এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,০১ ডিসেম্বর : বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অবর্ণনীয় অত্যাচারে ভারত সরকারের কড়া প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আইন বিষয়ক উপদেষ্টা বিএনপি জিহাদি আসিফ নজরুল অভিযোগ করেছে ভারত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষার ক্ষেত্রে দ্বিচারিতা করছে । সে ফেসবুকে পোস্টে বলেছে, ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নিষ্ঠুরতার অনেক ঘটনা রয়েছে। কিন্তু ওই ঘটনা নিয়ে তার কোনো অনুশোচনা নেই । ভারতের এই ডাবল স্ট্যান্ডার্ড নিন্দনীয় ও আপত্তিকর। সে ভারতীয় গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগও করেছে । কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের ওই জিহাদি সঙ্গী যতই বাংলাদেশের হিন্দুদের নিপিড়নকে আড়াল করার চেষ্টা করুক না কেন, সেখানকার প্রকৃত চিত্র খুবই ভয়ঙ্কর । একদিকে যখন কুখ্যাত ও ভয়ঙ্কর ইসলামি সন্ত্রাসবাদীদের জেল থেকে মুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে । অন্যদিকে তখন ব্যাপক হারে হিন্দুদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে জেলে ভরা হচ্ছে । চিন্ময় প্রভুকে আইনি সহায়তা দেওয়া ৫১ জন হিন্দু আইনজীবীর বিরুদ্ধে খুনের মামলা রজু করেছে মহম্মদ ইউনুস সরকার । তাদের মধ্যে ইতিমধ্যে ৭ জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে । আর এর উদ্দেশ্য হল, যাতে চিন্ময় প্রভুকে আদালতে তোলা হলে তার পক্ষে সওয়াল করার জন্য কোনো আইনজীবী অবশিষ্ট না থাকে ।
ইসলামি সন্ত্রাসবাদীদের জেল থেকে মুক্ত করার বিষয়ে ব্লিটিজের সম্পাদক সালহা উদ্দিন সোয়েব চৌধুরী বলেছেন, ‘একটু ভাবুন! ইসলামপন্থী, জিহাদি, হিন্দু-বিদ্বেষী এবং ভারত-বিদ্বেষীরা প্রকাশ্যে হিন্দুদের হত্যার দাবি জানালেও,১৯ জুলাই বাংলাদেশের নরসিংদী কারাগার থেকে ৯ জঙ্গিসহ মোট ৮২৬ জন বন্দী পালিয়ে যায় । এতে জেএমবি ও আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সন্ত্রাসী সংগঠন রয়েছে। তারা অস্ত্রাগার থেকে ৮৫ টি অস্ত্র এবং ৮,১৫০ টি গোলাবারুদ লুট করে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৮৮ জন বন্দীসহ কমপক্ষে ২,২৪১ জন বন্দী কারাগার থেকে পালিয়ে গেছে (কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগার সহ), যদিও তাদের অনেক সংখ্যককে এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।’
অন্যদিকে হিন্দু আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মামলা রজু করার বিষয়ে উজ্জল মল্লিক নামে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন,’যেটা বলেছিলাম সেটাই হলো চট্টগ্রাম কোর্টের চিন্ময় প্রভুর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার বিরুদ্ধে চিন্ময় প্রভুর পক্ষে দাড়ানো সকল আইনজীবীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা। সরকার কয়দিন আগে বলেছিল সরাসরি হত্যায় অংশ নেওয়া সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে । তবে আজ হিন্দু ধর্মাবলম্বী আইনজীবীদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। যাতে চিন্ময় প্রভুর জামিন শুনানীতে কোন হিন্দু আইন জীবী অংশ নিতে না পারে।২ দিন সময় নেবার কারন সকল সনাতনী আইনজীবীদের তথ্য নেওয়া হয়েছে আদালত পাড়ায়। আমরা আশঙ্কা করেছিলাম সরকারের ভেতরে যারা সরকার চালাচ্ছে তাদের ইন্ধনে ঢালাওভাবে হিন্দুদের মামলা আসামী করে অজ্ঞাত নাম দিয়ে হয়রানী করবে । বাংলাদেশ পুরোপুরি এদেশের হিন্দু জনগোষ্টীকে শত্রু ঘোষনা করেছে যা প্রকাশ্য। বাংলাদেশে হিন্দুদের পাশে দাড়ানোর মতন কোন বুদ্ধিজীবী সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব মানবাধিকার কর্মী এমনকি কোন রাজনৈতিক দল নেই আর প্রশাসনতো থেকেও নেই। হিন্দুরা অসহায় হয়ে পড়েছে। আমাদের জন্য খুব ভয়ংকর ভবিষৎ অপেক্ষা করছে। হিন্দুদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদকারীদের রাষ্ট্রদ্রোহ প্রশাসনের উপর হামলার বিভিন্ন মামলা দেওয়া হচ্ছে।’
এদিকে ইসকনের মত একটা আন্তর্জাতিক ধর্মীয় সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে ব্যাপক উৎপাত শুরু করেছে ইসলামি কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি । বাংলাদেশে বিক্ষোভ খিলাফতপন্থী হেফাজতে ইসলাম (HeI), যারা ইসকন সদস্যদের হত্যার আহ্বান জানিয়েছে,শুক্রবার জুমার নামাজের পর ঢাকার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ থেকে ইসকনকে সন্ত্রাসী সত্তা হিসাবে চিহ্নিত করে তার উপর নিষেধাজ্ঞার দাবিতে ঢাকায় একটি বিশাল মিছিল বের করে । একই দাবি তুলেছে হিযবুত, জামাত ইসলামি, বিএনপির মত ইসলামি জঙ্গি সংগঠনগুলিও । বর্তমানে বাংলাদেশের ইসলামি সন্ত্রাসবাদীদের সামনে সেদেশের হিন্দুরা কার্যত অসহায় হয়ে পড়েছে । রাষ্ট্র পরিচালিত সন্ত্রাসের মুখোমুখি হয়েছে তারা ।।