শ্যামসুন্দর ঘোষ,পূর্বস্থলী(পূর্ব বর্ধমান),১৮ সেপ্টেম্বর : দুর্গোৎসবের মুখেই গুজরাটের সুরাটের কাপড়ে ছয়লাপ হয়ে গেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলীর বাজার । সড়ক পথে সরাসরি সুরাট থেকে পূর্বস্থলীতে চলে আসছে কাপড়ের বাণ্ডিল । প্রতি বাণ্ডিলে রয়েছে ১০০ থেকে ২০০ পিস কাপড় । মহিলা শ্রমিকদের দিয়ে সেই কাপড় কেটে ও ভাঁজ করিয়ে আশপাশের সমুদ্রগড়, শান্তিপুর, ফুলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার হাটে পাঠিয়ে দিচ্ছেন পূর্বস্থলীর পাইকারী ব্যবসায়ীরা । খুচরো বাজারে নামেমাত্র মূল্যে বিক্রি হচ্ছে সুরাটের এই সমস্ত কাপড় । সুরাটের কাপড়ের ব্যবসায় একদিকে যেমন ক্রেতারা উপকৃত হচ্ছেন, অন্যদিকে কর্মসংস্থান হচ্ছে বহু মহিলার ।
সারা বছরের মধ্যে মূলত দুর্গোৎসবে সব থেকে বেশি বিক্রিবাটা হয় পোশাকের ব্যবসায়ীদের । সেই কারনে এই উৎসবের দিকে তাকিয়ে প্রস্তুতি নেই কাপড়ের পাইকারি ও খুচরো ব্যবসায়ীরা । কিন্তু করোনা মহামারীর কারনে লকডাউনের জেরে বিগত দু’বছর ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছিল তাদের । বর্তমানে সেই বিপত্তি না থাকলেও এরাজ্যে সেভাবে কর্মসংস্থান না থাকায় মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বহুলাংশে কম । হাতে সেভাবে অর্থ না থাকার নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলি মোটামুটি মান সম্পন্ন পোশাকের দিকে ঝুঁকছেন । এদিকে ক্রেতাদের বর্তমান পরিস্থিতির কথা ভেবে সেইভাবেই পসরা সাজাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা ।
পূর্বস্থলীর এক পাইকারী ব্যবসায়ী অনিমেষ মণ্ডল বলেন,’আমি গুজরাটের সুরাট থেকে বান্ডিল দরে কাপড় নিয়ে আসছি । সেই বান্ডিল থেকে প্রতি পিস কাপড় কেটে আলাদা করাচ্ছি মহিলা শ্রমিকদের দিয়ে । পরে সাবু মাড় করার পর ইস্ত্রি করে কাপড়গুলি ভাঁজ করে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে খোলা বাজারে ।’ তিনি আরও বলেন,’রঙ্গবতী,ঘট,টগর,গোলাপ প্রভৃতি ব্রাণ্ডের বিভিন্ন দামের কাপড় আসে সুরাট থেকে । রঙের গ্যারান্টি ২ থেকে ৫ বছর । দাম ১৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৩০০ টাকা পর্যন্ত ।’ অনিমেষবাবুর কাছে কাজ করা মহিলা শ্রমিক প্রিয়াঙ্কা দাস,রিঙ্কি দেবনাথরা বলেন,’বান্ডিল থেকে একটা কাপড় কেটে পৃথক করার পর ভাঁজ করতে নুন্যতম দেড় থেকে দু’মিনিট সময় লাগছে । এভাবে প্রতিদিন হাজার খানেক কাপড় বাজারে পাঠানোর জন্য আমরা প্রস্তুত করে ফেলছি ।’
কালনা-কাটোয়া রোডে চাঁদপুর, বিদ্যানগর মোড়ে গেলেই দেখা যাবে সুরাটের কাপড়ের রমরমা বাজার । ক্রেতাও প্রচুর । বেচেকেনা বাড়ায় খুশি ব্যবসায়ীরাও ।।