প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,৩০ ডিসেম্বর : তারস্বরে বক্সে বাজছে গান। আর সেই গানের তালে শুক্রবার বেলায় উদ্দাম নাচ নাচছেন সরকারী হাসাপাতালের নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীরা।সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে প্রায় দু’ঘন্টা ধরে পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্দাম নাচানাচি করলেন হাসপাতালের সভাগৃহে। সেই সংক্রান্ত শ ভিডিও ভাইরাল হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে।ঘটনার সমালোচনা যেমন অনেকে করছেন তেমনই নিন্দায় সরব হয়েছেন মন্তেশ্বরের অনেক বাসিন্দা। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা করার মত কিছু দেখছেন না ।
জেলার গ্রামীণ হাসপাাল গুলির মধ্যে মন্তেশ্বর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র।চিকিৎসা পরিষেবা পাবার জন্য প্রতিদিন বহু মানুষ এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসেন।
এতদিন হাসপাতালে সবকিছু স্বাভাবিক নিয়মেই চলে আসছিল । কিন্তু শুক্রবার তাতে ছেদ পড়ে।
এদিন হাসপাতালে রোগীদের আসা যাওয়ার মধ্যেই কর্তব্যরত চিকিৎসক,নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা আশাকর্মী এবং ব্লক প্রোগ্রাম কো অর্ডিনেটরদের হাসপাতালের সভাগৃহে হওয়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন।এমনকি সেই অনুষ্ঠানে মাইকে তারস্বরে বাজা গানের তালে কোমর দুলিয়ে নাচানচিতেও মাতোয়ারা হন। ওই অনুষ্ঠানে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের উপস্থিতি থাকার বিষয়টিও ভাইরাল ভিডিওয় ধরা পড়েছে। এইসব মোটেই ভালভাবে নেন না হাসপাতাল আস রোগী ও তাঁদের পরিজনরা।রোগীদের সুবিধা অসুবিধার বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিয়ে হাসপালে এমন অণু্ঠানের আয়োজন জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের
অনুমতি নিয়ে হয়েছিল কি না তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। চিকিৎসক,নার্স ও স্ফাস্থ্য কর্মীদের
এমন দায়িত্বজ্ঞান হীনতার সমালোচনাও করেছন
মন্তেশ্বরের অনেক বাসিন্দা । এইসব অভিযোগের বিষয়ে হাসপাতালের বিএমওএইচ এর কোন প্রতিক্রিয়া যাওয়া যায়নি।
দেখুন ভিডিও :-
বিএমওএইচ কে ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।তবে হাসপাতালের চিকিৎসক শেখ সাদ্দাম হোসেন জানান, হাসপাতালের সভাগৃহে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্যে অনৈতিক কিছু দেখছেন না । তিনি বলেন,সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হাসপাতালে থাকতেই পারেএদিন চিকিৎসাতো চিকিৎসার জায়গাতেই হয়েছে।আর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠানের জায়গায় হয়েছে।এরজন্য ইনডোর বা আউটডোর কোন ক্ষেত্রেই চিকিৎসা পরিষেবায় ব্যাঘাত ঘটেনি বলে চিকিৎসক শেখ সাদ্দাম হোসেন দাফি করেছেন ।
আর হাসপাতালের এক নার্স তনুকা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই এদিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গানের তালে নাচার কথা স্বীকার করে নেন। তবে তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন,নাচানাচির ভিডিও যে ভাইরাল হয়ে যাবে সেটা তাঁরা ভাবতে পারেন নি। প্রত্যেক বারই আমরা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করি।দু-ঘন্টার অনুষ্ঠান হয়।এদিন বক্স তো সেরকম ভাবে বাজে নি। তাই রোগীদেরও কোন অসুবিধা হয়নি।অনুষ্ঠান করার জন্য কি জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের অনুমতি ছিল ?এই প্রশ্নের উত্তরে নার্স তনুকা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,আশা কর্মীদের অনুষ্ঠানের জন্য অনুমতি নেওয়া হয়না ।
জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় তাঁর বক্তব্যে জানিয়েছেন,’ঘটনা বিষয়ে আমি খোঁজ নেব ।
অপরদিকে জেলাপরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ বাগবুল ইসলাম জানিয়েছেন,“আশা কর্মীরা ওই ব্লকের বিএমওএইচ এর আন্ডারে কাজ করেন।
অনুষ্ঠানের জন্য বিএমওএইচ অনুমতি দিয়ে থাকলে সেটা তার ব্যাপার । তবে ডিউটি আওয়ারে
অনুষ্ঠান করাটা কোনভাবেই বাঞ্ছনীয় নয় বলে
স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ জানিয়েছেন ।।