এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাঁকুড়া,১২ জুলাই : মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে ‘নিম্ন মেধার অর্ধশিক্ষিত’ বলে আক্রমণ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । আসলে পশ্চিমবঙ্গে একের পর এক গণধোলাই ও খুনের ঘটনা সামনে আসছে । আর প্রতি ঘটনাতেই নাম জড়াচ্ছে রাজ্যে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে । ওই সমস্ত ঘটনার মধ্যে আড়িয়াদহে এক তরুণীকে হাত ও পা ধরে ঝুলিয়ে রেখে নির্মমভাবে লাঠিপেটা করার একটা ভিডিও ভাইরাল হয় সম্প্রতি । এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা মদন মিত্রের ঘনিষ্ঠ সহযোগী জয়ন্ত সিং । এছাড়াও জয়ন্ত সিং-এর একের পর এক গণধোলাই এর ঘটনা প্রকাশ্য আসতে থাকে । যা নিয়ে চরম অস্বস্তিতে পড়ে যায় শাসক দল । জয়ন্ত সিংয়ের গ্রেফতারিতে দেরি, তাঁর আত্মসমর্পণেও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে । আড়িয়াদহ নিয়ে বৃহস্পতিবার কলকাতা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, যে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, সেটি পুরনো । সে সময় সাংসদ ছিলেন অর্জুন সিং। একুশ সালের ঘটনা নিয়ে আমার ইলেকশন ড্যামেজ করার জন্য গত ৭২ ঘণ্টা ধরে এক তরফাভাবে একই নিউজ দেখিয়ে গিয়েছেন। অথচ সেই সময় অর্জুন সিং ছিলেন ওখানকার সাংসদ। যারা করেছিল তারা গ্রেফতার হয়ে এখনও জেলে আছে।’
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আজ শুক্রবার বাঁকুড়া জেলার খাতড়া থানার দেদুয়া গ্রামের খুন হওয়া দলীয় কর্মীর বাড়িতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘গতকালকে উনি বলেছেন আড়িয়াদহ নাকি ব্যারাকপুর লোকসভার অন্তর্গত । আড়িয়াদহ কামারহাটি, আর কামারহাটি দমদম লোকসভার অন্তর্গত । আর দমদম লোকসভাতে ২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত সৌগত রায় সাংসদ । অর্জুন সিং সাংসদ নন । অথচ মুখ্যমন্ত্রী বলছেন এটা ২০২১ সালের ঘটনা তখন অর্জুন সিং এমপি ছিলেন ।’ এরপর মুখ্যমন্ত্রী কে আক্রমণ করে তিনি বলেন,’যে দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী থাকার পরেও বলেন আড়িয়াদহটা কামারহাটির মধ্যে, আর কামারহাটিটা দমদম লোকসভার মধ্যে জানে না,এইরকম একজন নিম্ন মেধার অর্ধশিক্ষিত মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে আমাদের চলতে হচ্ছে । আর মুসলমানরা এক হয়ে ভোট দিচ্ছে, কিছু গরিব মানুষ ভাতার লোভে ভোট দিচ্ছে এবং পুলিশ কিছু ছাপ্পা মারছে, তাই আমাদের বয়ে নিয়ে যেতে হচ্ছে, এটা পশ্চিমবঙ্গের দুর্ভাগ্য ।’
খোদ অর্জুন সিংও মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন । তিনি বলেছিলেন, ‘বেলঘরিয়া ব্যারাকপুরের মধ্যে পড়ে নাকি দমদমের মধ্যে পড়ে তা যে মুখ্যমন্ত্রী এটাই জানেন না, এটা বাংলার মানুষের দুর্ভাগ্য । দমদমের সাংসদ সৌগত রায়, আর কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র। আর জয়ন্ত একটা ডাকাত একটা চোর । ২০২১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর যে তাণ্ডব চালাচ্ছিল, ২০২২-এ পুরসভাতেও তাণ্ডব চালিয়েছিল,আর এখন আমাকে নিশানা করেছেন ।’ তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বলেন,’আমাকে খুব ভালবাসেন তো ! আসলে ওনার নেতাদের ঘাড়ে এত দুর্নীতি যে আমাদের ঘাড়ে এসব ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন । মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছেন । তাই একজনের নাম আর এক জনের নামে চালিয়ে দিচ্ছেন ।’।