এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),২২ জুন : দুপুরে নিজের ৬ বছরের শিশুসন্তানকে নিয়ে হোটেলে খাওয়া দাওয়া করেন যুবক । তারপর ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে রেললাইন ধরে হাঁটতে শুরু করেন । সামনে থেকে একটা যাত্রীবাহী ট্রেন আসতেই কোলে তুলে নেন ছেলেকে । ট্রেনটি সামনাসামনি হতেই ঝাঁপ দেন ট্রেনের সামনে ৷ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় বাবা ও শিশুপুত্রের দেহ । এমনই মর্মান্তিক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে শুক্রবার সন্ধ্যায় কাটোয়া-আজিমগঞ্জ লাইনে পূর্ব বর্ধমান জেলার বাঁদরা রেলগেটের কাছে । প্রথমে মৃতদের পরিচয় জানা না গেলেও পরে যুবকের পকেটে থাকা মোবাইল ফোনের সূত্রে তাদের পরিচয় জানতে পারে রেল পুলিশ । পুলিশ জানিয়েছে,মৃতদের নাম শুভঙ্কর মণ্ডল (৩০) ও তার ছেলে ওঙ্কার মণ্ডল (৬)। মুর্শিদাবাদ জেলার লালবাগ থানার রামরাজাপুর এলাকার বাসিন্দা তারা । আজ শনিবার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের সময় উপস্থিত ছিলেন এদিন মৃত যুবকের প্রতিবেশী ও আত্মীয়রা । জানা গেছে, স্ত্রী মধূমিতাদেবীর সঙ্গে অশান্তির জেরেই শুভঙ্করবাবু এমন ভয়ংকর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন । অবশ্য অশান্তির কারন নিয়ে তারা কোনও মন্তব্য করতে চাননি ।
জানা গেছে,লালবাগ থানার রামরাজাপুর এলাকার বাসিন্দা শুভঙ্কররা দুই ভাই। দু’ভাই বিবাহিত । দাদা দীপঙ্কর মণ্ডল পুলিশ বিভাগে কর্মরত । বৈদ্যুতিন সামগ্রীর মেরামতের কাজ করতেন শুভঙ্কর মণ্ডল । স্ত্রী মধূমিতা দেবী, শিশুপুত্র ওঙ্কার আর বিধবা মাকে নিয়ে ছিল শুভঙ্করবাবুর সংসার ।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে,শুক্রবার সকাল প্রায় সাড়ে দশটা নাগাদ ছেলেকে সঙ্গে নিয়েই বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন শুভঙ্করবাবু । তার আগে স্ত্রীর সঙ্গে কোনো বিষয় নিয়ে তার অশান্তি হয় । সকাল থেকে দুপুর হয়ে গেলেও বাড়ি ফেরেননি শুভঙ্করবাবু । তিনি ছেলেকে নিয়ে মুর্শিদাবাদ থেকে ট্রেনে চড়ে সোজা কাটোয়ায় চলে আসেন । দুপুরে কাটোয়ার একটা হোটেলে বাবা ও ছেলে ভাত খান । ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিকেল ৩ টে নাগাদ রেললাইন ধরে ছেলেকে নিয়ে আজিমগঞ্জ মুখে হেঁটে যেতে দেখেছেন । এরপর বিকেল ৩.৫০ মিনিটে কাটোয়া স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা কাটোয়া-আজিমগঞ্জ আপ লোকাল ট্রেনের সামনেই ছেলেকে কোলে নিয়ে ঝাঁপ দিতে দেখা যায় তাকে । শুভঙ্করবাবুর ফোন থেকে বাড়িতে কল করে তাদের মৃত্যুর খবর জানায় রেলপুলিশ ।।