শ্যামসুন্দর ঘোষ,পূর্বস্থলী(পূর্ব বর্ধমান),১১ মার্চ : স্থানীয় কৃষকরা যাতে তাদের উৎপাদিত ফসল ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে পারেন সেই লক্ষ্যে ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যের প্রতিটা ব্লকে একটি করে কৃষি মান্ডি তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । কিন্তু কিছু কিছু ব্লকে কৃষি মান্ডি নির্মাণের জন্য জায়গা নির্বাচন ভুল হওয়ায় রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগের সুবিধা নিতে পারেননি সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলির কৃষকরা । এমনই একটি কৃষি মান্ডি হল পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলী-২ নম্বর ব্লকের পাটুলীতে নির্মিত কৃষি মান্ডি । সকল প্রকার পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও এই কৃষি মান্ডিতে আজ বিরাজ করছে শ্মশানের নিঃশব্দতা । কৃষি মান্ডিটি পরিণত হয়েছে বেকার যুবকদের নিরাপদ আড্ডার কেন্দ্র হিসাবে । রাতে দুষ্কৃতীদের আনাগোনা ও দিনে বসে মদের ঠেক ।
পূর্বস্থলী উত্তর বিধানসভার অন্তর্গত পাটুলীতে রয়েছে এই কৃষি মান্ডিটি। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক হলেন তপন চ্যাটার্জী। পার্শ্ববর্তী পূর্বস্থলী দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূলের বিধায়ক স্বপন দেবনাথ আবার রাজ্যের একজন মন্ত্রীও । বছর আটেক আগে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে পাটুলীর এই কৃষি মান্ডিটি তৈরি হয় । একতলা এবং দুতলা বড় বড় একাধিক ভবন,খুচরো এবং পাইকারি দোকানদারদের জন্য পৃথক ভবন, যাতায়াতের জন্য পাকা রাস্তা,ওজন করার জন্য ওয়েব্রিজসহ বিভিন্ন সুবিধা যুক্ত এই কৃষি মান্ডিটি । নির্মিত হওয়ার পর স্থানীয় চাষীরা আশার আলো দেখেছিলেন। এলাকায় উৎপাদিত শাক, সবজি পাইকারি ও খুচরা দরে বিক্রী হবার কথা ছিলো এই কিষান মান্ডিতে। পাশাপাশি এখানে বড় বড় গোডাউন সহ প্রায় ৫০টি দোকান তৈরী করে দেওয়া হয়,যাতে বেকার যুবক যুবতীরা সেখানে ব্যাবসা করে স্বাবলম্বী হতে পারেন। উদ্বোধনের ৮ বছর পরেও আজ পাটুলীর এই কৃষি মান্ডিতে বিরাজ করছে শ্মশানের নীরবতা ।
স্থানীয় বাসিন্দা সোমনাথ মণ্ডল বলেন,’পাটুলিতে একটা মান্ডি তৈরি করা হয়েছে । কিন্তু এখানে সেভাবে লোকজন আসে না । মান্ডিতে সারা দিনে কোন চাষীর দেখা মেলে না। অধিকাংশ সময়ই স্থানীয় যুবকদের আড্ডা দিতে দেখতে পাওয়া যায় । মাঝেমধ্যে মদের আসরও বসে । এটা নামেই কৃষি মান্ডি ।’ কিন্তু কেন এই অবস্থা হল পাটুলির কৃষি মান্ডিটির ? এর সদুত্তর দিতে পারেনি কেউই । তবে স্থানীয় সূত্র থেকে জানা গেছে যে ভুতুড়ে জায়গার তকমা ঘোঁচাতে ৪০ ফুট দুরত্বের কৃষি আধিকারিকের অফিস-টি তুলে আনা হয়েছে এই কিষান মান্ডিতে । বছরের নিদিষ্ট কিছু দিনে কিছু ফোড়েরা এখানে ধান বিক্রি করতে আসে । আর বছরের বাকি দিনগুলি শ্মশানের নীরবতা বিরাজ করে মান্ডিতে । আধিকাংশ দোকান পাট আজও তালা বন্ধ অবস্থায় পড়ে আগে । কৃষি মন্ডিতে জমেছে আগাছা । মান্ডিতে যাতায়তের গেটের সামনে ঢেকে গেছে আগাছার জঙ্গলে । সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের টাকায় নির্মিত এই মান্ডির পরিনতি শেষ পর্যন্ত কি হবে তানিয়ে সংশয়ে আছেন স্থানীয় বাসিন্দারা । পটুলির কৃষি মান্ডির এই করুন পরিনতির জন্য রাজ্যের শাসকদলের উদ্যোগের অভাবকেই দায়ি করেছেন তারা ।।
The silence of the crematorium today in the agricultural market near the minister’s house, the coming and going of criminals at night and the sitting and drinking alcohol during the day