জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,বর্ধমান,০৭ জানুয়ারী :
একে কী বলা যাবে – দার্জিলিংয়ে না গিয়েও দূর থেকে দার্জিলিংয়ের আবহওয়া উপভোগ করা! কেউ কেউ আবার মস্করা করছেন – গরীবের দার্জিলিং দর্শন । পরিস্থিতি কার্যত সেই দিকেই যাচ্ছে । সকাল হতে না হতেই হিমালয় থেকে আগত কনকনে উত্তুরে বাতাস পশ্চিমবঙ্গবাসীর শরীরে কাঁপন ধরিয়ে দিচ্ছে । পাল্লা দিয়ে নামছে থার্মোমিটারের পারদ। রাজ্যের প্রতিটি জেলায় পারদের পতন ঘটেছে । ভোর রাতের দিকে দুপুরের থেকে তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি পর্যন্ত কমে যাচ্ছে । আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী এদিন শনিবারে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দমদমের তাপমাত্রা ১১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস । পশ্চিমাঞ্চলে আজও পারদ দশের নীচে । আগামী সপ্তাহে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আরও ১ থেকে ২ ডিগ্রি কমার পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর হাওয়া অফিস ।
স্বাভাবিকভাবেই প্রতিটি মানুষের জুবুথুবু অবস্থা । শীতের পোশাকও আর শরীর গরম রাখতে পারছেনা । সারা রাজ্যের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে যে অনেক নীচে নেমে গেছে। অথচ কয়েকদিন আগেই খামখেয়ালি আচরণ ছিল শীতের। সকালে ঠান্ডা,বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গরম, শরীর থেকে গরমের পোশাক খোলার তৎপরতা। সন্ধ্যা হতে না হতেই লেপমুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়া। চাষীরা তো আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা দেখে খুবই চিন্তিত হয়ে পড়েন ।
কিন্তু যাদের সেই সৌভাগ্য থাকে না অর্থাৎ না থাকে শীতের পর্যাপ্ত পোশাক বা লেপ তাদের অবস্থা সবচেয়ে করুণ হয়ে পড়ে। এদের দেখা যায় স্টেশন বা বাসস্ট্যান্ডের প্রতীক্ষালয়ে, অথবা রাস্তার ধারে খোলা বারান্দায়। কখনো কখনো খোলা আকাশের নীচে। কেউ কেউ আবার আগুন জ্বালিয়ে শরীর গরম রাখার চেষ্টা করে।
এই দৃশ্যই দ্যাখা গেলো পশ্চিম মঙ্গলকোটের গণপুর গ্রামে। প্রচন্ড ঠাণ্ডায় শ্যামল, উত্তম, স্বপনরা তখন খুব কাবু হয়ে পড়েছে। হাতের কাছে শুকনো জ্বালানি বস্তু ও কাঠ পেয়ে তাতেই শরীর গরম রাখার চেষ্টা করছে। এই দৃশ্য শুধু গণপুর নয়,পূর্ব বর্ধমান জেলা সহ গোটা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে এটাই স্বাভাবিক চিত্র হয়ে উঠেছে ।।