এইদিন ওয়েবডেস্ক,টাঙ্গাইল,১৯ এপ্রিল : নিজের ৪ মাসের শিশু সন্তানকে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে সেই টাকায় মোবাইল, পায়ের নূপুর ও নাকের নথ কিনেছেন মা । ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার পুড়ুর শেওড়াতলা এলাকায় । গুনধর মায়ের নাম লাবনী আক্তার লিজা। ওই এলাকার রবিউল ইসলামের স্ত্রী লাবনী আক্তার লিজা সম্প্রতি এক দালালের মাধ্যমে তার কোলের চার মাসের শিশু সন্তান তামিমকে বিক্রি করে দেন সিরাজগঞ্জের এক দম্পতির কাছে। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় স্বামী রবিউল ইসলাম থানায় ঘটনাটি জানালে শিশুটিকে উদ্ধারে মাঠে নামে পুলিশ। ওই নারীকে সঙ্গে নিয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) শিশুটিকে উদ্ধার করেছে।
জানা গেছে, মধুপুর শেওড়াতলা এলাকার আজম আলীর ছেলে রবিউল ইসলামের সঙ্গে গোপালপুরের বলাটা গ্রামের লিটন মিয়ার মেয়ে লাবনী আক্তার লিজার দুই বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই রবিউলের অসচ্ছলতার কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়। অবস্থা বেগতিক দেখে রবিউল সংসারে শান্তির প্রয়োজনে বাড়ির পাশেই ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। চার মাস আগে তাদের সংসারে একটি পুত্রসন্তানের জন্ম হয়।
রবিউল ইসলাম বলেন, ‘ছেলে তামিমের জন্মের পর থেকে সংসারে অশান্তি নেমে আসে। অল্প কয়েক দিন আগে লাবনী আমার ছেলে তামিমকে নিয়ে তার বোনের বাড়ি ভূঞাপুরে যায়। কয়েক দিন পর বাড়ি আসতে বললে লাবনী দুর্ব্যবহার করে। আমার সঙ্গে ঘর-সংসার করবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। আমি কয়েক দিন পর আবার ফোন করে বলি তামিমের দাদা অসুস্থ। ছেলেকে নিয়ে এসো। সে তামিমকে দেখতে চাইছে । লাবনী তাতেও ফিরে আসেনি। বারবার যোগাযোগের পর শুক্রবার লাবনী জানায় সে সন্তান বিক্রি করে দিয়েছে। পরে কৌশলে লাবনীকে ভূঞাপুর থেকে পাকুটিয়ায় ডেকে এনে ধরে বাড়ি নিয়ে আসি। এ সময় সে শিশু তামিমকে বিক্রি করার কথা স্বীকার করে। পরে পুলিশকে জানানো হয়। অভিযান চালিয়ে পুলিশ আমার সন্তানকে উদ্ধার করে।’
অভিযুক্ত লাবনী আক্তার লিজা বলেন, ‘আমার মাথা ঠিক ছিল না। মনির নামে একজনের সহযোগিতায় গত ১০ এপ্রিল সিরাজগঞ্জের এক লোকের কাছে ৪০ হাজার টাকায় তামিমকে বিক্রি করেছি। ওই টাকা দিয়া মোবাইল, পায়ের নূপুর ও নাকের নথ কিনেছি।’ মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ এমরানুল কবীর জানান, লাবনী নামে এক নারী তার ছেলেকে বিক্রি করেছিল। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে।।
