙ্গে এখনো মুখ খোলেনি পুলিশ । জানা গেছে,বাড়িটিতে পুলিশি অভিযানের পর ভাঙচুর চালানো হয় । কিন্তু কারা কি উদ্দেশ্যে ভাঙচুর করেছে সেটাও জানা যায়নি । এদিকে এই রহস্যময় বাড়ি ঘিরে এলাকায় ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে ।।