এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১০ মার্চ : গতকাল রবিবার(৯ মার্চ) রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার অভিযোগ করেছিলেন যে ‘বসিরহাট দক্ষিণ বিধানসভার অন্তর্গত নিন্দারিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সাকচুড়ো বাজার অঞ্চলে মন্দিরে বলপূর্বক প্রবেশ করে শ্রী শ্রী কালীমাতার বিগ্রহের হাত-পা এবং মাথা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। স্থানীয় হিন্দুদের প্রাণে মারার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে তৃণমূলের জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ শাহানুর মণ্ডলের উন্মত্ত মৌলবাদী বাহিনীর দ্বারা। ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকে তাঁবেদার পুলিশও নিশ্চুপ হয়ে রয়েছে।’ যদিও বসিরহাট জেলা পুলিশের দাবি ‘দায়ি ব্যক্তি’কে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তার ‘মানসিক সমস্যা রয়েছে’৷
বসিরহাট জেলা পুলিশের ফেসবুক পোস্টের স্ক্রীন শর্ট এক্স-এ শেয়ার করেছে বিজেপির যুবনেতা ও কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী তরুনজ্যোতি তিওয়ারি । তাঁর প্রতিক্রিয়া হল, ‘বিশেষ ধর্মের কিছু মানুষের জন্য সবসময় একটাই ন্যারেটিভ তৈরি থাকে । মূর্তি ভাঙার সময় ধরা পড়লে পাগল হয়ে যায়! জঙ্গি হিসেবে ধরা পড়লে স্কুলমাস্টারের মেধাবী ছেলে হয়ে যায়! নারীদের ভিডিও করে ধরা পড়লে মোবাইলের বিষয়ে অজ্ঞ হয়ে যায়!’
পুলিশের ওই পোস্টে লেখা হয়েছে,’আজ বসিরহাটে একটি কালী মন্দিরের একটি মূর্তি নষ্ট হওয়ার ঘটনা সম্পর্কে ভুল তথ্য এবং সাম্প্রদায়িক অশান্তি ছড়ানোর জন্য কিছু মহল থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রতিমা প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে এবং ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ওই ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত ও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পুলিশ সতর্ক ও সজাগ রয়েছে। রাজ্যের যে কোনও জায়গায় যারা প্ররোচনা দিয়ে শান্তি বিঘ্নিত করার প্রচেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সম্ভাব্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা গুজব ছড়ানোর মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রতিক্রিয়ায় তরুনজ্যোতি তিওয়ারি লিখেছেন,’এই নাটকটা নতুন কিছু নয়। বিশেষ ধর্মের কিছু মানুষের জন্য সবসময় একটাই ন্যারেটিভ তৈরি থাকে— মূর্তি ভাঙার সময় ধরা পড়লে পাগল হয়ে যায় ! জঙ্গি হিসেবে ধরা পড়লে স্কুলমাস্টারের মেধাবী ছেলে হয়ে যায়! নারীদের ভিডিও করে ধরা পড়লে মোবাইলের বিষয়ে অজ্ঞ হয়ে যায়! এটাই বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে, আর পুলিশ-প্রশাসন তাদের পাশেই দাঁড়ায়! পশ্চিমবঙ্গ সরকার যেন ৩০ শতাংশ মানুষের সরকার, বাকি ৭০ শতাংশের বিশ্বাস, ভাবাবেগ, সংস্কৃতি কিছুই যেন গুরুত্ব পায় না। প্রতিবারের মতো এবারও মূর্তি ভাঙার ঘটনাকে হালকা করার চেষ্টা চলছে, যাতে অপরাধীর পরিচয় ধামাচাপা দেওয়া যায়।’
তিনি আরও লিখেছেন,’প্রশ্ন হলো, যদি কোনো বিশেষ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্থাপনায় এমন কিছু ঘটত, তবে কি প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া এমনই থাকত? পশ্চিমবঙ্গে দিনের পর দিন সংখ্যাগরিষ্ঠের ভাবাবেগকে আঘাত করা হচ্ছে, আর সরকার চুপচাপ সেটা উপেক্ষা করছে। এভাবে চলতে পারে না! আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং দোষীদের কঠোরতম শাস্তির দাবি জানাই। এই ভণ্ডামি আর চলতে দেওয়া যাবে না!’।