এইদিন ওয়েবডেস্ক,নদিয়া,২৮ জানুয়ারী : দুর্গা পুজো, কালীপুজো,লক্ষ্মীপূজো এবং কার্তিক পূজার পর সরস্বতী পুজোর আবহে ফের অশান্তির সৃষ্টি হল এরাজ্যে । এবারে ঘটনাস্থল নদিয়া জেলা । হাতেগোনা কয়েকদিন পরেই সরস্বতী পুজো । প্রতিটা স্কুলে চলছে পুজোর প্রস্তুতি । নদীয়া জেলার হরিণঘাটা দাসপোল ডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাশীরাম বর্মনও স্কুলে পুজোর প্রস্তুতি নিয়েছিলেন । কিন্তু আজ স্থানীয় জিহাদী যুবক আলিমুদ্দিন মন্ডল স্কুলের চড়াও হয়ে প্রধান শিক্ষককে হুমকি দিয়ে বলে,’কোনদিন সরস্বতী পুজো হয়নি এবং আজও হবে না ।’ শুধু তাই নয়, মিডিয়ার ক্যামেরার সামনে ওই বেপরোয়া যুবককে হুমকি দিতে শোনা গেছে সে নাকি শিক্ষককে ২৪ ঘন্টার মধ্যে বদলি করে দেবে । এদিকে ওই জিহাদির স্কুলে চড়াও হয়ে প্রধান শিক্ষককে হুমকি দেওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে হরিণঘাটা থানার পুলিশ । পুলিশ সতর্ক করলেও অভিযুক্ত আলিমুদ্দিনকে ভ্রুক্ষেপহীন দেখা যায় । এদিকে এই ঘটনা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার । তিনি এই ঘটনাকে মমতা ব্যানার্জির ‘মৌলবাদী তোষণসর্বস্ব’ রাজনীতির প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখছেন । পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গকে গ্রেটার বাংলাদেশে পরিণত করার জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।’
জানা গেছে,এই প্রথম হরিণঘাটা দাসপোল ডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরস্বতী পূজার উদ্যোগ নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক কাশীরাম বর্মন । তিনি জানান,স্কুলে সরস্বতী পূজো করার জন্য কোনো মিটিং করার দরকার পড়ে না । বিশেষ করে হিন্দু মুসলিম যে সমস্ত বাচ্চাদের বই-পুত্র আছে… উভয় সম্প্রদায়ের পড়ুয়ারাই চাইছে যে স্কুলে সরস্বতী পুজো হোক । আর শুরুতেই বাধা চলে এলো । জানা গেছে ঘটনার কথা কানে যেতেই দলবল পাকিয়ে আজ দুপুরে স্কুলে চড়াও হয় জিহাদি যুবক আলিমুদ্দিন মন্ডল । স্কুলের সরস্বতী পূজোর উদ্যোগ নেওয়ার অপরাধে সে প্রধান শিক্ষকের এতটাই ক্ষুব্ধ হয় যে শিক্ষকের দিকে কার্যত তেড়ে যায় এবং আঙ্গুল লুকিয়ে বলে,”কোনদিন পূজো হয়নি আজও হবে না৷ আপনাকে সরাতে ২৪ ঘন্টাও লাগবে না৷ এখানে হিন্দুদের কোন অনুষ্ঠান হতে পারেনা এবং মুসলমানদেরও কোন অনুষ্ঠান হতে পারেনা । আপনি কি এখানে #ধু সাজতে এসেছেন । #*লি ভরে দেবো আপনাকে ।” অনেকে তার এই হুমকির ভিডিও নিজের নিজের মোবাইল ক্যামেরায় রেকর্ড করে রেখে দেন । শিক্ষককে হুমকির সময় কয়েকজন বয়স্ক মুসলিম ব্যক্তিকেও সেখানে দেখা গেছে ।
দেখুন ভিডিও 👇
এদিকে ঘটনার পর চরম আতঙ্কে রয়েছেন প্রধান শিক্ষক কাশীরাম বর্মন৷ তিনি বলেন,’এবার তো আমার স্কুলে আসতে ভয় লাগছে । আতঙ্ক কাজ করছে । স্কুলে সরস্বতী পূজো করার জন্য কোনো মিটিং করার দরকার পড়ে না । বিশেষ করে হিন্দু মুসলিম যে সমস্ত বাচ্চাদের বই-পুত্র আছে… উভয় সম্প্রদায়ের পড়ুয়ারাই চাইছে যে স্কুলে সরস্বতী পুজো হোক । সেখানেই বাধা চলে এলো । আমি ভয় অনুভব করছি ।’ তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা তো আজ এসেছেন এবং আজই চলে যাবেন । আমাকে তো প্রতিদিন স্কুলে আসতে হবে ।’ কিন্তু পুলিশ প্রশাসন তো আছে ? এর উত্তরে বিশেষ কিছু বলতে পারেন নি প্রথম শিক্ষক । তার অভিব্যক্তি দেখে দেখে মনে হল যে তিনি পুলিশ প্রশাসনের উপর ভরসা রাখতে পারছেন না ।
ঘটনা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার । তিনি ওই হুমকির ভিডিও এক্স-এ শেয়ার করে লিখেছেন, ‘নদীয়া জেলার নগরউখড়া অঞ্চলের একটি বিদ্যালয়ের শিহরণ জাগানো ছবি দেখুন! পশ্চিমবঙ্গের সনাতনী হিন্দুদের কাছে বিশ্বাসঘাতক প্রমাণিত হওয়া মৌলবাদী তোষণসর্বস্ব মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি যতই নিজেকে আড়াল করার দুর্বল প্রচেষ্টা করুন না কেন, তাঁর আসল স্বরূপ এখন রাজ্যের সকলের কাছেই প্রকাশিত হয়েছে। দেখুন, শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষার মন্দিরের মতো বিদ্যালয়ে সরস্বতী পূজার আয়োজন করতে গেলে পশ্চিমবঙ্গে কিভাবে ইসলামী মৌলবাদী অপশক্তির হুমকি পেতে হয়! অপদার্থ হিন্দু বিরোধী মুখ্যমন্ত্রী, আপনার চালাকি এখন ধরে ফেলেছে বাংলার মানুষ। কিভাবে আপনি পশ্চিমবঙ্গকে গ্রেটার বাংলাদেশে পরিণত করার জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন!’তবে এই ঘটনায় অভিযুক্ত জিহাদি যুবককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে কিনা জানা যায়নি ।।