এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১২ মার্চ : মাঝেমধ্যেই আমরা ‘ঝটকা’ এবং ‘হালাল’ শব্দ দুটির মুখোমুখি হই, কিন্তু প্রশ্ন হল এগুলোর অর্থ কী এবং এগুলো নিয়ে এত আলোচনা কেন? দুটোই দুটি ভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে খাওয়ার জন্য পশুহত্যা করার পদ্ধতি। মুসলমানরা হালাল রীতি অনুসরণ করলেও, শিখ ও হিন্দু সম্প্রদায় ঝটকা পছন্দ করে। এখন প্রশ্ন হল,এই দুই প্রকারে পশুহত্যার পার্থক্য কী ? আসলে,হালাল হল কোরানের আয়াত পড়তে পড়তে ধীরে ধীরে পশুর ধমনী এবং শ্বাসনালী কেটে ফেলা এবং পশুটি তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে তার শরীরের সমস্ত রক্ত বের না হয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা । ঝটকায় পশুর মস্তক দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় । তাতে পশুটি তাৎক্ষণিকভাবে মারা যায় । ‘হালাল’ ও ‘ঝটকা’ নিয়ে বর্তমানে দেশে বিতর্ক চলছে ৷ বছর তিনেক আগে কর্ণাটক থেকে শুরু হয় হালাল বিতর্ক । ক্রমে তা দেশের বাকি অংশে তীব্র বিতর্কের জন্ম দেয় । হিন্দু জনজাগৃতি সমিতি হালাল মাংসের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে এবং হালাল পণ্য বর্জনের ডাক দেওয়া হয়। ২০২৩ সালের নভেম্বরে উত্তরপ্রদেশ সরকার হালাল- প্রত্যয়িত পণ্যের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলে বিতর্ক চরম আকার ধারন করে । বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টেও যায়।
রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার নেতা ও কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী তরুনজ্যোতি তিওয়ারি এরাজ্যেও ‘ঝটকা’ এবং ‘হালাল’ বিতর্ক জমে উঠেছে বলে মনে করছেন । এনিয়ে তিনি এক্স-এ লিখেছেন, ‘হালাল সার্টিফিকেটের সঙ্গে যদি সত্যিই ধর্মের কোনো সম্পর্ক না থাকে, তাহলে হালাল পর্ক( Halal Pork )কোথায় পাওয়া যায়, সেটা খুঁজে বের করাই তো উচিত! নিশ্চয়ই যারা হালালকে শুধু “স্বাস্থ্যকর প্রক্রিয়া” বলে প্রচার করেন, তারা এর উত্তর দিতে পারবেন। কারণ, বিজ্ঞান তো ধর্ম দেখে না, তাই না? আর যদি “হালাল” শব্দটা বিশেষ একটি ধর্মীয় অনুশাসনের প্রতিফলন হয়, তাহলে সেটা সাধারণ ব্যবসায়িক সার্টিফিকেটের ছদ্মবেশে কীভাবে হাজির হয়? প্রশ্ন কিন্তু গুরুতর!’
তিনি লিখেছেন,’অন্যদিকে, কিছু মানুষের মতে, হালাল মাংস খেতে কারও কোনো সমস্যা হওয়া উচিত নয়, কারণ এটা নাকি ধর্মনিরপেক্ষ। তাহলে ঝটকা প্রক্রিয়ায় মাংস খেতে সমস্যা কোথায়? হালাল যদি হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে গ্রহণযোগ্য হয়, তাহলে Jhatka (বলি দেওয়া পাঁঠার মাংস) খেতে কি কোনো সমস্যা আছে? নাকি এখানে “ধর্মনিরপেক্ষতা” একটু একপেশে?’
রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের এই প্রসঙ্গে ভূমিকা নিয়ে তিনি লিখেছেন,’কয়েকদিন আগেই তৃণমূলের শাখা সংগঠন জামাতপক্ষ প্রচার করছিল যে “বাংলায় থাকতে হলে বলির মাংস খেতেই হবে”— খুব ভালো কথা, তৃণমূলের শাখা সংগঠন জামাতপক্ষের সকল সমর্থকরা খাবে তো ? জামাতপক্ষ এই দাবী তুললে তাদের নেতা গড়গাসুরের কপালে কষ্ট আছে ।
বস্তুত, এই তর্কের আসল সারমর্ম হলো অর্থনৈতিক শক্তি কার হাতে কেন্দ্রীভূত হচ্ছে। তাই সবার জন্য সমান নীতি থাকলেই বরং সত্যিকারের ভারসাম্য বজায় থাকবে। #Hindu_Eco_System প্রমোট করা যদি রাজনৈতিকভাবে ভুল হয়, তাহলে একমুখী বাজারনীতি চালানোও অনৈতিক!’ সবশেষে তিনি লিখেছেন,’খেলা কিন্তু বেশ জমেছে!’