এইদিন ওয়েবডেস্ক,১৭ জুলাই : নূপুর শর্মার কথিত ধর্মনিন্দার নামে গোটা বিশ্বজুড়ে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল গুটি কয়েক মুসলিম রাষ্ট্র । ভারত ও বাংলাদেশের অভ্যন্তরেও হয়েছিল হিংসাত্মক বিরোধিতা । এমনি পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের মত কিছু রাজনৈতিক দল নূপুর শর্মার মন্তব্যের বিরোধিতা করেছিল । কিন্তু আজ যখন বাংলাদেশের নড়াইল জেলার শতাধিক হিন্দু বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর,লুটপাটের পর অগ্নিসংযোগ করেছে কট্টরপন্থী মুসলিমরা । ভাঙচুরের পাশাপাশি আগুন ধরিয়ে দিয়েছে মন্দিরে । অন্যদিকে তখন আশ্চর্যজনকভাবে চুপ হয়ে গেছে নূপুর শর্মার ইস্যুতে তোলপাড় সৃষ্টিকারী ওই সমস্ত মুসলিম রাষ্ট্রের পাশাপাশি ভারতের প্রতিটি রাজনৈতিক দল । তবে অনান্যরা চুপ থাকলেও মুখ খুললেন ডাচ সাংসদ গির্ট ওয়াইল্ডার্স (Geert Wilders)। বাংলাদেশের নড়াইলের হামলায় সকলের নীরবতা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুললেন । রবিবারে টুইটারে ওয়াইল্ডার্স লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের নড়াইলে আবারও হিন্দুদের উপর মুসলমানদের হামলা হয়েছে । তাদের বাড়িঘর, মন্দির, দোকানপাট পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে । পৃথিবী চুপ কেন ? হিন্দুদের বিরুদ্ধে ইসলামিক হিংসা কেন গ্রহণযোগ্য ? না ভারতে, না বাংলাদেশে এটা কখনই চলতে পারে না । এটা হিন্দুদের জীবনের বিষয় ।’
উল্লেখ্য,বাংলাদেশের নড়াইল জেলার লোহাগড়া থানার সাহাপাড়ার বাসিন্দা পেশায় মুদিখানা সামগ্রীর ব্যাবসায়ী অশোক সাহার ছেলে আকাশের একটি ফেসবুকে পোস্টকে কেন্দ্র করে কার্যত তান্ডব চালায় মুসলিম জিহাদিরা । শুক্রবার জুমার নামাজের পর থেকে রাতভর দিঘলিয়ার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ১২০ টি হিন্দু বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় দুষ্কৃতী দল । দুষ্কৃতীরা সাহাপাড়ার বাসিন্দা দিপালী রানী সাহা,দিঘলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলীপ সাহাসহ ১০ টি বাড়িতে লুটপাট চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় । বেশ কয়েকটি মন্দিরে ঢুকে প্রতিমা ও আসবাব ভাঙচুরের পর আগুন ধরানো হয় । এদিকে বিনা দোষে অশোক সাহাকে গ্রেফতার করা হলেও রবিবার পর্যন্ত একজনও হামলাকারীকে পুলিশ গ্রেফতার করেনি বলে খবর ।
নড়াইলে হিন্দুদের উপর কট্টরপন্থীদের এই হামলার প্রতিবাদে রবিবার চট্টগ্রামের চেরাগী মোড়ে একটি প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয় । সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে শেখ হাসিনা সরকারকে কার্যত তুলোধোনা করেন ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী । তাঁর অভিযোগ, ‘আমাদের মাননীয়া প্রধানমন্ত্রীর বারবার ক্ষমতায় আসার পরেও নির্বাচনী ইস্তেহার বাস্তবায়িত হচ্ছে না । কারা করতে দিচ্ছে না তাঁকে ? বর্তমান সংসদে দুই তৃতীয়াংশ ক্ষমতায় রয়েছে শাসকদল । তাঁরা চাইলেই সংবিধান পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখে । কিন্তু তাও হচ্ছে না । কোন শক্তি তাঁকে বাধা দিচ্ছে ?’
পাশাপাশি তিনি দাবি করেন,’বর্তমান শাসন যন্ত্রের ভিতরে সাম্প্রদায়িক শক্তি রয়েছে । ওই সাম্প্রদায়িক শক্তি সরকারের শিকড়কে ছিন্ন করে দিতে চাইছে । নড়াইলের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন এদিন । পাশাপাশি তিনি শেখ হাসিনাকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘সিরাজদৌল্লার পতন হয়েছিল বৃটিশদের জন্য নয়,তার কাছের মানুষদের জন্য ৷ জাতির জনকের মৃত্যু হয়েছিল ওনার কাছে থাকা কিছু ক্ষমতা লোভী মানুষের কারনে ।’।