এইদিন ওয়েবডেস্ক, ভাতাড়(পূর্ব বর্ধমান) ১৮ জানুয়ারি: পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতাড়ের এক সাংবাদিকের প্রচেষ্টায় নিখোঁজ সন্তানকে একমাস পর ফিরে পেল ত্রিপুরার এক পরিবার।মানসিক ভারসাম্যহীন ২৪ বছরের যুবক সুব্রত সিনহাকে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় নিয়ে আসেন তার মা শান্তিদেবী। বাড়ি ফেরার পথে শিয়ালদহ স্টেশন থেকে নিখোঁজ হয়ে যান সুব্রত।দুদিন আগে ওই যুবককে ভাতাড়ের আলিনগর বাসস্ট্যান্ডে ঘোরাঘুরি করতে দেখেন আলিনগরের বাসিন্দা পেশায় এক বৈদ্যুতিন মাধ্যমের সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম। তাকে নিজের বাড়িতে যত্ন সহকারে রেখে দিয়ে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে ওই যুবকের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হন আমিরুল।এদিন সোমবার দমদম এয়ারপোর্টের কাছে নিয়ে গিয়ে সুব্রতকে তার বাড়ির লোকজনদের হাতে তুলে দেন আমিরুল ইসলাম।তার আগে ত্রিপুরা থেকে চলে আসেন সুব্রতর জামাইবাবু ও এক দালা। সুব্রতকে ফিরে পেয়ে চরম খুশি তার পরিবারের সদস্যরা। তারা কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন আমিরুল ও আমিরুলের পরিবারকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে আলিনগর গ্রামের বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম নামে ওই সাংবাদিক শনিবার বাড়ি ফেরার পথে আলিনগর মোড়ের কাছে রাস্তার ধারে বসে থাকতে দেখেন ওই মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে। তার নাম পরিচয় জানার চেষ্টা করেন আমিরুল।
আমিরুল ইসলাম বলেন, ” যুবকটি অসংলগ্ন কথাবার্তা বললেও মাঝেমধ্যে সঠিক কথা বলছিল।বারবার জিঞ্জাসা করায় নিজের হাতে ইংরেজি অক্ষরে তার নাম ঠিকানা লেখে।যদিও ঠিকানা অসম্পূর্ণ ছিল।তখন গুগুল সার্চ করে অনুমান করতে পারি বাংলাভাষী হলেও যুবকটির বাড়ি ত্রিপুরায়।”
ত্রিপুরার বীরচন্দ্রনগর এলাকার ওই যুবকের বাড়ি বুঝতে পেরে ত্রিপুরার এক সংবাদমাধ্যমের কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন আমিরুল ইসলাম।তারপর ওই শনিবার রাতে ভিডিও কলিংয়ের মাধ্যমে নিখোঁজ যুবক সুব্রতর মা শান্তিদেবীর সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন সেখানকার ওই সাংবাদিক।তখন বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যায়।মা ছেলের কথোপকুহয় অনেকক্ষণ ধরে।আমিরুলের কথায়,” ভিডিও কলিংয়ের সময় যেমন শান্তিদেবী অঝোরে কাঁদছিলেন তেমনই কাঁদছিল সুব্রত।তখন আমরা নিজেদের চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি।”
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে শান্তিদেবী তার একমাত্র ছেলে সুব্রতকে কলকাতায় এক মনরোগ বিশেষজ্ঞর কাছে নিয়ে এসেছিলেন।ফেরার সময় গত ১৪ ডিসেম্বর শিয়ালদহ স্টেশন থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় সুব্রত। রেলপুলিশের কাছে নিখোঁজ ডাইরিও করা হয়েছিল। কিন্তু সুব্রতর হদিশ পায়নি তার পরিবার। শনিবার যোগাযোগ হয়।
এদিন ত্রিপুরা থেকে সুব্রতর জামাইবাবু অঞ্জন সিনহা এবং তুতো দাদা পরিমল সিনহা নিতে আসেন সুব্রতকে। আমিরুল ইসলামের সঙ্গে তার স্ত্রী রোজিনা বিবি এবং শ্বশুর সাজাহান শেখ ছিলেন।তারা সুব্রতকে শীতের পোশাক কিনে দেন। দুদিন ধরে নিজেদের বাড়িতে রেখে আমিরুল সুব্রতকে তার পরিবারের হাতে তুলে দিলেন। আমিরুল ও তার পরিবারের এই মহানুভবতার প্রশংসা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও।।