এইদিন ওয়েবডেস্ক,আউশগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),১৯ জানুয়ারী : আদিবাসী সমাজে পৌষ মাস হচ্ছে শেষ মাস । মাঘ মাস থেকে শুরু হচ্ছে আদিবাসীদের নতুন বছর । সাঁওতালি ভাষাতে যাকে বলা হয় ‘সাগুন নাওয়া সেরমা’ । আর এই মাসেই রয়েছে আদিবাসীদের সবচেয়ে বড় পরব ‘সাকরাত’ । প্রাচীন প্রথা মেনে রয়েছে শিকারের চল । এই উপলক্ষে বছরের প্রতি মাঘ মাসের প্রথম তিন মঙ্গলবার আদিবাসী পুরুষরা শিকারে বের হন ।
সেই প্রথা অনুযায়ী এদিন মঙ্গলবার খুব সকালে আউশগ্রামের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের কাছে দেখা যায় অজয়নদের চর দিয়ে বীরভূম জেলা থেকে কয়েকশো আদিবাসী দল বেধে আউশগ্রামের জঙ্গলমহল এলাকার দিকে এগিয়ে আসছে । তাদের সঙ্গে রয়েছে বেশ কয়েকটি শিকারী কুকুর । শুধু বীরভূম জেলাই নয় পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম এলাকার শতাধিক আদিবাসীদের শিকারের উদ্দেশ্যে জড়ো হতে দেখা যায় ভুয়েরা বটতলার কাছে ।
মঙ্গলবার সকালে আউশগ্রামের এই ঘটনা ঘিরে এলাকায় ব্যপক উত্তেজনা ছড়ায়। খবর পেয়ে সহকর্মীদের নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন আদুরিরা বিট অফিসার আসরাফুল ইসলাম । তিনি বীরভূমের ওই শিকারীদলের সামনাসামনি দাড়িয়ে পড়েন । ফলে আর এগুতে সাহস পায়নি আদিবাসী শিকারির দল ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এদিন শিকারী দলের সামনে গিয়ে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন বিট অফিসার । পাশাপাশি তিনি বনরক্ষা কমিটির সদস্যদেরও ডেকে পাঠান । তারপর সকলে মিলে বোঝানোর পর শিকারী দল ফিরে যায় । বনদপ্তর তৎপর না হলে এদিন প্রচুর সংখ্যক বন্যপ্রাণী মারা পড়তে পারতো বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা । স্থানীয়রা বনদপ্তরের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ।
বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, আউশগ্রাম জঙ্গলে সম্প্রতি ময়ূরের সংখ্যা বেড়েছে । ময়ূরের বাচ্চাদের মাঝেমধ্যেই আশপাশের গ্রামে ঢুকে পড়তে দেখা যায় । এছাড়া রয়েছে প্যাঙ্গোলিন, সজারু, বড়বিড়াল । আসরাফুল ইসলাম বলেন,”শিকারীরা একবার জঙ্গলে ঢুকে পড়লে প্রথমেই তারা ময়ূর ও সজারুগুলোকে মারবে। ধীরে ধীরে নিঃশেষ হয়ে যাবে এইসব বন্য পশুপাখি । তাই এইদিন বেআইনিভাবে পশুশিকার রুখে দেওয়া হয়েছে।’।