প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৩ মার্চ : দোর গোড়ায় পঞ্চায়েত ভোট । তার প্রাক্কালের চরমে পৌছেচে রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে পূর্ব বর্ধমানের মেমারি ২ ব্লকের প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতির মহম্মদ ইসমাইলের সংঘাত। সংঘাতের জেরে মন্রী ও নেতার অনুগামীদের মধ্যে মারপিটের ঘটনা যেমন ঘটছে তমনি জারি বয়েছে একে অপরের প্রতি বিষদাগার প্রকাশ করা ভাষণ। তা থেকে পুলিশও রেহাই পাচ্ছে না। আর পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূলের গোষ্ঠী কাজিয়া একেবারে চরমে পৌঁছে গেছে দেখে উৎফুল্ল বিরোধী শিবির । মন্তেশ্বর বিধানসভার বিধায়ক মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে মহম্মদ ইসমাইলের সংঘাত শুরু হয় মাস ৩-৪ আগে। দল মহঃ ইসমাইল কে ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে মন্ত্রীর অনুগতকে সভাপতি করার পর থেকে দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে। দিন তিনেক আগে রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী নিজের বক্তব্যে বিষোদগার করেন মহম্মদ ইসমাইলকে।সেই বক্তৃতা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই ময়দানে নামের মেমারি ২ নম্বরের প্রাক্তন ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল। তাঁর নেতৃত্ব সাতগেছিয়া বাজারে মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মিছিল হয় । ওইদিন মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীকে কার্যত তুলোধনা করেন মহম্মদ ইসমাইল। এর পাল্টা মন্ত্রী সদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর নেতৃত্বে মেমারি ২ নম্বর ব্লকের বিলবাড়ি ও ঝিকরা গ্রামে সভা হয়।সেই সভায় যোগ দেওয়া লোকজনের বিরুদ্ধে মহম্মদ ইসমাইলের অনুগামীদের উপর হামলা চালানো ও মারধোরের অভিযোগ ওঠে।পাল্টা মারধোরেও অভিযোগ
উঠেছে ইসমইল গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। মারধরের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে।সোমবার তাদের বর্ধমান আদালতে পাঠানো হয়।দ্বন্দ্বে লাগাম পরাতে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় মঙ্গলবার বৈঠক ডেকেছেন।
বৈঠকের আগেই ফের বিস্ফোরক মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী। এবার তিনি পুলিশকে এক হাত নিয়েছেন। মন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেন, যারা মন্ত্রী সভার ক্যাবিনেট মন্ত্রীকে গালমন্দ করে অপদস্ত করছে তারা অপরাধ করছে।পুলিশ যেন তাদের গ্রেফতার করে,আমি বলে রাখছি।তবে পুলিশ কি করবে সেটা তাডের ব্যাপার।পুলিশকে বুঝতে হবে কারা অফিসিয়াল দল।আশ আর বাঁশ পাতাকে এক করলে হবে না।মাছের আশ ফলে দেওয়া হয়।আর বাঁশ পাতা তার একটা দায়িত্ব আছে।পুলিশ কি নাবালক নাকি? পুলিশকে সাবালক হতে হবে।এসব ভণ্ডামি আমি শুনবো না।কোন এক্সেন না হলে সাধারণ মানুষ সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর নেতৃত্বে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করবে।আমি বুঝে নেবো।আমার চিন্তা পুলিশকে করতে হবে না।আমি পুলিশকে সম্মান করি, ঘুষ দিই না। পয়সা দিই না। সম্মান করি।পুলিশ সব ঠিক করবে।ইয়ার্কি হচ্ছে। যদি পুলিশ ঠিক করতে চায়,তাহলে দিদির পোষাক পড়ুন, ঝাণ্ডা ধরুন।মেমারি ২ নম্বর ব্লকের প্রাক্তন সভাপতি মহম্মদ ইসমাইলের নাম না করে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বলেন, বাবু দাপাদাপি করে বেড়াচ্ছে। পুলিশ দক্ষ প্রশাসনের ভূমিকা পালন করুক। আমি পুলিশের সঙ্গে বসি।কিন্তু ফিসফিস করি না।পুলিশকে তেল লাগাতে যাই না।যাদের পয়সা আছে তারা দেবে।পুলিশকে তেল দেবে।আমি নির্বাচিত জন প্রতিনিধি। আমি পুলিশকে তেল লাগাতে যাবো না। প্রয়োজনে চিপ সেক্রেটারি, হোম সেক্রেটারি বা ডিজিকে বলবো। তবুও আমি এসপিকে তেল লাগাতে যাবো না।এসপি আমার গুরুদেব নয়।হুমকির সুরে সিদ্দিকুল্লাহ বলেন,আজ লাস্ট ওয়ার্নিং দিয়ে গেলাম পুলিশকে।পুলিশ কাজ না করলে মেমারি থানার বড়বাবুকে ঘোরাও করে রাখবো।থানা থেকে বের হতে দেবো না।
মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর বক্তব্য শুনুন 👇
জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলের এই তর্জা প্রসঙ্গে বলেন, সবেতো শুরু হয়েছে।গোটা রাজ্যেই এখন তৃণমূলের এমন গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে ওঠেছে । ওদের এই লড়াই মূলত পঞ্চায়েত কার দখলে থাকবে , কারা পঞ্চায়েতকে সামনে রেখে করে খাবে তার লড়াই । লড়াইয়ে যুক্তরা পুলিশকেও রেয়াত করছে না । ওদের এইসব কীর্তির জবাব বাংলার মানুষ পঞ্চায়েত ভোটে দিয়ে দেবার জন্য মুখিয়ে রয়েছে ।।