এইদিন ওয়েবডেস্ক,মুর্শিদাবাদ,১৪ জুন : মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ এলাকায় মেয়েদের একটি স্কুলের ইসকনে দীক্ষিত এক ছাত্রীকে কপালে তিলক ও গলায় তুলসির মালা পরে আসতে নিষেধ করাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় । শুধু তাইই নয়,নিরামিষাশী ওই ছাত্রীকে স্কুলের মিডডে মিলে মাছ ও ডিম খাওয়ার জন্য জোর করাও হয় বলে অভিযোগ । ঘটনার প্রতিবাদে ইসকনের শিষ্যরা শুক্রবার সকালে স্কুল খুলতেই খোল করতাল বাজিয়ে হরিনাম সংকীর্তন করতে করতে স্কুলের সামনে এসে জড়ো হয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখায় । ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায় । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ । এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠছে ভাস্বতী পন্ডিত নামে ওই স্কুলের এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে । যদিও তার কোনো মতামত পাওয়া যায়নি । শেষে তিলক ও তুলসি মালা পরায় কোনো বাধা নেই বলে প্রধান শিক্ষিকা করবী নন্দী স্বীকারোক্তি দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
রঘুনাথগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী অণু মণ্ডল নামে ওই ছাত্রীকে কপালে তিলক ও গলায় তুলসির মালা পরে আসতে নিষেধ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ । অনুর কথায়,গরমের ছুটির আগে ভাস্বতী দিদিমনি আমাকে স্কুলে তিলক ও গলায় তুলসির মালা পরে আসতে নিষেধ করেছিলেন । গরমের ছুটির পর স্কুল খুললে আমি যথারীতি তিলক ও গলায় তুলসির মালা পরে স্কুলে যাই । তখন ওই দিদিমণি আমায় ফের তিলক ও গলায় তুলসির মালা পরায় অনেক কিছু বলতে শুরু করেন । বাধ্য হয়ে আমি বলি যে স্কুলে তিলক ও তুলসির মালা পরে আসতে পারব না এটা আপনি কাগজে লিখে স্বাক্ষর করে দিন । একথা শুনে দিদিমণি আমায় খুব বকাঝকা করে । ভয়ে কাঁপতে শুরু করি ।’ ওই ছাত্রীর আরও অভিযোগ যে নিরামিষাশী পড়ুয়াদের জন্য স্কুলে পৃথক কোনো ব্যবস্থা নেই । আমাকে স্কুলে সকলের সঙ্গেই মাছ, ডিম খাওয়ার কথা বলা হত । কিন্তু আমি স্কুলের মিডডে মিল খাই না ।
যদিও প্রধান শিক্ষিকা করবী নন্দীর সাফাই,এত কিছু ঘটে গেছে আমি জানতাম না । শুক্রবার সকালে স্কুলে এসে জানতে পারি । তিনি বলেন,স্কুলের এক শিক্ষিকা কপালে তিলক পরা ছাত্রীকে স্কুলে আসতে নিষেধ করেছিলেন । কিন্তু ছাত্রীরা তিলক পরে স্কুলে আসতেই পারে । এতে কোনও বাধা নেই । তুলসী-তিলক পরে না আসা নিয়ে কোনও নিয়ম নেই। নিজের ধর্ম যে কেউ পালন করতে পারে।
বিশ্বহিন্দু পরিষদের দক্ষিণ বঙ্গের মিডিয়া ইনচার্জ একটি খবরের চ্যানেলে প্রকাশিত প্রতিবেদন পোস্ট করে লিখেছেন,’পশ্চিম বেনাগালের স্কুলে হিজাব পরার অনুমতি থাকলেও, হিন্দু পড়ুয়াদের কপালে তিলক পরতে এবং গলায় তুলসী মালা পরতে নিষেধ করা হয়েছে৷ মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর লোকসভার রঘুনাথগঞ্জের একটি বালিকা বিদ্যালয়ে এটি ঘটেছে৷ হিন্দুদের ধন্যবাদ, কারণ তারা প্রতিবাদ করেছিল এবং স্কুল প্রশাসনকে নির্দেশ প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেছিল।’।