প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,৩০ আগষ্ট : ভোট পরবর্তী রাজনৈতিক হিংসার ঘটনার তদন্তের জন্য ইতিমধ্যেই সিবিআই দল পূর্ব বর্ধমানে পা রেখেছে ।এবার সিবিআই তদন্ত করবে বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের দিন সন্ধ্যায় জেলর ভাতারের সেরুয়া গ্রামের এক গৃবধূকে বিবস্ত্র করে মারধোর ও শ্লীলতাহানির মামলার তদন্ত।যে মামলায় পুলিশ কাউকে যেমন গ্রেপ্তার করেনি তেমনই চার্জশিটেও রাখা হয়নি শ্লীলতাহানির ধারা। হাইকোর্ট যেহেতু ভোট পরবর্তি হিংসার মামলার তদন্তের নির্দেশ সিবাআইকে দিয়েছে তাই এই মামলার তদন্ত ভারও সিবিআই নিজেদের হাতে নিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সিবিআইয়ের স্পেশাল ক্রাইম ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সঞ্জয় কুমার সিনহা এই বিষয়ে তাঁদের নতুন করে কেশ রুজু করার বিষয়টি চিঠি মারফত পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিশ সুপার কে জানিয়েও দিয়েছেন। জেলা পুলিশ সূত্রে খবর এই মামলার যাবতীয় নথিপত্র পুলিশ সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছেন ।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের দিন সন্ধ্যায় দুষ্কৃতী দাল ভাতার থানার সেরুয়া গ্রাম নিবাসী ওই গৃহবধূর বাড়িতে হামলা চালায় ।অভিযোগ দুস্কৃতিরা বিবস্ত্র করে বধূকে মারধর করার পাশাপাশি তাঁর শ্লীলতাহানি করে।দুস্কৃতিরা বধূকে প্রাণে মেরে দেওয়ারও হুমকি দেয় বলে অভিযোগ ওঠে ওই দুস্কৃতিদের বিরুদ্ধে ।
আক্রান্ত বধূ তাঁর উপরে হওয়া নির্যাতনের কথা জানাতে ভাতার থানায় যান । থানা অভিযোগ না নেওয়ায় নির্যাতিতা বধূর পরিবার ঘটনা বিষয়টি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে জানায় ।অভিযোগে বেশ কয়েকজনের জড়িত থাকার কথা তাঁরা উল্লেখ করেন ।
গৃহবধূর পরিবারের সেই অভিযোগের গুরুত্ব বিচার করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলার পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেয় । সেই মোতাবেক থানা মারধর, ভাঙচুর, শ্লীলতাহানি ও ভীতি প্রদর্শনের ধারায় মামলা রুজু করে। তদন্তে নেমে পুলিশ ঘটনায় ভাতার থানার নৃসিংহপুরের বাসিন্দা দুঃখহরণ মাঝির জড়িত থাকার বিষয়ে জানতে পারে। পুলিশ ৪১ এ সিআরপিসির ধারায় তাকে নোটিস পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডেকে পাঠায় । যদিও তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি । দুঃখহরণ ছাড়া আর বাকি অভিযুক্তদের কাউকে পুলিশ চিহ্নিতও করতে পারেনি। দুঃখহরণ সিজেএম আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ দুঃখহরণ কে গ্রেপ্তারের প্রয়োজন মনে করেনি এমনটা উল্লেখ করে সিজেএম তার জামিন মঞ্জুর করেন । এরপর পুলিশ
তদন্ত সম্পূর্ণ করে শ্লীলতাহানির ধারা বাদ দিয়ে শুধুমাত্র ভাঙচুর, মারধর ও ভীতি প্রদর্শনের ধারায় আদালতে চার্জশিট পেশ করে। গৃহবধূর পরিবারের দাবি পুলিশের কাছে তাঁরা সহযোগীতা পান নি । এবার সিবিআই তদন্তভার হাতে নেওয়ায় প্রকৃত দোষীরা ধরা পড়বে ,ন্যায় বিচারও মিলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন নির্যাতিতা গৃহবধূ ও তাঁর পরিবার ।।