এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৪ আগস্ট : কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তরুনী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের নৃসংশতা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না রাজ্যবাসীর বৃহৎ অংশের মানুষ । এই ঘটনায় আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষসহ প্রকৃত দোষীদের আড়াল আড়াল করার অভিযোগ উঠছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের বিরুদ্ধে । দু’জনেরই পদত্যাগের দাবি উঠছে । বিশেষ করে মমতা ব্যানার্জির পদত্যাগের দাবিতে তোলা শ্লোগান ‘দফা এক দাবি এক-মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ’ শ্লোগান ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছে রাজ্যে । এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বীরভূমের প্রবীর দাস,কলকাতার সায়ন লাহিড়ী এবং নদীয়ার শুভঙ্কর হালদার নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন পড়ুয়া আগামী ২৭ আগস্ট “নবান্ন অভিযান”-এর ডাক দিয়েছেন । সেই ডাকে ছাত্রছাত্রী, সাংবাদিক থেকে শুরু করে অরাজনৈতিক ও রাজনৈতিক মিলে সমাজের সকল স্তরের মানুষের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে । ‘নবান্ন অভিযান’ আটকাতে মমতা ব্যানার্জির সরকার আদালতেরও দ্বারস্থ হয়েছিল । কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট ও কলকাতা হাইকোর্ট এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে রাজি হননি । ফলে ‘নবান্ন অভিযান’ ব্যাপক চাপে রয়েছে রাজ্যের শাসকদল । এমতবস্থায় এই অভিযান আটকাতে রাজ্য পুলিশ সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে ভূয়ো ফেসবুক প্রোফাইল খুলে ভ্রান্তিকর খবর ছড়ানোর ষড়যন্ত্র করছে বলে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ।
প্রমানসহ এনিয়ে তিনি আজ শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন,’শেষমেষ মমতা পুলিশ ‘টুলকিট’ তৈরি করে ‘ফেক নিউজ’ ছড়াতে উদ্যত হয়েছে ! সমাজমাধ্যমে ২৭ তারিখের নবান্ন অভিযানের বার্তা ভাইরাল হতেই হাঁটু কেঁপে গেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের। প্রথমে মহিলাদের স্বতঃস্ফূর্ত রাত দখলের কর্মসূচি অভূতপূর্ব সাড়া ফেলার পর এবং একপ্রকার জনরোষের মাধ্যমে পরিনত হওয়ার ফলে সরকার ও প্রশাসন এমনিতেই প্রচণ্ড চাপে রয়েছে। এবার ছাত্র সমাজের অরাজনৈতিক নবান্ন অভিযানের বার্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রক্তচাপ বাড়িয়ে দিয়েছে।
তাই ওনার স্নায়ুর চাপ হ্রাস করতে পুলিশ মাঠে নেমে পড়েছে। শুধুমাত্র পুলিশি ব্যবস্থা দিয়ে ছাত্র ছাত্রীদের ও নাগরিক সমাজকে রোখা যাবে না বুঝতে পেরে, মমতা পুলিশ একপ্রকার অনৈতিক পথ অবলম্বন করা আরম্ভ করেছে।
প্রত্যেক জেলার থানাগুলোতে ফেক ফেসবুক প্রোফাইল খোলানো হচ্ছে সিভিকদের দিয়ে। এই ফেক ফেসবুক প্রোফাইল গুলি সংগ্রহ করা হচ্ছে যাতে এই গুলোর মাধ্যমে ২৭ আগষ্ট এর নবান্ন ঘেরাও নিয়ে ভুল ভ্রান্তিকর খবর ছড়ানো যায়। এর সাথেই এই ফেক ফেসবুক প্রোফাইল ব্যবহারকারীদের URL লিংক পাঠানো হচ্ছে কিছু আগে থেকেই সৃষ্টি করা ভুল পোস্ট ছড়ানোর জন্য যাতে নবান্ন অভিযান নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো যায় ও ছাত্র ছাত্রীদের মনোবল ভেঙে দেওয়া যায়।সিভিকদের ডকুমেন্ট দিয়ে সিম কার্ড তোলা হয়েছে। ওসি-রা টাকা দিয়েছেন রিচার্জ করার জন্য। তার পরে সব ফেক নাম দিয়ে প্রোফাইল খোলানো হচ্ছে।
প্রতিটা জেলার সব জায়গাতেই DG-র নির্দেশে পুরোদমে এই কাজ চলছে যুদ্ধকালীন তৎপরতায়। পুরো পৃথিবীতে ‘টুলকিট’-এর ব্যবহারে আন্দোলন জোরদার করার নজির রয়েছে, যার মাধ্যমে আন্দোলনে যোগদানে ইচ্ছুকদের বার্তা দেওয়া যায়, কী ভাবে অনলাইন বা অফলাইনে তাঁরা আন্দোলনের অংশ হয়ে উঠতে পারেন।এই প্রথম আন্দোলন রুখতে সরকার ও প্রশাসন ‘টুলকিট’ ব্যবহার করে ভুয়ো খবর ছড়িয়ে স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন ভেস্তে দিতে চাইছে।
আমি ছাত্র ছাত্রীদের ও নাগরিক সমাজ কে অনুরোধ করছি আপনারা কোনো ভুয়ো খবরে বিভ্রান্ত না হয়ে দৃঢ় প্রত্যয়ে এগিয়ে চলুন ডাক্তার বোনটির জন্যে বিচার আদায়ের দাবি জানানোর জন্য। আমি মমতা পুলিসের ষড়যন্ত্র জনসমক্ষে প্রকাশ করতে আপাততঃ পুর্ব মেদিনীপুর জেলায় পুলিশের দ্বারা খোলা ফেক ফেসবুক প্রোফাইলের তালিকা নমুনা হিসেবে সংযুক্ত করলাম। আমার কাছে প্রতিটি জেলার তালিকা রয়েছে।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনি জেনে রাখুন নিচের তলার পুলিশ প্রশাসনের একটা বড় অংশ আর আপনার পাশে নেই, আপনার জন বিরোধী কার্যকলাপে তাঁরাও অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। তাদের বাড়িতেও কন্যা সন্তান রয়েছে, তাঁরাও বিচার চান।’।