শ্যামসুন্দর ঘোষ,মন্তেশ্বর(পূর্ব বর্ধমান),০৯ সেপ্টেম্বর : দাদা প্রেমিকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় ৯ বছরের ভাইপোকে শ্বাসরোধ করে খুন করল এক যুবক । চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বর থানার পাটিকেল ডাঙ্গা গ্রামে । নিহত শিশুর নাম আশিক শেখ । এই ঘটনায় শিশুর কাকা আবু শেখকে (৩৩) গ্রেফতার করেছে পুলিশ ।
স্থানীয় ও পরিবার সুত্রে জানা গেছে, অনান্য দিনের মত বৃহস্পতিবারেও যথারীতি স্কুলে গিয়েছিল আশিক শেখ নামে ওই শিশু । বিকেল পর্যন্ত সে বাড়ি না ফেরায় খোঁজখবর শুরু হয় । কিন্তু ওই কিশোরের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি । মৃতের মামা তাহের উল হক বলেন,’আমরা জানতে পারি বিকেলের দিকে আবুর সঙ্গে আমার ভাগনাকে নাকি ঘুরতে দেখা গেছে । সেই কারনে ভাগনা কোথায় জানার জন্য তাকে আটকে রেখে আমরা অনেক জিজ্ঞাসাবাদ করি কিন্তু সে কোনো কিছু কবুল করেনি । শেষে পুলিশের কাছে কবুল করে সে শ্বাসরোধ করে আশিককে মেরে ফেলেছে ।’
জানা গেছে,মন্তেশ্বরের পাটিকেল ডাঙ্গার বাসিন্দা আলি শেখ (৩৬) ও মনোয়ারা বেগমের দুই সন্তানের মধ্যে বড় আশিক । সে স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীতে পড়াশোনা করত । মেয়ে আলিশা প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী । পেশায় রাজমিস্ত্রি আলি শেখ ইতিপূর্বে একাধিক বিয়ে করেছিল বলে জানা গেছে । অন্যদিকে আলির নিজের ভাই আবু শেখও রাজমিস্ত্রির কাজ করেন । বছর দশেক ধরে এক আধিবাসী তরুনীর সঙ্গে তাঁর প্রেমপর্ব চলছে । গ্রামের মোড়ে একটি চালা ঘরে ওই আদিবাসী মহিলাকে নিয়ে থাকতো আবু । এদিকে দিন পনেরো আগে ভাইয়ের প্রেমিকাকে নিয়ে চম্পট দেয় আলি শেখ । আর সেই রোষেই আবু শেখ নিজের ভাইপোকে খুন করেছে বলে অভিযোগ ।
জানা গেছে,বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আশিক শেখ বাড়ি না ফিরলে আবু শেখকে আটকে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করে পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা । কিন্তু সে মুখ খোলেনি । তখন আবুকে একটি গাছে বেঁধে রাখা হয় । এরপর পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় আনে । শেষে পুলিশের ম্যারাথন জেরায় গভীর রাতের দিকে আবু কবুল করে,বৃহস্পতিবার বিকেলে সে তার ভাগনেকে প্রথমে গ্রামের কবরস্থানের কাছে নিয়ে গিয়েছিল । সেখানে ওই শিশুকে সে শ্বাসরোধ করে খুন করে । তারপর ঘাস বোঝাই একটি বস্তায় ভাইপোর মৃতদেহটি ভরে কবরস্থানের পাশে উত্তর দিকে ফাঁকা জায়গায় ফেলে দিয়ে পালিয়ে আসে । একথা শোনার পর রাতের দিকে শিশুর মৃতদেহটি উদ্ধার করে আনে পুলিশ । শুক্রবার ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় । মৃত শিশুর কাকা ও বাবার কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা ।।