এইদিন ওয়েবডেস্ক,মঙ্গলকোট(পূর্ব বর্ধমান),৩০ আগস্ট : মঙ্গলকোটের নোয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সিরাজুল শেখের বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে গত মঙ্গলবার রাতে তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে আলমারি খুলে বেশ কিছু সোনার গহনা ও নগদ ৩০ হাজার টাকা চুরি হয় । পরের দিন রবিউল এই ঘটনায় মঙ্গলকোট থানায় একটা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন । তার অভিযোগের ভিত্তিতে একই গ্রামের বাসিন্দা শেখ আহম্মেদ ও বাপি শেখ নামে দু’জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ । আর গ্রেফতারির পর থেকেই শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠী অভিযোগকারী ও আসামিপক্ষের পাশে দাঁড়িয়ে গেলে রণক্ষেত্রের আকার নেয় মঙ্গলকোটের নোয়াপাড়া গ্রাম । বৃহস্পতিবার রাতে এলোপাতাড়ি বোমাবাজি, গোলাগুলি চলে গ্রামে । গুলি ও বোমার আগুনে আহত হয়েছে কয়েকজন । আজ শুক্রবার দুপুরে আহতদের পক্ষ থেকে মঙ্গলকোট থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয় । পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দু’ জনকে আটক করেছে ৷ এদিকে এই ঘটনার দায় সিপিএমের উপর চাপিয়েছে তৃণমূল । মঙ্গলকোটের বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী দাবি,এসব সিপিএম করেছে । অন্যদিকে এই অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় সিপিএম নেতা দূর্যোধন সর বলেছেন,তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলায় এই ঘটনা ঘটেছে । ওই এলাকায় আমাদের কোনো সংগঠনই নেই ।
জানা গেছে,অভিযোগকারী সিরাজুল শেখের দাদা রবিউল শেখ মঙ্গলকোটের ঝিলু-২ অঞ্চলের ৯৮ নম্বর বুথের তৃণমূলের সভাপতি । ঝিলু ২ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মোজাহার মোল্লার গোষ্ঠী ধৃত দুই চোর শেখ আহম্মেদ ও বাপি শেখের পক্ষে দাঁড়িয়ে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় । রবিউল শেখের অভিযোগ,বৃহস্পতিবার রাতে নিজের বাড়ির সামনেই খামারবাড়িতে সম্পর্কীয় ভাই শেখ নাসিরুদ্দিনসহ কয়েকজন মিলে গল্পগুজব করছিলেন । সেই সময় মোজাহার মোল্লার অনুগামী শেখ সাদ্দাম, লালন শেখ, শামিম শেখের নেতৃত্বে প্রায় ২০ জনের দল এসে আমাদের উপরে হামলা চালায় । আমাদের লক্ষ্য করে তারা বোমাবাজি করতে থাকে এবং গুলিও চালায় । আমি কোনওমতে বাড়ি ঢুকে যাই । কিন্তু বোমের আগুনে আমার হাত পুড়ে যায়৷ আমার স্ত্রী চম্পা বিবিও জখম হয়েছেন। শেখ নাসিরুদ্দিন ছুটে পার্টি অফিসে আশ্রয় নেয় । তখন হামলাকারীরা পার্টি অফিস লক্ষ্য করেও বোমাবাজি করে । পার্টি অফিসের জানালা দিয়ে গুলি চালায় । গুলির ছররা লাগে নাসিরুদ্দিনের হাতে ।নাসিরুদ্দিনের ছেলে একাদশ শ্রেনীর পড়ুয়াকে গুলি করতে করতে তাড়া করে নিয়ে যাওয়া হয় মাঠের দিকে ।
জানা গেছে,চুরির ঘটনার পর সিরাজুল শেখ একই গ্রামের বাসিন্দা সুজাদ শেখ, সাদ্দাম শেখ, শেখ আহমেদ , বাপি শেখ ও মিঠু শেখের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন । অভিযুক্তরা ঝিলু ২ অঞ্চলের উপপ্রধান মোল্লা মোজাহারের অনুগামী । পুলিশ আহম্মেদ ও বাপি শেখকে গ্রেফতার করে । বোমাবাজি ও গোলাগুলির পর মোজাহারের ছেলেকেও পুলিশ আটক করেছে বলে জানা গেছে ।মোজাহারের সাফাই,মিথ্যা মামলায় তার ছেলেসহ বাকিদের জড়ানো হয়েছে । এদিকে ঘটনার পর ব্যাপক উত্তেজনা থাকায় এলাকায় পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে ।।