এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতাড়(পূর্ব বর্ধমান),১৭ জানুয়ারী : নাক দিয়ে এক দু’ফোঁটা করে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে । বাম পায়ের জানুর ক্ষতস্থান রক্তে ভেজা । রবিবার ভাতাড় বাজার সুকান্ত পল্লী এলাকায় এরকমই জখম অবস্থায় দেখা গেল একটি পুর্ণ বয়স্ক হনুমানকে । সারাদিন ধরে গৃহস্থের বাড়ির জলের ট্যাঙ্ক অথবা অ্যাসবেস্টসের চালে ঝিমিয়ে বসে থাকতে দেখে হনুমানটিকে উদ্ধারের জন্য পূর্ব বর্ধমান বন দপ্তরে একাধিকবার ফোন করা হয় । কিন্তু সেখান থেকে কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ । বনদপ্তরের ভুমিকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এলাকায় । স্থানীয়দের আশঙ্কা চিকিৎসার অভাবে বেঘোরে মারা যেতে পারে হনুমানটি । স্থানীয়দের দাবি,হনুমানটিকে অবিলম্বে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যাবস্থা করুক বনদপ্তর । তবে হনুমানটি কিভাবে জখম হল তা জানা যায়নি । স্থানীয়দের অনুমান কোনও মানুষ হয়তো হনুমানটিকে নির্মম ভাবে মেরেছে । অথবা অন্য হনুমানের সঙ্গে মারামারির জেরেও ওই হনুমানটি জখম হতে পারে বলে অনুমান স্থানীয় মানুষের ।
এদিন সকালে ভাতাড় বাজারে পুরনো বিডিও অফিসের উলটো দিকে সুকান্ত পল্লীর বাসিন্দা অরূপ চৌধুরীর বাড়ির সদর দরজার উপর জলের ট্যাঙ্কে বসে থাকতে দেখা যায় হনুমানটিকে । অরূপবাবুর স্ত্রী চিন্ময়ীদেবী বলেন, ‘তখন হনুমানটির নাক থেকে রক্ত গড়াচ্ছিল । বাম পায়ে ক্ষত থেকে রক্ত চুঁইয়ে লোম ভিজে গিয়েছিল । এই দেখে হনুমানটির কাছে কয়েকটি আলু রেখে দিয়ে আসি । কিন্তু সে ওই আলুগুলো খায়নি । সারাদিন ধরে আমাদের জলের ট্যাঙ্কের কাছে অথবা পাশে গৌতম রায়ের বাড়ির অ্যাসবেস্টসের চালে রোদের মধ্যে ঝিমিয়ে বসেছিল হনুমানটি ।’
স্থানীয় পশুপ্রেমী ধীমান ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরাই হনুমানটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পাঠাতে পারতাম । কিন্তু আমাদের কাছে কোনও খাঁচা নেই । তাই ঝুঁকি নিতে পারিনি ।’
জানা গেছে,এরপর হনুমানটিকে উদ্ধার করার জন্য পূর্ব বর্ধমান জেলার বনদপ্তরের একাধিক কর্মীকে ফোন করা হয় । প্রথমজন জানান উদ্ধারের কাজ সাধারনত ফরেস্ট গার্ডরাই করেন । তাই ফরেস্ট গার্ডকে ফোন করতে বলেন তিনি । ওই কর্মীর দেওয়া ফরেস্ট গার্ডের নম্বরে ফোন করলে উনি বলেন পূর্ব বর্ধমান বন দপ্তরের রেঞ্জ অফিসারকে বিষয়টি জানাতে । যদিও ফরেস্ট গার্ডের দেওয়া নম্বর থেকে রেঞ্জ অফিসারকে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভই করেননি ।
এদিকে বিকেল নাগাদ হনুমানটিকে একই অবস্থায় ঝিমিয়ে বসে থাকতে দেখে চিন্ময়ী চৌধুরী,রিঙ্কু রায়,বুলটি রায় নামে গৃহবধুরা হনুমানটিকে আলু,বিস্কুট প্রভৃতি খাদ্যসামগ্রীসহ জল বাড়িয়ে দেন । তখন হনুমানটিকে সেগুলি খেতে দেখা যায় । স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি অবিলম্বে হনুমানটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসায় পাঠানোর ব্যাবস্থা করুক বন দপ্তর । তা না হলে বিনা চিকিৎসায় মারা যেতে পারে ওই অবলা জীবটি ।।
দেখুন ভিডিও :