এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১২ জুলাই : ছাত্রীদের সাথে অশালীন আচরণের অভিযোগ তুলে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা । ভাতার থানার কুবাজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ঘটনা । মূল অভিযুক্ত স্কুলের এক সহশিক্ষকের বিরুদ্ধে । আজ শুক্রবার দুপুরে কুবাজপুর গ্রাম থেকে তিন শতাধিক লোকজন স্কুলে জড়ো হয়ে তুমুল বিক্ষোভ শুরু করে । অনেক মহিলাকে বিক্ষোভে সামিল হতে দেখা যায় । অভিযুক্ত সহশিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকসহ তিন শিক্ষিককে একটা ঘরে তালাবন্ধ করে রেখে দেওয়া হয় । খবর পেয়ে ভাতার থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায় । শেষ পর্যন্ত পুলিশ ক্ষিপ্ত জনতাকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে তালা খুলিয়ে ৩ শিক্ষককে মুক্ত করে । যদিও বিষয়টি নিয়ে এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্রামবাসীর তরফে থানায় নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি বলে জানা গেছে । যদিও অভিযুক্ত সহশিক্ষকের দাবি তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে ।
ভাতার ব্লকের আমারুন-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কুবাজপুর গ্রাম ।গ্রাম ঢোকার মুখেই রয়েছে কুবাজপুর উচ্চ বিদ্যালয় । কুবাজপুরসহ আশপাশের বেশ কিছু পড়ুয়া এক স্কুলে পড়াশোনা করে । তিন শতাধিক ছাত্রছাত্রী রয়েছে স্কুলে । জানা গেছে,স্কুলের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকজন ছাত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে অশালীন আচরণ করার অভিযোগ উঠছিল বেশ কিছুদিন ধরে । ছাত্রীরা বিষয়টি প্রধান শিক্ষককে জানায় । কিন্তু প্রধান শিক্ষক তাদের কথায় কোনো গুরুত্ব দেয়নি বলে অভিযোগ । তারপর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছিলেন অবিভাবকরা । আজ সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে । জানায় । অবিভাবকরা এনিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে কয়েকজন ছাত্রী জানিয়েছিল। কিন্তু প্রধানশিক্ষক গুরুত্ব দেননি।
জানা গেছে,এদিন স্কুলের প্রথম পিরিয়ড শেষ হতেই কুবাজপুর গ্রামের বাসিন্দা শতাধিক মহিলা ও পুরুষ স্কুলে এসে জড়ো হন । তাদের একটি প্রতিনিধিদল প্রথমে প্রধানশিক্ষকের কাছে গিয়ে সহশিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের সাথে অশালীন আচরণের বিষয়টি উত্থাপন করেন । কিন্তু প্রধান শিক্ষকের গ্রামবাসীদের সঙ্গে তর্কবিতর্ক জুড়ে দেন বলে অভিযোগ । ফলে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় স্কুল চত্বরে ৷ এরপর ক্ষিপ্ত জনতা অভিযুক্ত সহ শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক ও অন্য এক শিক্ষককে স্কুলের একটা ঘরে ঢুকিয়ে তালা লাগিয়ে গিয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে । তার আগে অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষিকাদের স্কুলের দোতলার ঘরে সরিয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে কুবাজপুর গ্রামের বাসিন্দা এক ব্যক্তির অভিযোগ, ‘আমার নাতনি অষ্টম শ্রেণীতে পড়াশোনা করে । ওই সহ শিক্ষক আমার নাতনির সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছিল । নাতনি বিষয়টি আমাদের জানালে আমরা স্কুলে যাই । তখন জানতে পারি সে শুধু আমার নাতনিই নয়,আরও অন্তত ৩৬ জন ছাত্রীর সঙ্গে নোংরা আচরণ করেছিল ওই শিক্ষক ।’ পরিস্থিতি সামাল দেয় ।
অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক স্বপ্নাংশু লোধ বলেন,’নির্দিষ্ট কোনো শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে বিষয়টি লিখিতভাবে জমা দিতে বলেছি অভিভাবকদের । অভিযোগপত্র পেলে ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে ।’ অভিভাবকরাও জানিয়েছেন যে তারা স্কুলশিক্ষা দফতরের কাছে এনিয়ে গণ অভিযোগপত্র জমা দেবেন ।।