শ্যামসুন্দর ঘোষ,মন্তেশ্বর(পূর্ব বর্ধমান),১২ জুলাই : কালো পতাকা দেখানো ও হামলার ঘটনার পর মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি আহমেদ হোসেন সেখের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী । নিজের দলেরই ওই প্রভাবশালী নেতাকে দুর্নীতিগ্রস্ত ও তোলাবাজ বললেন মন্ত্রী । আজ শনিবার পূর্ব বর্ধমান জেলার সাতগেছিয়া বিধায়ক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে আহমেদ সেখকে নিয়ে প্রশ্ন করতেই কার্যত তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন সিদ্দিকুল্লা । তিনি বলেন,’সে দলকে সামনে রেখে আখের গোছাচ্ছে । গুন্ডামি করছে । ত্রাস করছে । দুই ভাইয়ের মধ্যে ঝগড়া হলে টাকা চাইছে৷ জমি বিক্রি করবে তার টাকা চাইছে৷ বিল্ডিং করবে তার টাকা চাইছে।’ তিনি আরও বলেছেন,’তার সাগরেদরা রোজ জেলে ঢুকছে৷ যান কালনা কোর্টে৷ থানায় যান।’
প্রসঙ্গত,চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী নিজের নির্বাচনী ক্ষেত্র মন্তেশ্বরে গেলে দলীয় কর্মীদের ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পড়েন । মন্ত্রীকে ঝাঁটা ,জুতো ও কালো পতাকা দেখানোর পাশাপাশি বহু বিক্ষুব্ধ মানুষজন মন্ত্রী মশাইয়ের গাড়িতে ভাঙচুর চালায় । ঘটনার পর মন্ত্রী সিন্দিকুল্লা চৌধুরী অভিযোগ করেন পুলিশের সামনেই তাঁর উপর হামলা হয়েছে। তাঁকে ’খুনের’ ছক কষা হয়েছিল । গোটা ঘটনার দায় মন্তেশ্বরের দোর্দন্ড প্রতাপ তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আহম্মদ হোশেন শেখের উপরেই চাপিয়ে ছিলেন সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী । এমনকি তিনি দল ছাড়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন । তারপরেই তৃণমূল সুপ্রিমোর নির্দেশে আহম্মদ হোশেন শেখের বেশ কয়েকজন অনুগামীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ । তবে পুলিশ অ্যাকশনে নেমে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করলেও ওই বাহুবলী তৃণমূলী নেতা বহাল তবিয়তেই রয়ে আছেন। আজ মন্ত্রী ওই দলীয় নেতার উদ্দেশ্যে বলেন,’তিনি হলেন টি পার্সেন্ট রিং মাস্টার । রাজনীতির র জানেনা না । তিনি প্যারালালি একটি সেমি গভর্মেমন্ট তৈরি করতে চাইছেন । মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও অভিষেক ব্যানার্জি ছবি ব্যবহার করে একটা স্বরাজ তৈরি করতে চাইছে তার গুন্ডাবাহিনী । মুখ্যমন্ত্রীকে আমি চার পাতার অভিযোগ জমা করেছি ।’
এদিকে ওই ঘটনার পর আজ শনিবার সাতগেছিয়ায় মন্তেশ্বর ও মেমারি-২ দলীয় কার্যালয়ে একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি বৈঠক করেন সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী৷ তবে অনুপস্থিত ছিলেন বেশ কয়েকজন তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল প্রধান । যা নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ফের প্রকাশ্যে এল বলে মনে করা হচ্ছে । যদিও সিদ্দিকুল্লার সাফাই হল, ‘শারীরিক অসুবিধা জন্য তারা অনুপস্থিত রয়েছে ।’ কিন্তু মন্ত্রীর বৈঠকের দিনেই একসঙ্গে বেশ কয়েকজন অঞ্চল প্রধানের অসুস্থ হয়ে পড়ায় সিঁদূরে মেঘ দেখছেন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্ব ।।

