এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,০১ জুলাই : দেশে বিদেশে চাপের মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত ঢাকার আশুলিয়ায় শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে(৩৫) পিটিয়ে খুনে অভিযুক্ত ছাত্র আশরাফুল ইসলাম জিতুকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হল বাংলাদেশ পুলিশ । খুনি ছাত্রকে গাজীপুরের শ্রীপুরের নগরহাওলা গ্রাম থেকে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব) ।
ঢাকার আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকার হাজি ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষকতা করতেন উৎপল কুমার সরকার । খুনি ছাত্র আশরাফুল ইসলাম জিতু ওই স্কুলের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র । সে প্রথমে স্কুল পরে মাদ্রাসা এবং পুনরায় সে স্কুলে ভর্তি হয়েছিল । ওই পড়ুয়া এলাকায় বখাটে বলে পরিচিত । শৃঙ্খলা ভঙ্গ, মারামারিসহ স্কুলের পরিবেশ নষ্টের জন্য তার বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি অভিযোগ রয়েছে । স্কুলে যাওয়া-আসার পথে ও স্কুল চলাকালীন সে ছাত্রীদের ইভটিজিং ও বিরক্ত করত । স্কুল এসে সবার সামনে ধূমপান, স্কুল ইউনিফর্ম ছাড়া স্কুলে আসা-যাওয়া, মোটর সাইকেল নিয়ে বেপরোয়াভাবে চলাফেরার অভিযোগ রয়েছে ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে । এমনকি অধ্যক্ষের ভাইপো হওয়ার সুবাদে সে শিক্ষকদের পর্যন্ত মানতো না । তাদের হেনস্থা করত বলে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন ।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও জানান, জিতুর নেতৃত্বে এলাকায় একটি কিশোর গ্যাঙ গড়ে উঠেছিল । গ্যাঙ সদস্যদের নিয়ে মাইক্রোবাসে করে যত্রতত্র ঘুরে বেড়িয়ে দাদাগিরি করত । এনিয়ে পরিবারের কাছে তার বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করলে জিতু গ্যাঙের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে তাদের উপর হামলা চালাতো । এলাকায় ত্রাস সৃষ্টির লক্ষ্যে হামলা ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে বেড়াতো খুনি জিতু ।
প্রসঙ্গত,গত শনিবার (২৫ জুন) হাজি ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজে ছাত্রীদের ক্রিকেট খেলা ছিল । ওইদিন দুপুর ২টার দিকে উৎপলবাবু মাঠের একপাশে দাঁড়িয়ে খেলা দেখছিলেন । আর সেই সময় জিতু একটি উইকেট নিয়ে শিক্ষকের মাথায় এলোপাতাড়ি পিটিয়ে পালিয়ে যায় । হামলার আগে সে স্কুলের বিদ্যুতের মেইন সুইস বন্ধ করে দিয়েছিল যাতে সিসিটিভি ক্যমারায় এই ভিডিও রেকর্ড না হয় । পরে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় উৎপলবাবুর । তারপর দেশ ও বিদেশ জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে । শেষে গ্রেফতার করা হল খুনি পড়ুয়াকে ।।