প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,৩০ মে : সব মানুষ যাতে সমস্ত বিপদ আপদ থেকে রক্ষা পান তার জন্যে গ্রামে আয়োজন করা হয়েছিল রক্ষাকালী পুজোর।কিন্তু পুজোর দিনেই গ্রামের দুই যুবকের যৌন লালসার শিকার হল দুই নাবালিকা কন্যা।ভয় দেখিয়ে এক যুবক তিন বার ধর্ষণ করে দশ বছর বয়সী এক নাবালিকাকে। অপর যুবক একই ভাবে ভয় দেখিয়ে ধর্ষন করেছে অপর আর এক চোদ্দ বছর বয়সী নাবালিকাকে। এমনটা জেনে সবার অবাক হওয়াটাই স্বাভাবিক।কিন্তু বাস্তবেই নারী নির্যাতনের এমন ভয়ানক ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের শিয়ালি গ্রামে । তবে অবশ্য কুখ্যাত দুই যুবকের কেউই রেহাই পায় নি । নির্যাতিতা নাবালিকাদের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে কড়া ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ দ্রুত দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে।তাঁদের এখন ঠাঁই হয়েছে জেলে।
জামালপুর থানার জ্যোৎশ্রীরাম গ্রাম পঞ্চায়েত
এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম শিয়ালি।গ্রামের চারপাশ
জুড়ে রয়েছে বিভিন্ন খেত জমি। পুলিশ জানিয়েছে, শিয়ালি গ্রামেই বাড়ি নির্যাতিতা দুই নাবালিকার। গত শনিবার ওই গ্রামে রক্ষাকালীপুজো ছিল ।সেই উপলক্ষ্যে ওই এদিন সকালে কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে গ্রামের দুই নাবালিকা কন্যা গ্রামের কালীমন্দিরে যায়।সেই সময়ে গ্রামের দুই যুবক শৌভিক দাস ওরফে বুবাই ও পিন্টু রায় ওরফে বুলেট সেখানেই ছিল । দশ বছর বয়সী নাবালিকাকে
দেখতে পেয়ে শৌভিক তার কাছে যায় । সে ভয় দেখিয়ে নাবালিকাকে নিয়ে যায় গ্রামের নির্জন জায়গায় থাকা একটি সাঁকোর কাছে।
সেখানে শৌভিক জোরপূর্বক নাবালিকাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ । নাবালিকা চিৎকার করলে যুবক শৌভিক তার গলা টিপে ধরে । এরপর শৌভিক নাবালিকাকে নিয়ে খানিকটা দূরে বাদামবাড়িতে যায় । সেখানেও সে নাবালিকাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। তারপর আরও খানিকটা দূরের ধঞ্চে খেতে নাবালিকাকে নিয়ে গিয়ে ফের শৌভিক ধর্ষণ করে।নির্যাতনের হাত থেকে রেহাই পাবার জন্য নাবালিকা সেখানে উচ্চস্বরে চিৎকার করলে শৌভিক তার গলা টিপে ধরে।তখন দশ বছর বয়সী নাবালিকা সংজ্ঞা হারায়। তা দেখে নাবালিকাকে ওই জায়গাতেই একা ফেলে রেখে অভিযুক্ত শৌভিক পালায় ।জ্ঞান ফিরলে শরীরে কাদা মাখা অবস্থায় বাড়ি ফেরে নাবালিকা। সে তাঁর পরিবারের লোকজনকে শৌভিকের কুকীর্তির কথা সব খুলে বলে।
অপর নির্যাতিতা নাবালিকার পরিবার পুলিশকে জানিয়েছে ,তঁদের মেয়ের বয়স মাত্র চোদ্দ বছর । গত শনিবার রাত ৮ টা নাগাদ নাবালিকা গ্রামের রক্ষাকালী পুজো দেখতে যায়। সেই সময় তাকে দেখতে পায় এলাকার যুবক পিন্টু। সে জোরপূর্ব নাবালিকাকে গ্রামের মাঠে নিয়ে যায়।সেখানে পিন্টু নাবালিকাকে ধর্ষণ করে মাঠেই ফেলে রেখে পালায় বলে অভিযোগ।বাড়ি ফিরে নাবালিকা তাঁর বাবা মাকে পিন্টুর কুকীর্তির কথা খুলে বলে ।
দুই নির্যাতিতা নাবালিকার পরিবারই ঘটনার দিন রাতে অভিযুক্ত যুবকদের বিরুদ্ধে জামালপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন । দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ধর্ষণ ও কপসো অ্যাক্টে মামলা রুজু করে রবিবারের মধ্যেই অভিযুক্ত দুই যুবককে গ্রেপ্তার করে । সোমবার ধৃতদের পেশ করা হয় বর্ধমানের পকসো আদালতে। পকসো আদালতের বিচারক দুই অভিযুক্তকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন । অভিযুক্ত যুবকদের কঠোর সাজার দাবী করেছে নাবালিকার পরিবার ও শিয়ালি গ্রামের বাসিন্দারা ।।